অপেক্ষায় ঢাকীরা!
অনলাইন প্রতিনিধি :-হাতে গোনা আর কিছুদিনের অপেক্ষা।এরপরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব,শারদীয়া দুর্গোৎসব। এই শারদীয়াকে কেন্দ্র করে সমস্ত প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে উদ্যোক্তাদের মধ্যেও বরাবরের মতোই চরম ব্যস্ততা পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাজ্যের আনাচে কানাচে ছোট-বড়ো ক্লাবগুলোতে এমনকি বাড়িঘরেও দেবী দুর্গার আরাধনার অপেক্ষার প্রহর গুনছে সকলেই।
দিকে দিকে মন্ডপ তৈরির কাজ চলছে জোড় কদমে, আলোকসজ্জার প্রস্তুতিও চূড়ান্ত, আর মূর্তিপাড়ায়ও চলছে শেষ তুলির টান। তবে পূজার আয়োজনে সবকিছু থাকলেও আধুনিকতার যুগে কোথাও যেন হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকের রমরমা। কিংবা ঢাকের চাহিদা থাকলেও ঢাকী পাওয়া যাচ্ছে না চাহিদা অনুযায়ী। ঢাকের গায়ে কাঠি পড়া মানেই যেন বাঙালির যেকোনো উৎসবের সূচনা। কিন্তু বর্তমানে সেই সংস্কৃতি যেন কোথাও হারিয়ে যাচ্ছে।
বলা চলে, বর্তমানে সবকিছুতেই আধুনিকতার সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় যুগের পর যুগ ধরে যারা পারিবারিকভাবে ঢাককে পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন, তারা অনেকটাই ছন্দহীন হয়ে পড়েছেন বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে।
এক সময় তেলিয়ামুড়া এলাকার শিববাড়ি, সুকান্ত পল্লী, শান্তিনগর সহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ঢাকিদের ব্যাপক কদর ছিল।গ্রামবাংলার সমস্ত পুজো থেকে শুরু করে যে কোনো ধরনের পুজো পার্বণে ঢাকের চাহিদা ছিল ব্যাপক। তবে কালের বিবর্তনে এখন ঢাক নিয়ে ততটা আগ্রহ না থাকায় রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের পাশাপাশি তেলিয়ামুড়ার ঢাকিরাও এক প্রকার অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই দিন কাটাচ্ছেন।কথা প্রসঙ্গে তেলিয়ামুড়া এলাকার এক ঢাকী বলরাম ঋষি দাস দাবি করেন, আগের মতো ঢাকের আর কদর নেই এখন। বলরাম বাবুর মতে আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক ক্ষমতা সম্পন্ন শব্দ যন্ত্রের কারণে মানুষ ঢাককে প্রায় পেছনে ফেলে দিতে চাইছেন। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন কিছুটা চাহিদা থাকলেও সেই পেশাকে আঁকড়ে ধরে অর্থ উপার্জন করা বর্তমান সময়ে অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, বলরাম বাবুদের মতো আরো অনেক এমন ঢাক বাদক আছেন যারা ঢাককে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।বর্তমান আধুনিকতার যুগে দাঁড়িয়ে ঢাক বাদক থেকে শুরু করে একাংশ সচেতন মহলের তরফে ইতিমধ্যেই দাবি উঠতে শুরু করেছে আগামী দিনে ঐতিহ্যবাহী এই ঢাক শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার থেকে শুরু করে সমাজের সকল অংশের জনগণকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে এসে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।