অপারেশন টেবিলে তিন প্রসূতি বিদ্যুৎ উধাও, তেল নেই জেনারেটরে!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- মেলাঘরস্থিত মহকুমা হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসক। শুক্রবার বেলা বারোটা নাগাদ তিনজন প্রসূতি রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করার জন্য অপারেশন কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে অপারেশন করতে গিয়ে বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ প্রথমে প্রসূতি রোগীর এক অ্যানিস্থিসিয়া করা হয়। প্রস্তুত রয়েছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কিন্তু তাকে সাহায্য করার জন্য যে কর্মীর অপারেশন কক্ষে থাকা জরুরি সেই কর্মী আজ আসেননি। তেমনি জেনারেটরটিও নষ্ট হয়ে রয়েছে। প্রসূতি রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি, নেওয়া হয়ে গেছে। সেই সময় চলে যায় বিদ্যুৎ। কিন্তু হাসপাতালে জেনারেটর রয়েছে। এই জেনারেটর চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মী হাসপাতালে নেই। বাধ্য হয়ে মোমবাতির আলোর সাহায্য নিয়েই ওই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু আরও যে দুজন রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করার জন্য অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। তাদের অপারেশন করার জন্য জেনারেটর চালু করতেই হবে। কেননা সেই সময় হাল্কা বৃষ্টিপাতের কারণে বিদ্যুৎ চলে যায়, দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়নি। কিন্তু জেনারেটর চালু করার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী না আসার ফলে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মী এবং এক পুরুষ নার্স দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে দেখেন জেনারেটর স্টার্ট নিচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্মী আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে বাইরের দোকান থেকে ব্যাটারি এনে জেনারেটর স্টার্ট করার পর দেখা যায় জেনারেটরে জ্বালানি বা পেট্রোল নেই। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে শুক্রবারদিন সিজারিয়ান অপারেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে সেখানে জেনারেটরটি সঠিক রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব কেন নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্মী? তার অনুপস্থিতিতে আগাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কী জানানো হয়েছে? শেষ পর্যন্ত অন্য কর্মীরা জ্বালানি এনে জেনারেটর চালু করতে সক্ষম হলে পরবর্তী পর্যায়ে বাকি দুজন প্রসূতি রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করা সম্ভব হয়। অ্যানিস্থিসিয়া করার একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সিজারিয়ান অপারেশন করতে হয়। না হলে প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা থাকে। মেলাঘরে অবস্থিত মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসকরা তাদের দায়িত্ব পালনে অবিচল থাকলেও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সহকর্মীরা যে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার স্বাক্ষ্য রেখেছেন তাতে মেলাঘরজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মেলাঘর মহকুমা হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট সহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের অবহেলা দায়িত্বহীনতা চিকিৎসকের নির্দেশ না মানা এ সমস্ত কার্যকলাপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন। মেলাঘরে বর্তমানে যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন তিনি নিয়ম মেনে সপ্তাহে দুদিন সিজারিয়ান অপারেশন করেন। তেমনি জরুরি প্রয়োজনেও তিনি সিজারিয়ান অপারেশন করে থাকেন। এতে মেলাঘর সহ গোটা মহকুমার প্রসূতি মায়েরা দারুণভাবে উপকৃত। অসহায় গরিব মানুষ যারা উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর হাসপাতালে যেতে পারেন না তাদের ভরসা এই মহকুমা হাসপাতাল। যেখনে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। সেখানে একজন অপারেশন থিয়েটারে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মী কেন তার দায়িত্ব পালন করবেন না কিংবা আগাম জানাবেন না সে প্রশ্ন উঠে এসেছে।