অশান্ত বাংলাদেশ !
অনলাইন প্রতিনিধি :-সামনে বছরের গোড়াতেই বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্টিত হবে।তাকে কেন্দ্র করে এখন বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।যা রীতিমতো উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে,বিরোধী দল বিএনপি এবং জামাত ইসলামের মতো কট্টর মৌলবাদী দলগুলি উঠেপড়ে লেগেছে।তারই অঙ্গ হিসাবে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকে ঢাকায় মহাসমাবেশ ঘিরে যা ঘটেছে, তা রীতিমতো উদ্বেগের।উদ্বেগের ও চিন্তার বিষয় এই কারণে যে, বাংলাদেশ বরাবরই ভারতের প্রতিবেশী এবং সব থেকে ভালো বন্ধু রাষ্ট্র।শুধু তাই নয়, ভৌগোলিক দিক দিয়ে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্য ত্রিপুরার ভূখণ্ড চার ভাগের প্রায় সাড়ে তিন ভাগই বাংলাদেশ সীমান্তের সাথে যুক্ত।শুধু তাই নয়, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সহ আরও নানা ভাবে বাংলাদেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে।ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা, আরও নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে ত্রিপুরার মেলবন্ধন গত দশ বছরে আরও সুদৃঢ় হয়েছে।স্বাভাবিক ভাবেই পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীর ঘরে কোনও অশান্তি হলে, তার প্রভাব আমাদের উপরেও পড়বে। এই নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।খবরে প্রকাশ, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহামহাবেশ ঘিরে ঢাকায়
দিনভর বিএনপির কর্মীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।বোমা,গুলী, পেট্রোল বোমা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ কিছুই বাদ যায়নি।এককথায় রণক্ষেত্রের রূপ নেয় ঢাকা শহর।সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মী সহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে এখনো পর্যন্ত।আহত হয়েছে প্রায় দেড়শো’র উপর।এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।উত্তেজিত বিএনপি কর্মীরা এক পুলিশ কর্মীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করে।প্রধান বিচারপতির সরকারী আবাসন পর্যন্ত আক্রমণ করে বিএনপি কর্মীরা।এই পরিস্থিতিতে গতকাল রবিবার দিনব্যাপী হরতাল আহ্বান করে বিরোধী দল বিএনপি।তবে হরতালে খুব একটা সাড়া দেয়নি বাংলাদেশের জনগণ।রবিবার হরতাল শেষে বিএনপি সারা দেশে তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।এই অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে বড় ধরনের অশান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।যদিও হাসিনা সরকার ও প্রশাসন যেকোনও ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা শক্ত হাতে মোকাবিলা করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।আওয়ামী লিগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয
সরকারের(তত্ত্বাবধায়ক)অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার দাবিতে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি গত শনিবার ঢাকার নয়া পল্টন এলাকায় তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ আহ্বান করেছিল।একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল ঢাকার বায়তুল মোকাররম এলাকায় শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। অভিযোগ,সমাবেশের দিন বিএনপি কর্মীরা লাঠি ও নানা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মীদের গাড়ি আক্রমণ ও ভাঙচুর করে।অগ্নিসংযোগ করে একাধিক গাড়িতে। সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।পুলিশ দুই দলের কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে টিয়ার গ্যাস, জলকামান ও পরে লাঠিচার্জ করে।এরপরই বিএনপি কর্মী ও পুলিশের মধ্যে একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।সবথেকে চিন্তার বিষয় হচ্ছে, সংঘর্ষের নমূনা এবং ব্যাপ্তি দেখে অনেকেই মনে করছে পুরোটাই ছিলো পূর্বপরিকল্পিত।যেভাবেই হোক,বাংলাদেশকে অশান্ত করে তুলতে চাইছে।রাজনৈতিক সংঘাতের মাত্রা বাড়িয়ে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে চাইছে।এই ক্ষেত্রে অন্য কোনও রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এখানেই শেষ নয়,ভারত বিদ্বেষী জিগির তুলে বিভিন্ন কট্টর ইসলামিক সংগঠনও ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে উঠে পড়ে লেগেছে। যদিও এই পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নতুন নয়।তবে পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত করা হচ্ছে,তা এখনই শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে না পারলে আগামী দিন আরো খারাপ হবে।যার ফলে ভোগ করতে হবে ভারতকে এবং অবশ্যই ত্রিপুরা রাজ্যকে।