অশ্রুসিক্ত নয়নে ২ জওয়ানকে শ্রদ্ধা

 অশ্রুসিক্ত নয়নে ২ জওয়ানকে শ্রদ্ধা
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মণিপুরে ভূমিধসে নিহত রাজ্যের দুই জওয়ানের দেহ এসে পৌঁছেছে । রবিবার দুপুরে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে রাজ্যের দুই বীরসন্তান শহিদ সেনা জওয়ান সঞ্জয় দেবনাথ ও প্রশান্ত দেবের মরদেহ এসে পৌঁছেছে । পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাদের দেহ স্থানীয় সিঙ্গারবিলস্থিত বীর বিক্রম বিমানবন্দরে আনা হয় । সেখান থেকে আসাম রাইফেলসের উদ্যোগে শহিদ জওয়ানদের মৃতদেহ গ্রহণ করা হয় ।

গার্ড অব অনার দিয়ে মৃতদেহ পৌঁছানো হয় বিশালগড় ও স্থানীয় অরুন্ধতীনগরে । জাতীয় পতাকায় ঢাকা প্রশান্ত দেবের মরদেহ অরুন্ধতীনগরের পুলিশ আবাসনে পৌঁছতেই তার স্ত্রী , সন্তানসহ পরিজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন । অনুরূপ অবস্থা হয় সঞ্জয় দেবনাথের মৃতদেহ বিশালগড় থানাধীন বাইদ্যারদীঘি সংলগ্ন কসবায় পৌঁছলেও । মণিপুরের নোনে জেলার টুপুলে রেলপথ নির্মাণের প্রশ্নে নিয়োজিত ভারতীয় সেনার জওয়ানরা বুধবার ২৯ জুন রাতে ভূমিধসের কবলে পড়ে । তাতেই চাপা পড়েন রাজ্যের দুই বীর সন্তান ।

পাশাপাশি আসামের দক্ষিণাংশের ত্রিপুরা কাছাড় জেলার দুইজনের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায় । তাদের মধ্যে একজন রেলের নির্মাণ সংস্থার পাচক ধীরেন কুড়ি ( ৩৫ ) । তার বাড়ি কাছাড়ের বরখলা এলাকায় । কাছাড়ের অন্য মৃত ব্যক্তি নির্মাণ সংস্থার গাড়ি চালক সাজাহান ( ২৫ ) ।তার বাড়ি লক্ষীপুরে।সব মিলিয়ে শনিবার পর্যন্ত ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের । রবিবার মৃত্যুর সংখ্যায় আরও আটজনের নাম যোগ হয়েছে । সব মিলিয়ে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের । রাজ্যের দুই বীর সন্তানের দেহ বাড়িতে পৌঁছানোর সময় বহু মানুষ অংশ নেন শবযাত্রায় ৷

জাতীয় পতাকাবাহী বাইক ও গাড়ি নিয়ে শবানুগমন করেন তারা । রাস্তার পাশে থাকা মানুষ বিমানবন্দর থেকে বিশালগড় পর্যন্ত শহিদের শৌর্যের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথানত করেন । তৈরি হয় শোকের আবহ । মৃতদেহগুলি তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে পৌঁছলে শুরু হয় কান্নার রোল ও বিলাপ । এদিকে রবিবার স্থানীয় সূত্র ও সেনা মারফতে পাওয়া খবরে জানা গেছে ,এখন পর্যন্ত পাওয়া মৃতদেহের মধ্যে ২৪ টি সেনাদের । ১৩ টি রয়েছে সাধারণ মানুষের দেহ । ১৩ জন সেনা কর্মীে ৫ জন সাধারণ নাগরিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছেন ৬ সেনা জওয়ান এবং ১৯ জন সাধারণ মানুষ। রবিবার উদ্ধারকৃত মৃতদেহগুলি ধ্বংসস্তূপের অনেক গভীর থেকে পাওয়া গেছে । স্থানীয় সূত্রের বক্তব্য , পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ । প্রবল বর্ষণের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়ে চলছে প্রচণ্ডভাবে। তবে আশার কথা হলো , রবিবার ধ্বংসস্তূপ অনেকটাই সরানো গেছে । ইজেই নদীর গতিধারা চালু করা সম্ভব হয়েছে । ফলে বিপর্যস্ত মাথুয়াম ও সংলগ্ন মরাঙচিত্ত গ্রামের বিপদ আশঙ্কার মেঘ অনেকটাই কেটে গেছে । রবিবার বিপর্যয়স্থল পরিদর্শন করেন কেন্দ্র ও রাজ্যের মন্ত্রী সহ সাংসদ এবং স্থানীয় নেতৃত্ব । তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন । অংশ নেন বৈঠকে । উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে জানান , উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ওয়াল রাডারের মতো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সহ প্রশিক্ষিত কুকুর । তবে অস্বাভাবিক এবং অবর্ণনীয় ভূমিধসের কারণে ও প্রচণ্ড দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.