অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হচ্ছে অর্থ,ডিজিটাল জমানায় ঘুম ছুটছে চরম উদাসীন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, ততই সেই প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে সাধারণ মানুষকে লুঠ করছে সাইবার অপরাধীরা, আর এদের সাথে যুক্ত একাংশ ব্যাঙ্ক কর্মী।কেননা, ব্যাঙ্ক কর্মীদের সহযোগিতা ছাড়া এই ধরনের অপরাধ সংগঠিত করা সম্ভব নয়। ফলে সারা জীবনের কষ্টের উপার্জন ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রেখেও সাধারণ মানুষ এখন নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না। কখন কার জমানো অর্থ উধাও হয়ে যাবে, কেউ বলতে পারে না। অথচ ব্যাঙ্কিং সংস্থাগুলোর এই ব্যাপারে কোনও মাথাব্যথা নেই। জনগণের অর্থে লালিত-পালিত ব্যাঙ্কগুলোর কোনও দায় নেই। শুধু দেখবো, দেখছি আর তদন্তের নাম করে দায় এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতারণার নমূনা দেখলে মাথা ঘুরে হার্টফেল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। সর্ষেতে ভূত থাকলে যা হয়, ঠিক তাই হচ্ছে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের সাথেও। এই ধরনের ঘটনা নিত্যদিন ঘটছে। অ্যাকাউন্ট থেকে জমানো অর্থ উধাও হয়ে যাচ্ছে। অথচ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কোনও দায় নিচ্ছে না।সম্প্রতি আগরতলার কর্নেল চৌমুহনীস্থিত এসবিআই টিএলএ ব্রাঞ্চের এক ব্যবসায়ী গ্রাহক সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।এই ব্যাপারে ব্যাঙ্ক এবং থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।এই ক্ষেত্রেও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি’। গত ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ এবং ২৯ মে পরপর পাঁচদিন ওই ব্যবসায়ী গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিদিন দশ হাজার টাকা করে উধাও হয়ে গেছে।এইভাবে কোনও কারণ ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নজরে আসতেই ওই ব্যবসায়ী গ্রাহক সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে যান তার পাস বই আপডেট করতে। ব্যাঙ্কে থাকা পাস বই আপডেট মেশিনে তিনি নিজে যখন আপডেট করেন, তখন দেখা যায় নির্দিষ্ট ওই তারিখগুলিতে পাস বইয়ে কোনও প্রিন্ট আসেনি। অর্থাৎ পাস বইয়ের পাতা সাদা। বিস্ময়ের ঘটনা হলো, ওই নির্দিষ্ট তারিখগুলির আগে এবং পরের এন্ট্রিগুলি পাস বইয়ে প্রিন্ট হয়েছে।পাস বই হাতে নিয়ে এই অবস্থা দেখে গ্রাহকের মাথা ঘুরে যায়। তিনি পাস বই নিয়ে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টেন্টের সাথে কথা বলেন এবং পুরো বিষয়টি তাকে জানান। অ্যাকাউন্টেন্ট ওই গ্রাহককে তখন বলেন, ব্যাঙ্কের এক নম্বর কাউন্টার থেকে পাস বইটি পুনরায় আপডেট করতে। সেই মতো তিনি ব্যাঙ্কের এক নম্বর কাউন্টারে যান এবং পুনরায় পাস বই আপডেট করান। তখন দেখা যায় ওই নির্দিষ্ট তারিখগুলিতে যে টাকা উধাও হয়ে গেছে, তা পাস বইয়ে এন্ট্রি এবং প্রিন্ট এসেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কী করে সম্ভব? আপডেট মেশিন তো একই !এখানেই শেষ নয়, পাস বইয়ের প্রিন্ট থেকে দেখা যায় মুম্বাই থেকে ‘AEPS Method’ মানে ‘Aadhaar Enable Payment Service’ এই পদ্ধতি ব ব্যবহার করে আগরতলার ব্যবসায়ী গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচদিনে পঞ্চাশ হাজার টাকা হাপিস করে দেওয়া হয়েছে। ওই গ্রাহক আকাশ থেকে পড়েন। কেননা, তিনি এই মাধ্যমের নামই শুনেননি। জীবনে কোনওদিন ব্যবহারও করেননি। এই সার্ভিসে লেনদেনের জন্য ব্যক্তির ফিঙ্গার প্রিন্ট জরুরি। অ্যাকাউন্ট হোল্ডার আগরতলায় অথচ তার অ্যাকাউন্ট থেকে মুম্বাইতে ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করে কে বা কারা টাকা তুলে নিয়ে গেলো? এর জবাব কে দেবে? এর দায় পুরোপুরি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জনগণের আমানতের সুরক্ষা দিতে পারছে না। সাইবার অপরাধীদের কাছে কীভাবে পৌঁছে যাচ্ছে গ্রাহকের তথ্য?

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

ফ্রি-ফ্রি-ফ্রি!

দিল্লী বিধানসভা ভোটকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে যেন প্রতিশ্রুতির প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ভোটারদের মন…

4 hours ago

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

1 day ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

1 day ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

1 day ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

1 day ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

2 days ago