অর্থনীতির পাশাপাশি শক্তিশালী হবে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও।।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজধানী আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনীতির পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও অনেক বেশি সুদৃঢ় হবে। আর এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আর্থিক ব্যবস্থা সমৃদ্ধির পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও অনেক বেশি সুস্থিতি আসবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রক্রিয়াকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ সময়ের সঙ্গে খুবই প্রয়োজন।এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিছুদিন আগেও জিএসটি নিয়ে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় প্রজ্ঞা ভবনে। সেখানেও ব্যবসায়ীরা সম্পৃক্ত রয়েছেন। সবক্ষেত্রেই ব্যবসায়ীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যবসায়ীদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তাদের সম্মান দেওয়া হয়। তিনি বলেন, মঙ্গলবারও গুয়াহাটির এক অনুষ্ঠানে তা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে। তার কথায়, বিগত ৩৫ বছরের রাজত্বে বা তার আগে ব্যবসায়ীদের শ্রেণীকে শত্রু মনে করা হতো। আর আজ এই কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের ডাকার মূল উদ্দেশ হচ্ছে এক দেশ, এক নির্বাচন সম্পর্কে আরও বেশি করে সচেতন করে তোলা তাদেরকে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,কথায় কথায় নির্বাচন আসলে মনে হয় যে আবার নির্বাচন! প্রতি বছরই কোনও না কোনও নির্বাচনের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নির্বাচন যখনই হয়, তখন বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে যেমনি বন্ধ থাকছে স্কুল তেমনি বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ব্যাঘাত ঘটছে সরকারী কাজে। সেক্ষেত্রে এক দেশ, এক নির্বাচন ভাবনা সঠিক হতেই পরে। তার কথায় বছরের পর বছর নিয়মিতভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নানাভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সব অংশের জনগণকে।এক্ষেত্রে পাঁচ বছরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভোটের হারও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। এর মাধ্যমে অর্থনীতির পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও অনেক বেশি সুদৃঢ় হবে বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে তিনি এ বিষয়ে চেষ্টা করার পর ২০২৪-এ তিনি এ বিষয়টি সংসদে নিয়ে আসেন। এর আগে কমিটিও গঠন করা হয়েছিলো। সেই কমিটির রিপোর্টও জমা পড়েছে সংসদে। আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যখনই কোনও নির্বাচন হয়, তখন একটি বিরাট অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ হলে বেশকিছু ক্ষেত্রে সুবিধাই হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়ায় দুই পর্যায়ে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচন। আর তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে লোক্যাল বডির নির্বাচন। এই প্রক্রিয়াকে সত্যিকারের অর্থে আমি সমর্থন করি। এতে দেশের গণতন্ত্র অনেক ক্ষেত্রেই শক্তিশালী ও মজবুত হবে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ১৯৮৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির ম্যানিফেস্টোতে পাঁচ বছর অন্তর অন্তর এক দেশ এক নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তদানীন্তন কেন্দ্রীয় সরকার ও বামেদের চাপে এই প্রক্রিয়া সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বিষয়ে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি যা ভাবেন, সেটাই করে দেখান। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কস্ট এফিসিয়েন্সি, গভর্নেন্স অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি, ফেডারেল স্ট্রাকচার অ্যান্ড কো অর্ডিনেশন, ভোটার টার্ন আউট অ্যান্ড এনগেজমেন্ট এবং ইকোনমিক বেনিফিট অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। আর এটাই আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৫৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিলো। অথচ এই অর্থ আমাদের কাছে থাকলে জিডিপির হারও বৃদ্ধি পেতো।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এছাড়াও এক একটি পার্টিকেও টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়া হয়েছিলো তাতেও সদস্য হিসেবে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, গুলাম নবি আজাদ, হরিশ সালভে সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা আর্থিক সমৃদ্ধি চান, আমি আশা করি তারা ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ এর স্বপক্ষে তাদের মতামত প্রদান করবেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত রাজ্যসভার সাংসদ তথা ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যও ‘এক দেশ এক নির্বাচনে’র পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনিও মনে করেন, এক্ষেত্রে আর্থিক সাশ্রয় ছাড়াও অর্থনৈতিকভাবে গোটা দেশ সাবলীল হয়ে ওঠার নতুন করে সুযোগ পাবে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও করেছেন তিনি। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি ছাড়াও ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সব্যসাচী দাশগুপ্ত, অল ত্রিপুরা মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রতন সাহা, ত্রিপুরা প্রদেশ কনভেনর ড. জওহর লাল সাহা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এদিন ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

Dainik Digital

Recent Posts

ভারতকে হুমকি পাকিস্তানের প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির!!

সিন্ধু নদীর জল বন্ধ হলে রক্তবন্যা বইবে ৷ ভারতের বিরুদ্ধে এমনই হুমকি দিলেন পাকিস্তান পিপলস…

16 hours ago

প্রয়াত ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কস্তুরীরঙ্গন!!

প্রয়াত হলেন ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও প্রখ্যাত মহাকাশ বিজ্ঞানী কে কস্তুরীরঙ্গন ৷ শুক্রবার ইসরোর তরফ…

17 hours ago

উপত্যকার সংকট

পেহেলগাম কি প্রথম গ্রাম? এই ধরনের কথাও চালু রহিয়াছে। পাহাড়শ্রেণী শেষ হইয়া প্রথম জনপদ বা…

17 hours ago

ধর্মনগর, ডুকলি সিপিএম পার্টি অফিসে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব, ভাঙচুর অভিযোগ শাসকের বিরুদ্ধে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ধর্মনগর সিপিআই(এম) পার্টি অফিসে দুষ্কৃতী হামলা। ঘটনা শুক্রবার বেলা বারোটা নাগাদ। এই…

17 hours ago

উড়িয়ে দেওয়া হলো আরো দুই জঙ্গির বাড়ি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-একদিকে চলছে কাশ্মীরের পাহাড়ে জঙ্গিদের খোঁজের উদ্দেশ্যে তল্লাশি,আর অন্যদিকে চলছে পাল্টা অ্যাকশন।একের পর…

19 hours ago

জম্মু-কাশ্মীরে সেনা নার্সিং কলেজের ওয়েবসাইট হ্যাক করল পাকিস্তানের হ্যাকাররা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা নার্সিং কলেজের ওয়েবসাইট হ্যাক করল পাকিস্তানের হ্যাকাররা। ‘টিম ইনসেন…

1 day ago