অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রাপ্ত অপ্রাপ্ত নিয়ে শেষ হলো ২০২৩ কাল।শুরু হলো ২০২৪ ইংরেজি বছরের পথ চলা। নতুন একটি বছর মানেই জীবনের প্রতি, সমাজের প্রতি, সহনাগরিকদের প্রতি নতুন অঙ্গীকারের শপথ। অন্তত নিজ বিবেকের কাছে।হয়তো সবই সময়ের দাবি মেনে,তবু আমাদের একমুখী আত্মকেন্দ্রিকতার বাইরে বেরিয়ে সমষ্টি স্তরে,আরও একটু বৃহত্তর পরিসরে ভাবনা পাখা মেলতে অসুবিধা কোথায়!ফেলে আসা বছরে কারও অতিমাত্রায় ব্যক্তিচর্চা, চড়া মাত্রায় আত্মবিপণন যদি কাউকে পীড়িত করে থাকে, পুরনো অপরাধের মতো তাকে ক্ষমা করে দিয়ে নতুন শুরুর প্রার্থনা জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। লিখেছিলেন, ‘বন্ধু হও,শত্রু হও,যেখানে যে কেহ রও, ক্ষমা করো আজিকার মতো, পুরাতন বরষের সাথে পুরাতন অপরাধ যত।’ব্যক্তিকেন্দ্রিকতাকে আজকের প্রজন্ম যে নামে বেশি চেনে সেটি হলো ‘নার্সিজিম’।এই শব্দ সৃষ্টির পেছনে গ্রিক উপকথার ছোট্ট একটি কাহিনি আছে।গ্রিক দেবপুত্র নার্সিসাস ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে অতীব সুন্দর মানুষ।একেবারে নিখুঁত সুন্দর!সে জন্মানোর সময় দৈববাণী হয়েছিল, এই শিশু যেন কখনও মুকুরে তার প্রতিচ্ছবি দেখতে না পায়!তাই বাড়ি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সমস্ত প্রতিফলক। নার্সিসাস ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। সঙ্গে খুলতে থাকে তার অপার সৌন্দর্যের রহস্য। নার্সিসাস নিজেও নিজের সৌন্দর্য নিয়ে সচেতন হয়ে উঠে।চারপাশের মুগ্ধ দৃষ্টিতে খুঁজে পায় নিজেকে।তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে একদিন তাকে প্রেম নিবেদন করে দেবকন্যা ইকো।কিন্তু, নার্সিসাস ততদিনে নিজের প্রেমে মগ্ন।ইকোর প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে বলেন,আমার এই সুন্দর শরীর তুমি ভোগ করার আগে আমার মৃত্যু হওয়াও ভালো। নার্সিসাসের প্রত্যাখ্যানে ক্ষিপ্ত ইকো সর্বত্র নার্সিসাসকে প্রতিচ্ছবি দেখানোর চেষ্টা করতে থাকেন।শেষে একদিন সরোবরের স্বচ্ছ জলে নার্সিসাস নিজের ছবি দেখতে পায়।ইকোর মায়ায় নিজের রূপে পাগল হয়ে উঠে সে। কথা বলতে থাকে নিজের সঙ্গেই।ভালোবাসতে চায় নিজেকে।নিজের সঙ্গেই সহবাস করতে চায়।নিজের প্রতিচ্ছবির সঙ্গে কথা বলতে বলতে একদিন ওই সরোবরের জলেই ডুবে মৃত্যু হয় নার্সিসাসের।নার্সিজিম শুধু ব্যক্তিতন্ত্রে কিংবা ক্ষমতার আঙিনায় নয়,ক্রমে আমাদের সমাজ ও চারিপাশেও তার পাকা বসতি স্থাপিত হয়েছে।গত এক দশক ধরেই মহামারির আকারে সে বেড়েছে।এতটাই সংক্রামক যে, সমাজবিজ্ঞানীরা একে নার্সিটিক প্যানড্যামিক’ বলছেন।নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত সবাই।নিজের প্রেমেই মত্ত! সমাজমাধ্যম থেকে চতুস্পার্শ সর্বত্র চলছে ‘লুক অ্যাট মি’ প্রতিযোগিতা। আমি কত সুন্দর, আমি কত বুদ্ধিমান, কত দরদি।দিনরাত চলছে নিজস্বী প্রতিযোগিতা।নিজের মোহে এই ব্যস্ত থাকার প্রবণতাকে মনোবিদরা বলছেন, ‘নার্সিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার’, সংক্ষেপে এনপিডি।পাল্টা যুক্তি হতে পারে, নার্সিজিম সমাজে ছড়ালে কীসের ক্ষতি? উদারবাদী ধনবাদও তো ব্যক্তিস্বাধীনতার পক্ষে! মার্কিন মুলুকেও চলছে ‘সেলফ লাভ মুভমেন্ট’।সেটি আমাদের সমাজ ও ক্ষমতার অলিন্দে চললে ক্ষতি কী ?
