Categories: দেশ

অটিজম শিশুদেরমূল স্রোতে ফেরানোরলড়াইয়ে অনিন্দিতা

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও আক্ষেপের বিষয় হল দেশে সুস্থ সবল শিশুদের একটা বড় অংশ শিক্ষা-সুরক্ষার বলয় থেকে বঞ্চিত।
সমাজবিদদের একাংশ মনে করেন, যাদের এই সুরক্ষা-বলয় আরও বেশি দরকার সেই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে ভাবনা
এখনও প্রান্তিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে তার মধ্যেও কিছু মানুষ আছেন যারা স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কিছু অসম্ভবকে সম্ভব করে
তোলার ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। তেমনই একজন ডাক্তার অনিন্দিতা চ্যাটার্জি (ছবি)। তিনি পেশায় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আঙিনায় অবাধ যাতায়াত। তা নিয়েই হয়তো তিনি সন্তুষ্ট থাকতে পারতেন। কিন্তু চেম্বারের গণ্ডি ভেঙে অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের শিকার শিশুদের ‘পূর্ণাঙ্গ মানুষ’ গড়ার কারিগর হিসেবে তিনি এক ব্যতিক্রমী নজির সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য তৈরি ‘রূপকথা ফাউন্ডেশন’-এর অন্যতম স্রষ্টা তিনি। ডাক্তার
চ্যাটার্জির কথায়, ‘এই প্রতিষ্ঠান শিশুদের জন্য এক রূপকথার জগৎ তৈরি করে দেয় যা তাদের মূল ধারায় চলার উপযোগী করে তোলে।’ রূপকথা ফাউন্ডেশন তত্ত্বাবধানে চলছেস্টার মিশন অ্যাকাডেমি। আদতে এটি একটি স্কুল । ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে দুই বছর বয়স থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এনসিআরটি-র নির্দেশিকা অনুযায়ী এখানে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাচ্চাদের পঠনপাঠন চলে। সেকেন্ডারি এবং সিনিয়র সেকেন্ডারি স্তরে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুল (এনআইওএস)’-র পাঠ্যসূচি অনুসরণ করা হয় এখানে। এক দল দক্ষ ও দায়বদ্ধ শিক্ষক পডুয়াদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষ যত্ন নেন। ঘটনাচক্রে যা স্টার মিশনের সাফল্য, সেটাই আবার তাদের সমস্যার মূল।
এখানকার শিক্ষকদের অকৃপণ প্রচেষ্টায় বহু পডুয়াই অচিরে তাদের প্রতিবন্ধতাকে জয় করে মূল স্রোতের সঙ্গে চলার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। তখন অনেক অভিভাবকই তাদের ছেলে-মেয়েদের এই রাজ্যের মধ্য স্টার মিশন ছেড়ে সরকার পোষিত স্কুলে নিয়ে চলে যান। কারণ ওপেন স্কুলে র তকমা বহন করতে অভিভাবকরা রাজি থাকেন না। ফলে দুটি সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যারা মানসিক
প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ছাত্রটির ভিত গড়ে দিল, সেই মিশনে পড়ুয়া ড় দের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং অনেক ছাত্র নতুন স্কুলের আবহে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পেরে আবার পিছিয়েও পড়ছে। ফলে আবার সমস্যায় পড়ছেন অভিভাবকরা। ডাক্তার চ্যাটার্জিবলেন, ‘এই সমস্যার সমাধানের জন্য রাজ্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন।’ অধিকাংশ অভিভাবক চাইছেন, ইনষ্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলের বদলে রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদন। তা হলে পশ্চিমবঙ্গে ক্রমশ বেড়ে চলা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার নিয়ে জন্মানো শিশুদের জন্য স্টার মিশন অ্যাকাডেমি আরও নির্ভরযোগ্য গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে। অনিন্দিতা দেবী নিজের ঐকান্তিক প্রয়াসের পাশাপাশি তার স্বপ্নের প্রকল্প নিয়ে সরকারের বোধোদয়ের
অপেক্ষায় রয়েছেন।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

জি-৭ সম্মেলনে যোগদান করতে মোদীকে আমন্ত্রণ দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ভারত ও কানাডার মধ্যে টানাপড়েনের সম্পর্কে কানাডা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে জি ৭ সম্মেলনে…

3 hours ago

শুক্রবার বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু চেনাব চন্দ্রভাগা ব্রিজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে রেলসেতু ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।…

10 hours ago

হরিয়ানায় শপিংমলে গুলি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-হরিয়ানার পঞ্চকুলার একটি মলের সামনে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী কয়েকজন দুষ্কৃতি পরপর কয়েক রাউন্ড চালায়…

11 hours ago

দঃজেলার ৫০%র বেশি গ্রাহকই বিদ্যুতের বিল জমা দেন নাঃ মন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা গ্রহণকারী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বিল পেমেন্টের বেহাল অবস্থার কথা তুলে ধরলেন…

11 hours ago

বিমানে বিস্ফোরক বহন!

অনলাইন প্রতিনিধি :- সম্প্রতি দিল্লি, হায়দরাবাদ, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর সারপ্রাইজ ভিজিট’ করেন ভারতের অসামরিক…

11 hours ago

অমীমাংসিত ঘটনায় সিস্টারের কারখানায় তালা দিলো শিল্প নিগম!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাধারঘাট শিল্প তালুকে সিস্টার গুঁড়া মশলার একটি কারখানা ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিলো টিআইডিসি।…

13 hours ago