অর্ধেক নর, অর্ধেক নারী, এক শতাব্দীতে বিরল দ্বিতীয় পাখি!!

 অর্ধেক নর, অর্ধেক নারী, এক শতাব্দীতে বিরল দ্বিতীয় পাখি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্কন্ধপুরাণ ও শিবপুরাণে আছে শিবের অর্ধনারীশ্বর রূপ।যা হল শিব ও পার্বতীর সম্মিলিত অবয়ব। অর্ধনারীশ্বর হলেন ব্রহ্মাণ্ডের পুরুষ ও নারী শক্তির (পুরুষ ও প্রকৃতি)সংশ্লেষণের প্রতীক। দেহের ঠিক মাঝখান থেকে সমানভাবে বিভাজিত অর্ধেক পুরুষ ও অর্ধেক নারীর মূর্তি রূপের।রূপে বর্ণনা আছে এই রূপের।কিন্তু এ কোনও পুরাণ কাহিনি নয়, বাস্তবে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন এমন এক পাখি, যা অর্ধেক নারী এবং অর্ধেক পুরুষ! কলম্বোর ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা প্রাণীবিজ্ঞানী অধ্যাপক হামিশ স্পেন্সারের নেতৃত্বে এই যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। বিরল প্রজাতির এই পাখিটি সবুজ হানিক্রিপার (সঙ্গের ছবি) গোত্রের। এমন বিরল পাখি তারা দেখতে পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডে।পাখিটি পুরুষ ও নারী উভয় লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য নিয়েই জন্মেছে।বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত একশো বছরে এমন বিরল প্রজাতির এটি দ্বিতীয় পাখি।পাখিটি অন্য পাখির থেকে অনন্য। এই ঘটনাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘গাইনান্ড্রোমরফিজম’।গবেষকরা পাখিটির অসাধারণ একটি ছবি তুলছেন।শরীরে আড়াআড়ি বিভাজিত দুটি রং। তার গায়ের অর্ধেক রং সবুজ (অর্থাৎ নারী) এবং বাকি অর্ধেক নীল (পুরুষ)।পাখিটি বৈজ্ঞানিকভাবে ‘বাইলেট্যারাল গাইনান্ড্রোমরফিক’ নামে পরিচিত।এটির শরীরের বিভিন্ন দিকে পুরুষ এবং নারী উভয় বৈশিষ্ট্যই দেখা যায়। অর্থাৎ,একপাশে পুরুষ প্লুমেজ এবং প্রজনন অঙ্গ-সহ পুরুষ দেখায়।অন্যদিকে স্ত্রী গ্লুমেজ এবং প্রজনন অঙ্গ-সহ স্ত্রী পাখির মতো দেখায়। পাখিটির এমন বৈশিষ্ট্য সম্ভবত প্রাথমিক বিকাশের সময় একটি জেনেটিক অসঙ্গতির ফল।যার ফলে কোষগুলি পুরুষ ও স্ত্রী উভয় লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, বলেছেন হামিশ স্পেন্সার। অধ্যাপক স্পেন্সার বলেন, ‘অনেক পাখি পর্যবেক্ষক তাদের সমগ্র জীবন অপেক্ষা করেও এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী হতে পারেন না।আমি নিউজিল্যান্ডে এরকম পাখি আর কখনও দেখিনি। আমি প্রকৃতই একজন ভাগ্যবান মানুষ।’স্পেন্সার বলেন, ‘বাইলেট্যারাল গাইনান্ড্রোমরফিক মানে পাখির একপাশে পুরুষ বৈশিষ্ট্য এবং অন্যপাশে স্ত্রী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। স্ত্রী পাখির ডিম্বাণু গঠনের সময় কোষ বিভাজনগত ত্রুটির কারণে এরকম ঘটে।পরবর্তীকালে, ডিম্বাণু দুটি শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয়। এই অনন্য সংমিশ্রণের ফলে একটি পাখির দেহের বিভিন্ন দিকে পৃথক পুরুষ ও নারী বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়।’গবেষকরা জানান, উভয় লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য বহন করা গাইনান্ড্রোমরফিক প্রজাতিগুলি পাখিদের লিঙ্গ নির্ধারণ এবং যৌন আচরণ সম্পর্কে বুঝতে আরও বিস্তৃতভাবে সাহায্য করে।তবে গাইনান্ড্রোমফিরজম, হারমাফ্রোডিটিজম থেকে ভিন্ন।হারমাফ্রোডিটিজমের ক্ষেত্রে দেহে একই সঙ্গে পুরুষ এবং স্ত্রী উভয় প্রজনন অঙ্গ বহন করে।বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার ‘জার্নাল অফ ফিল্ড অর্নিথোলজি’-তে নথিভুক্ত করা হয়েছে।যা একশো বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে গাইনান্ড্রোমরফিজমের নথিভুক্ত হওয়ার দ্বিতীয় উদাহরণ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.