অম্বুবাচির শুভাশুভ

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

` অম্বুবাচির মধ্যে আবশ্যিক শাস্ত্রী কার্য ছাড়া শাস্ত্র অধ্যয়ন , ভূমিকর্ষণ , হল চালন , বীজ বপন করা নিষিদ্ধ , উক্ত কাজ করলে মাতৃগমন জনিত পাপ হয় । অম্বুবাচির প্রবৃত্তিকাল ৭ আষাঢ় থেকে তুন্নিবৃত্তিকাল ১১ আষাঢ় পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী বিশেষ যাত্রা ও সাবকাশ শুভকার্য নিষেধ । ঐ সময়ে ধরণী ঋতুমতী হয় , অম্বুবাচি সম্পর্কে কামধেনু স্মৃতি সাগরে বলা হয়েছে ‘ নিবৃত্তে সোম নক্ষত্রে যদারৌদ্র প্রবর্ততে । প্রহরাংশ্চাষ্টবিংশাশ্চ ভবেদপ্যম্বুবাচীকা , অষ্টাবিংশতি যামাশ্চ ধরণী ঋতুসা ভবেৎ । তত্রাবস্যং বিনা সদৈব পরিবর্জ্জয়েত ” অর্থাৎ পৃথিবীতে মিথুন রাশিস্থে সূর্য্যের আদ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদ অম্বুবাচির । এই অম্বুবাচির স্থায়িত্ব ৮৪ ঘন্টা পর্যন্ত । শাস্ত্রে বলা হয়েছে ‘ যতিশ্চ ব্রহ্মচারী চ বিধবা চ দ্বিজক্তযা , অম্বুবাচি দিনে চৈবপাকং কৃত্বান ভক্ষয়েৎ , স্বপাকং পরপাকং বা আম্বুবাচী দিনে তথা ।

ভক্ষণং নৈব কর্তব্যং চাণ্ডালাম্নেল তৎসমম ’ । যতি অর্থাৎ যোগী , ব্রহ্মচারী , বিধবা স্ত্রী , ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় , বৈশ্য প্রভৃতি অম্বুবাচি দিনে অন্নাদি পাক করে ভক্ষণ করবে না , নিজে পাক করা হোক না অপরের দ্বারা পাক করা বস্তু কিংবা অম্বুবাচি দিনের পূর্বে পাক করা দ্রব্য অম্বুবাচি দিনে ভক্ষণ করবে না , করলে চণ্ডালান্ন জনিত পাপ হয় , অম্বুবাচির মধ্যে সপর্ভয় নিবারণের জন্য দুগ্ধপান আবশ্যক ।অম্বুবাচির মধ্যে পৃথিবী বর্ষার জলকে সঞ্চিত করে রাখে । এর মধ্যে দিয়ে ধরণীর উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । বর্ষার কারণেই পৃথিবী শস্য শ্যামলা হয়ে উঠে । শরতের বিপুল শস্য ভাণ্ডারের উৎস থাকে বর্ষাঋতুর মধ্যে । তাই শাস্ত্রীয়ভাবে অম্বুবাচির সৃষ্টি তথা জল সংরক্ষণের জন্য নানা বিধিনিষেধ আরোপণ করা হয়েছে । অম্বুবাচির মূল অনুষ্ঠান হয় আসমের কামাখ্যা মন্দিরে । সতীর যোনি এখানে পড়েছিল । এই সময় যোনিপীঠ থেকে রক্তস্রাব হয় , দেশ বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর আগমন ঘটে এই সময় । আসামের কামাখ্যা মন্দির তন্ত্রসাধনার জন্য বিখ্যাত ।

এই সময়ে এয়োতীরা স্বামীর মঙ্গলার্থে সিন্দুর খেলেন বা সিন্দুর বিনিময় করেন । বিভিন্ন মন্দিরে বিবাহিত মহিলাদের আগমন অম্বুবাচিকে প্রাণবন্ত করে তোলে । যেসব কার্যের কোনও বিকল্প নেই তা নিরাবকাশ । এই সময়ে পিতৃশ্রাদ্ধ হয় এবং শ্রাদ্ধের জন্য অন্ন পাক হয় । বৃষোৎসর্গ শ্রাদ্ধও করা যায় ।অম্বুবাচির সময় বিযোৎসর্গ শ্রাদ্ধ করলে যোজন অনুসারে চার আঙ্গুলের অধিক খনন করা যায় , তিথিতত্ত্বে বলা হয়েছে ‘ নিত্যং নৈমিত্তিকং কাম্যং জপযজ্ঞাদিকঞ্চ যৎ অম্বুযাচ্যাং ন দেব কুরীত পুরসঙ্কল্পিতাদৃতে , নব স্বাধ্যায়ং বষটকারং ন দেব পিতৃতপর্ণম , বর্জ্জয়েৎ সর্বকর্মানি শ্রাদ্ধমেকাদশীং বিনা ‘ অর্থাৎ পূর্ব সংকল্প ছাড়া নতুন কোনও পূজা , যজ্ঞ , শাস্ত্র অধ্যয়ন বা পিতৃ মাতৃর পতিত শ্রাদ্ধ করা যাবে না । কিন্তু আদ্যশ্রাদ্ধ , মাসিক শ্রাদ্ধ , সপিণ্ডকরণ শ্রাদ্ধ অর্থাৎ আবশ্যিক শ্রাদ্ধাদি অম্বুবাচি সময় করা যাবে ।

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

11 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

11 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

1 day ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

2 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

2 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

2 days ago