অস্টিও-আথ্রাইটিস ও হোমিও চিকিৎসা

 অস্টিও-আথ্রাইটিস ও হোমিও চিকিৎসা
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইনঃ পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ অস্টিও – আর্থ্রাইটিস নামক দুরারোগ্য হাড়ের অসুখে আক্রান্ত । দেহের অত্যধিক ওজন বা স্থূলতা এই রোগের অন্যতম কারণ হলেও রোগা ব্যক্তিরা কিন্তু নিরাপদ নন । তাই ভয় না পেয়ে এই সমস্যা দেখা দিলে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া একান্ত প্রয়োজন ।
অস্টিও আর্থ্রাইটিস কী ?
তরুণাস্থি বা কার্টিলেজ হল হাড়ের রক্ষাকর্তা । কার্টিলেজ যখন দৃঢ়তা হারিয়ে ফেলে , তখনই অস্টিও আর্থ্রাইটিস দেখা দেয় । যার ফলে ব্যথা , যন্ত্রণা সহ একাধিক সমস্যা তৈরি হয় । হাড়ের জয়েন্টগুলিও তাদের স্বাভাবিক কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলে ।
রোগের কারণ :
উচ্চতার অনুপাতে ওজন বেশি হয়ে গেলে , বয়সজনিত কারণে , খেলাধূলা কিংবা দুর্ঘটনা থেকে , হাঁটুতে সংক্রমণ থেকে অস্টিও – আর্থ্রাইটিস হতে পারে । তাছাড়া বংশানুক্রমিক , কার্টিলেজস , জন্মগতভাবে হাড়ের বিকৃতি , মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেস , ধূমপান মদ্যপানের মতো অভ্যাসেও এই রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে । আবার নির্দিষ্ট কিছু পেশার ক্ষেত্রে যদি কোনও জয়েন্টে বারবার চাপ পড়ে , তাহলেও এর প্রকোপ বেড়ে যায় ।

কোন বয়সে হয় :
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে , সাধারণত গড়ে ৪৫ বছরের পর থেকে মহিলাদের এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৫০ বছরের পর থেকে এই রোগটি হবার আশঙ্কা থাকে । তবে হাঁটুতে চোট লাগলে , ক্যালশিয়াম ভিটামিন – ডি , ভিটামিন বি -১২ ঘাটতি থাকলে কম বয়সেও ওই সমস্যা শুরু হয় ।


হাঁটু ছাড়া শরীরের কোন কোন অংশে হতে পারে :
এই রোগটি শরীরের যে কোনও জয়েন্টে হতে পারে । তবে প্রধানত হাত , হাঁটু , কোমর বা স্পাইনের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে । এছাড়া অন্যান্য জয়েন্ট , পেশির নিচের হাড় , লিগামেন্ট , জয়েন্টের কভারেও এই রোগের প্রভাব দেখা দিতে পারে ।
রোগের লক্ষণ :
প্রধান লক্ষণ হল ব্যথা , যন্ত্রণা , ফোলাভাব অনুভূত হওয়া । চলাফেরায় কষ্ট , হাড়ের স্টিফনেস , অনমনীয়তা দেখা যায় । হাঁটু নড়াচড়া করা যায় না । হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া , অনেক সময় আক্রান্ত জয়েন্টটি নড়াচড়া করলে মট – মট আওয়াজ হয় ইত্যাদি । আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষণগুলি বাড়তে থাকে এবং জটিল আকার ধারণ করে ।
ওজন কমান :
ওজন বেশি হলেই এই রোগের ব্যথা জাঁকিয়ে বসে । ওজন বেশি হলে শরীরের চাপ গিয়ে পড়ে হাঁটু এবং পায়ের পাতার ওপরে । ওজন কমিয়ে ফেললে ব্যথার অনেকটাই উপশম করা যায় । অন্তত রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়।
রোগ এড়িয়ে চলার উপায় :
অনেকক্ষণ দাঁড়ানো , ক্রসলেগ সিটিং এড়াতে হবে । সিঁড়ি দিয়ে ওঠা – নামা নিয়ম মেনে করতে হবে । সিঁড়ি চড়লে হাঁটুর জয়েন্টে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে । তাই ওপরে ওঠার সময় রোগগ্রস্ত পা পরে এবং নিচে নামার সময় রোগগ্রস্থ পা প্রথমে ফেলতে হবে , যাতে শরীরের ভার রোগগ্রস্থ পায়ের ওপর না পড়ে ।
চিকিৎসা :
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা । লক্ষণ অনুযায়ী রুটা , লিডামপল , ম্যাগফস , ক্যালকার্ব , আর্নিকা প্রভৃতি ওষুধ ব্যবহার করা হয় । চিকিৎসক তার অভিজ্ঞতার আলোকে ওষুধ নির্বাচন করেন । তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া উচিত নয় । ওষুধ খাবার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যায়াম , ধ্যান , ম্যাসাজ করা দরকার এবং এই রোগের জন্য মনে যদি অবসাদ আসে , তবে কাউন্সেলিং করা প্রয়োজন । আর চটকদারি বিজ্ঞাপনে মোহিত না হয়ে বাজারচলতি ওষুধ খাওয়া উচিত নয় । এতে হিতের বিপরীত হতে পারে ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.