অবিশ্বাস্য!

 অবিশ্বাস্য!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারতে তখন রাত সাড়ে দশটা।আর অস্ট্রেলিয়ায় তখন ভোর রাত। অস্ট্রেলিয়ানরা তখনও বোধহয় ঘুম থেকে ওঠেনি। চোখ রগড়াতে রগড়াতে অবিশ্বাস্য এক ইনিংস শেষে অস্ট্রেলিয়ায় উৎসব শুরু হয়ে যায়।এক অবিশ্বাস্য ইনিংসই শুধু খেললেন না গ্রেন ম্যাক্সওয়েল, অস্ট্রেলিয়াকে ২০২৩ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও নিয়ে গেলেন। গোটা বিশ্ব দাঁড়িয়ে দেখলো পেশাদার ক্রিকেট কাকে বলে আর অনভিজ্ঞ দল মাঝে মধ্যে জিতলেও সবদিনে জেতা যায় না। ইতিহাস হয়ে রইলো মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান ম্যাচ। আফগানিস্তানের স্বপ্নভঙ্গই বলা যায় একে। অস্ট্রেলিয়ার মতো টিমের সামনে ২৯২ রানের টার্গেট দাঁড় করিয়ে ৯১ রানে সাত উইকেট ফেলে দেওয়ার পর কেউ কি ভেবেছিল ম্যাচটা বের করে নিয়ে যাবে। অস্ট্রেলিয়া? কিন্তু হলো তাই-ই।গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নামক এক অস্ট্রেলিয়ান পাহাড়প্রমাণসদৃশ হয়ে আফগানদের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন শেষ বল অবধি। ক্রিকেটকে সত্যিই বলা হয় আনসারটেন গেম। কখন যে কী হয় তা বলা মুশকিল। ১৯৮৩ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে সেসময়কার ভারতীয় ক্যাপ্টেন এবং হিরো কপিলদেবের অবিশ্বাস্য ১৭৫ রানের ইনিংসকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মঙ্গলবার রাতের দুর্ধর্ষ ইনিংস।একদিন হয়তো ম্যাক্সওয়েলের এই রেকর্ডও ভেঙে যাবে।তবে এবারের ম্যাক্সওয়েলের এই রেকর্ড ভাঙতে সময় লাগবে তা বলাই যায়।গ্লেন ম্যাক্সওয়েল যেসময় ক্রিজে, অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে তখন ৯১/৭। সবাই ভেবেছিল ১০০/১১০-এ মিইয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া।কিন্তু ক্রিকেট ইতিহাস যে অন্য খাতে বয়। মানুষ ভাবে এক, হয় আর এক।প্রথম কুড়ি ওভার রাজত্ব করছিল আফগানরা। অবিশ্বাস্য সব বল! বাঘা বাঘা অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারদের সাজঘরে ফেরত পাঠানোর জন্য যা যথেষ্ট ছিল। কিন্তু পরের ত্রিশ ওভার রাজত্ব করেন ম্যাক্সওয়েল।শুধু তাই নয়, খেলতে খেলতে একসময় শরীর আর সঙ্গ দিচ্ছিল না। ক্র্যাপিংয়ের সমস্যায় ভুগছিলেন।পরেরদিকে এক পায়ে খেলে গেছেন ম্যাক্সওয়েল।সেই জায়গায়ই অনভিজ্ঞতার খেসারত দিল আফগানিস্তান।ম্যাক্সওয়েল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলে গেলেন।সেই অনুযায়ী বল হলো কই। ম্যাক্সওয়েলের পছন্দ অনুযায়ী বল করে গেলেন আফগানরা।এখানেই তফাত পেশাদার ক্রিকেট আর অনভিজ্ঞ দলের মধ্যে। অস্ট্রেলিয়ানরা চূড়ান্ত পেশাদার। শেষ বল না খেলা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ানরা হারে না। অন্যদিকে অফগানরা অনভিজ্ঞ হওয়ায় ম্যাক্সওয়েল এর চূড়ান্ত সদ্ব্যবহার করেন। শেষদিকে ম্যাক্সওয়েলের কাছে ক্রিকেট বল নয়, যেন মনে হচ্ছিল ফুটবল।

অবিশ্বাস্য কী রকম ফিনিশ! ৯১/৭ থেকে দরকার ছিল ২৯২। ম্যাক্সওয়েলের একারই ২০১। ১২৮ বলে। পাশে ১০টা ছয়, ২১টা চারের ইনিংস। বহুদিন মনে থাকবে ম্যাক্সওয়েল নামক বিধ্বংসী এক ইনিংসের।অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার হিসাবে পরিচিত ম্যাক্সওয়েল এর আগে বহু ইনিংস খেলেছিলেন।কিন্তু খেলার মাঝখানে তার ছন্দপতনের জন্য ম্যাক্সওয়েলের কুখ্যাতি ছিল। নিজের গুণের প্রতি অবিচার করা তার যেন চেনা অভ্যাস ছিল। অবশ্য মঙ্গলবার বিশ্ব তার যে অবিশ্বাস্য ইনিংস দেখলো এরপর থেকে ম্যাক্সওয়েলকে সমীহের চোখে এখন থেকে দেখবে গোটা বিশ্ব।তিনি যে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন।একপায়ে দলকে জিতিয়েছেন।শুধু জিতিয়েছেন বললে ভুল হবে, দলকে সেমিফাইনালে তুলেছেন ম্যাক্সওয়েল। বহুদিন ইতিহাস ম্যাক্সওয়েলকে মনে রাখবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.