গত কয়েক বছরে রাজনীতির জগতে যে সব ব্যক্তিত্বের উত্থান ঘটেছে, ঘটনাচক্রে তারা সকলে নার্সিস্টিক ব্যক্তিত্বের।ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে আমাদের রাজ্যের কোনও পারিষদ, প্রত্যেকে নিজের মুখ ও ক্ষমতা উপস্থাপনে উদ্গ্রীব।যেন তারা অদৃশ্যে বলে চলেছেন, গোটা তল্লাট আমি চালাই, সুতরাং যা বলব, সবাইকে মানতে হবে! এই প্রবণতাকে মনোবিদরা বলছেন, ‘আইক্রেসি’। নির্বাচনের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে, ‘নার্সিটিক’-দের নীতি নয়, বরং ব্যক্তিত্ব প্রভাব ফেলছে। জনগণ তাদের মধ্যে নিজেদের খুঁজে পাচ্ছেন। বিপুল জনসমর্থন লাভ করেছেন তারা।ব্যক্তিগত নার্সিজিম প্রথমে সামাজিক ও পরে রাজনৈতিক নার্সিজিমে পরিণত হচ্ছে। রাজনৈতিক নার্সিজিমই ধীরে স্ত্রীরে ফ্যাসিজিমে পরিণত হয়, মানুষের বুঝে উঠার আগেই।
অথচ আমাদের ভারতীয় সমাজের বরাবর প্রার্থনা ছিল, ‘অন্তর মম বিকশিত কর, অন্তরতর হে’।আমাদের অন্তরের বিকাশই আত্মদর্শন। বৌদ্ধ ধর্ম সহ একাধিক ধর্মে আয়না দেখা নিষিদ্ধ।কারণ, আয়নার নার এক নাম দর্পণ। যা আমাদের ‘দর্পিত নারায়ণ’-কে প্রতিফলিত করে। দর্পপূর্ণ এই ‘আমি’র প্রতি নতুন বছরে আমরা যেন আর একটু বশি সতর্ক থাকি, এই হোক অঙ্গীকার।বাইরের বিজ্ঞাপনের রামধনু এড়িয়ে মগ্নচৈতন্যের বিকাশই হোক আমাদের নববর্ষের অঙ্গীকার।
অনলাইন প্রতিনিধি :-নতুন সিবিআই কর্তা নিয়োগ করতে হবে আর সেই উদ্দ্যেশ্যেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে ইন্ডিয়ান আইডল জয়ী সিজন ১২ এর পবনদীপ রাজন ৷ উত্তর…
অনলাইন প্রতিনিধি :-আগামী ১৮ মে দু'দিনের জন্য কেরল সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ সেই…
অনলাইন প্রতিনিধি :-উজ্জ্বয়ন মহাকালেশ্বর মন্দিরে বিভীষিকাময় আগুন। মন্দিরের উপর থেকে গলগল করে নির্গত হচ্ছে কালো…
অনলাইন প্রতিনিধি :-জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ওরফে চিন্ময় প্রভুকে নতুন করে আবার হত্যা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ৬৩ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন অড্রে ব্যাকেবার্গ নামে…