২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রথম সাত মাসে প্রত্যক্ষ বিদেশি পুঁজি (ফরেন ডাইরেক্ট ইনথবর্ষের প্রথ বা এফডিআই) যা এসেছে,তা গত বারো বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।অর্থের হিসাবে এই পরিমাণ ১৪৫০ কোটি ডলার, ২০১২-১৩ বর্ষের চেয়ে সর্বাপেক্ষা কম। এপ্রিল-অক্টোবরে দেশে এফডিআইয়ের অঙ্ক অবশ্য ছিলো ৪৮৬০ কোটি ডলার, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একই সময়ে দেশ থেকে বেরিয়ে যায় ৩৪০০ কোটি ডলার। এই খণ্ডচিত্র থেকে মোটামুটি একটি বিষয় স্পষ্ট যে, বাজারে কেনাকাটা কমেছে বলে বিদেশ থেকে বিনিয়োগের আগমনও থমকেছে। এর পাশাপাশি এমন একটা ধারণা বিদেশি লগ্নিকারীদের মনে দানা বেঁধেছে যে, ভারতে এখন মাত্র চার-পাঁচটি শিল্পগোষ্ঠীই ব্যবসা করতে পারছে। বাকিরা হয় ওই চার-পাঁচ গোষ্ঠীর তৈলমর্দন করে বেঁচে আছে নতুবা খাবি খাচ্ছে। এমনিতেই সংশ্লিষ্ট চার-পাঁচ গোষ্ঠী বাদ দিলে দেশে বেসরকারী শিল্পমহল আর বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে চাইছে না। শোনা যাচ্ছে, ঠেলায় পড়ে লগ্নিতে উৎসাহ দিতে বৈদ্যুতিন (ইলেকট্রনিক্স) যন্ত্রাংশ তৈরির ক্ষেত্রে আসন্ন বাজেটে প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেটিভ বা সংক্ষেপে পিএলআই ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র।এমনটা হলে দেশে চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়তো আসতে পারে।
অবশ্য উপরের এই খণ্ডচিত্রে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্রের খুব সামান্যই ধরা পড়ে। ধরা পড়ে সরকারের রাজনৈতিক দর্শন আর বক্তৃতামালায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশবাসীকে প্রথম ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। ২০১৮-য় তিনি প্রথম বলেছিলেন, স্বাধীনতার ৭৫তম বছর বা ২০২২-এ ভারতের জিডিপি-র পরিমাণ ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বা ৫ লক্ষ কোটি ডলার হবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিলো ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন। সেখান থেকে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে ছয় বছর শুরু হয়েছে। দেশের অর্থনীতি এখনও ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছয়নি। উল্টে বারংবার লক্ষ্য বদল হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির রূপরেখা নিয়ে আলোচনার জন্য বিষয় বাছাই করেছিল। ২০২৫ শুরু হতেই সেই বিষয়ের শিরোনাম বদলে ফেলা হয়েছে। বদলের আগে অর্থমন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির আলোচনার বিষয় ছিলো, ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির রূপরেখা।’ সেটি বদলে নতুন শিরোনাম করা হয়েছে, ‘বিশ্বের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির রূপরেখা।’অআবাদ পড়েছে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির কথা।এমনিতে ব্রিটেনকে ছাপিয়ে ভারত এখন পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি।কেন্দ্রের কর্তাব্যক্তিরা এখন ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির পথে এগোনোর কথা বলতে চান। ভারতের জিডিপি-র পরিমাণ এখনও ৩.৪১ লক্ষ কোটি ডলার। ভারতের সামনে রয়েছে আমরিকা, চিন, জাপান ও জার্মানি। আমেরিকা, চিন বাদে জাপান বা জার্মানিও এখনও ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারেনি। অবশ্য এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, বিশ্ব এক কঠিন পরিস্থিতিতে চলেছে। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। অন্যদিকে ইজরায়েল- প্যালেস্টাইন সংঘাত। শুধু তাই নয়, ইরান, মিশর, লেবাননের মতো একাধিক ফ্রন্টে লড়াই করছে ইজরায়েল, যাকে আমরা মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বলতেই পারি। তদুপরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পরে আমেরিকার আর্থিক নীতি কী হবে, বিশ্বের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও জ্বালানির দাম কোন দিকে যাবে, এসব নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যদি রক্ষণশীল মনোভাব নিয়ে চলতে চায়, অর্থশাস্ত্রীদের বিচারে সেটাও ভুল নয়। লগ্নিতে ভাটার টানের অর্থ কলকারখানায় উৎপাদনের দুর্বল চিত্র। এর জেরে চলতি অর্থ বছর, অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার মাত্র ৬.৪ শতাংশেই আটকে যাবে বলে দিন তিনেক আগেই জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে। কোভিড অতিমারির ধাক্কার পরে গত চার বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার এতখানি কমেনি। গত অর্থবর্ষেও বৃদ্ধির হার ছিলো ৮.২ শতাংশ। সেখান থেকে এক ধাক্কায় প্রায় ২ শতাংশ কম! অতএব, দেশের অর্থনীতির ইঞ্জিনে জ্বালানি যে কমে আসছে, তা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। শিল্পমহলের লগ্নিতেও বৃদ্ধির হারও মাত্র ৬.৪ শতাংশ। গত অর্থ বছরের ৯ শতাংশের তুলনায় যা অনেকটাই কম। তবে কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার গতবারের তুলনায় ভালো। পরিষেবা ক্ষেত্রেরও একই ছবি। কিন্তু ব্যবসা, হোটেল, পরিবহণ, আবাসন, আর্থিক পরিষেবার মতো সব ক্ষেত্রেই বৃদ্ধির হার কমছে। আশা করি,আসন্ন বাজেটে উপযুক্ত বটিকার সন্ধানের কথা শোনা যাবে।
অনলাইন প্রতিনিধি :-দীর্ঘদিন ধরে টি,এস,এফ দাবি করে আসছে রোমান লিপি কে স্বীকৃতি দেওয়ার।বর্তমানে যে প্রশ্নপত্র…
অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয়শিক্ষা মন্ত্রকের সর্বশেষ রিপোর্ট এও ফুটে উঠলো ত্রিপুরার স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার বে-আব্রু চেহারা।…
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদি সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াসের স্লোগান দিয়েছেন। আর…
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…