অমিত শাহ সকাশে প্রদ্যোত-কৃতি ১৯শে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সাথে বৈঠক করলেন তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।সোমবার নয়াদিল্লীতে বৈঠকে তার সাথে ছিলেন পূর্ব ত্রিপুরার সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণ। আজকের বৈঠকে অবিলম্বে ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদে ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিল কার্যকর করা। বাংলাদেশ সীমান্তে পেট্রোলিং বৃদ্ধি করা। ত্রিপাক্ষিক চুক্তি এবং রাজ্যের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সহ অন্যান্য বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এদিকে,আগামী ১৯ ডিসেম্বর রাজ্যের জাতি-উপজাতি মানুষের মান উন্নয়নের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত ‘শাহ।তিনি ১৯ ডিসেম্বর,২০ ডিসেম্বর এবং ২১ ডিসেম্বর রাজ্যে থাকবেন। বিশেষ করে এই তিন দিন রাজ্যের অনুপজাতি-উপজাতি এলাকার মান উন্নয়ন এবং দূর্বলতাগুলি পরিদর্শন করবেন অমিত শাহ।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর এডিসি এলাকা পরিদর্শনের সময়ে তার সাথে থাকবেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। আজকের বৈঠকের মাধ্যমেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য সফরের দিনক্ষণ স্থির হয়েছে।
গত দুই মার্চ দিল্লীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পৌরোহিত্যে তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের নেতৃত্বে তিপ্রা মথার সাথে বহুচর্চিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর
করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর গত ২০ সেপ্টেম্বর ত্রিপাক্ষিক চুক্তির প্রথম বৈঠক এবং গত ৩ ডিসেম্বর ত্রিপাক্ষিক চুক্তির দ্বিতীয় বৈঠক হয় দিল্লীতে।মঙ্গলবার আবার ত্রিপাক্ষিক চুক্তির সবগুলি বিষয় নিয়ে পুনরায় বৈঠকে মিলিত হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।সহজেই অনুমেয় ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্তগুলি বাস্তবায়ন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। যদিও ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ঘিরে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক মহলে নানা সংশয় ছড়িয়ে পড়ে।তবে মঙ্গলবার বৈঠকের পর সংশয় আর থাকবে কিনা এটা সময়ই বলবে।
এ দিনের বৈঠকের পর তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন আমাদের আলোচনা সফল হয়েছে। যার ফলে রাজ্যের জাতি-উপজাতি, পাহাড়ি-বাঙালি সহ মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে। তবে রাজ্যে একটি অংশ কয়েকদশক ক্ষমতায় ছিল। যার কিছুই করেনি।তাই রাজ্যের উপজাতি জনসমাজের এখনও অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের মতো অধিকার চাইতে হচ্ছে। এটা আমাদের কাছ বেদনাদায়ক। তবে দেশের সরকার এখন আমাদের সমস্যা নিরসনে এগিয়ে এসেছে।তবে একটি অংশের তা সহ্য হচ্ছে না। রাজ্যের এই অতি ক্ষুদ্র অংশটি বর্তমানে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ঘিরে বাঙালি জনসমাজকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ত্রিপাক্ষিক চুক্তির জন্যে বাঙালি জনসমাজের কোনও সমস্যা হবে না। এই সত্যটা রাজ্যবাসী বুঝে গিয়েছেন। এরপরও রাজ্যবাসীকে তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থা উদ্বেগজনক। তাই এখন আমাদের একটু ভাবতে হবে। এদের হুমকি হুজ্জতি আমাদের মানতে হবে না। যারা মহারাজার নামে গ্রন্থাগার বাংলাদেশে জ্বালিয়ে দিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে • পর্যন্ত অসম্মান করেছে। তাদের সাথে কোনও আপোস করার প্রয়োজন নেই। তবে আমাদের বাংলাদেশে থাকা বাঙালি, ট্রাইবেল, চাকমা, বুদ্ধিস্ট, খ্রিস্টান জন সমাজকে সুরক্ষা দিতে হবে। তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিলে অনুমোদন প্রদান করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকী এডিসিকে সরাসরি অর্থ প্রদান করবে কেন্দ্রীয় সরকার। ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে আমরা সব অধিকার ফিরে পাবো। তবে এর জন্যে আমাদের আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। তাই কোনও প্ররোচনায় পা দিলে আদতে আমাদেরই ক্ষতি হবে। তিনি বলেন, ট্রাইবেল মানুষকে তাদের ভাষায় অধিকার, ভূমির অধিকার, আর্থ সামাজিক অধিকার, শিক্ষার অধিকার, অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের অধিকার প্রদান করতে হবে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে। এমনকী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের, স্কুল, কলেজ, টেকনিকেল কলেজ, ওমেন্স কলেজ, পানীয় জলের সমস্যা নিরসন, বিদ্যুৎ সমস্যার নিরসন, হাসপাতাল সহ আর্টিকেল ২৩-তে অনুমোদন প্রদান ও ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুমোদন করতে হবে।এটাই হলো সাংবিধানিক সমাধান। এখন এই পথেই যাচ্ছি আমরা।
এদিকে এ দিনের বৈঠকে রাজ্যের সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্যে আরও বিএসএফ, সিআরপিএফ এবং ইন্ডিয়ান আর্মি, আসাম রাইফেলস পাঠানো দাবি জানান প্রদ্যোত। এ দিন এডিসি এলাকায় ১২৫তম সংশোধনের বাস্তবায়নের জন্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে একটি স্মারকপত্রও তুলে দেন সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণ।