অস্থির মণিপুরে শান্তি রক্ষার বার্তা প্রদ্যোতের!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-মণিপুরের অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে সরব হলেন তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।তিনি বলেন, আমাদের শান্তি, সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। এভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা করলে আদতে মণিপুরি জনসমাজের কোনও সমস্যার নিরসন হবে না। উল্টো ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে খাদের কিনারায় নিয়ে আসছি আমাদের ভুল পদক্ষেপের জন্য।তাই ঐক্য সংহতি রক্ষায় তিনি মণিপুরের সকল অংশের মানুষ এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।বৃহস্পতিবার প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ ব্যক্তিগত সামাজিক মাধ্যমে বলেন,পূর্ব-উত্তর ভারতের রাজ্য ত্রিপুরা, মণিপুর, আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিমের মানুষের জন্য বিজেপি, কংগ্রেস দলের সময় কবে হবে?এ নিয়ে আমাদের বসে থাকলে চলবে না।এখন মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের নির্বাচন নিয়ে তারা ব্যস্ত আছেন।দেশের মিডিয়াও এর জন্য ব্যস্ত।তাই মণিপুর নিয়ে তাদের কাছে সময় নেই। তেইশ নভেম্বর ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর হয়তো তারা সব কিছুই ভুলে যাবেন।তাই কোনও জাতীয় রাজনৈতিক দলের কথা না ভেবে আমাদের বিভাজন বন্ধে এগিয়ে আসতেই হবে। একাংশ রাজনৈতিক ব্যক্তি আমাদের বোকা বানিয়ে নিজেদের লাভালাভের জন্যে বিভাজন তৈরি করেছে।এই পরিস্থিতিতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে এখন হিংসার রাস্তা ছাড়তে হবে।হামলা হুজ্জতি করে কোনও লাভ হবে না।এতে আমাদের জনসমাজেরই ক্ষতি হচ্ছে।তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ এবং দেশের অনেক রাজ্যের একটি জেলা থেকেও কম জনসংখ্যা উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জনসংখ্যা রয়েছে।এই কারণেই হয়তো আমাদের সমস্যা নিরসনের কোনও উদ্যোগ নেই।তাই আর্থসামাজিক উন্নয়ন,আয় উপার্জন বৃদ্ধির জন্য এবং শান্তি সম্প্রীতি ঐক্য রক্ষায় তিনি হিংসা বন্ধের আহ্বান জানান।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন,ত্রিপুরা বিধানসভায় ছাব্বিশটি আসন সংরক্ষিত করার লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে।এর মধ্যে একটি আসন সংরক্ষিত থাকবে মণিপুরি জনসমাজের জন্য, আর বাকি পঁচিশটি আসন থাকবে উপজাতি জনসমাজের জন্য।২০২৮ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যের ষাটটি বিধানসভা আসনের মধ্যে পঁচিশটি আসন রাজ্যের উপজাতি জনসমাজের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে।এখন আবার ত্রিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে দিল্লীতে বৈঠক হবে।
তিনি বলেন, ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী এডিসিকে সরাসরি অর্থ প্রদান করবে কেন্দ্রীয় সরকার।ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদকে সরাসরি অর্থ প্রদান করতে হবে।ট্রাইবেল মানুষকে তাদের ভাষার অধিকার,ভূমির অধিকার, আর্থ-সামাজিক অধিকার, শিক্ষার অধিকার,অন্ন,বস্ত্র, বাসস্থানের – অধিকার প্রদান করতে হবে।১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিলের আর্টিকেল ২৩-তে পর্যন্ত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুমোদন করতে হবে।এটাই হলো গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের সাংবিধানিক সমাধান।তবে একটি অংশ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।তবে ভালো দিক হলো মানুষ তাদের কথায় কর্ণপাত করছেন না। তাই এই অংশটি
হতাশ।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন,২০২৬ সালে রাজ্যে আবার ডিলিমিটেশন হবে। তাই ওই সময়ের মধ্যেই ত্রিপুরা বিধানসভায় পঁচিশটি আসন উপজাতি সংরক্ষিত এবং একটি আসন মণিপুরি সংরক্ষিত ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকারকে করতে হবে।তার দাবি আমাদের দীর্ঘ বছর ধরে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে এখন আমাদের বঞ্চিত করলে হবে না।ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে দাবিগুলিতে সম্মতি কেন্দ্রীয় সরকারকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, এখন আবার কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বৈঠক হবে। তাই একটি অংশ মিথ্যাচারে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। ত্রিপাক্ষিক চুক্তির দাবিতে সিলমোহর প্রদানের মাধ্যমেই আমাদের সমস্যার সাংবিধানিক সমাধান হবে। তবে এর ফলে বাঙালি জনসমাজের কোনও ক্ষতি হবে না।অবাক করার বিষয় হলো একটি অংশ ত্রিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে বাঙালি জনসমাজকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তাই রাজ্যবাসীকে তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্যের নাতি হিসাবে আমি রাজ্যের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং রাজ্যের শান্তি, সম্প্রীতি, ঐক্য রক্ষা করতে এসেছি।এটাই একটি অংশের সহ্য হচ্ছে না।