বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে দুর্নীতির প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপে বিপাকে পড়ল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির জন্য ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য গঠিত বিভিন্ন নিয়োগ কমিটির প্রতিনিধিদের আইনি বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে বিশেষ করে প্রশাসনিক বিভাগে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর।এর মূলে অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, সহ অন্য পদে নিয়োগ দুর্নীতি! অভিযোগ অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে নিয়োগ নীতি লঙ্ঘন করে একাংশ ক্ষমতাবান প্রাথীদের চাকরি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরজন্য রাতারাতি নিয়োগনীতি ও পরিবর্তন করা হলো।এরপর অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে লোক দেখানোর লিখিত পরীক্ষাও হয়েছে।আর এই সব দুর্নীতিগুলি প্রমাণ সহ দাখিল হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।এরপরই ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এ নিয়ে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়কে জারি করেছে নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকা আসার পরই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হলো ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর উপাচার্য সহ গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিপাকে পড়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এখন প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হচ্ছে। যদিও ইউজিসি সূত্রে খবর এ দফায় তাদের শেষ রক্ষার সম্ভাবনা নেই। এমনকী এখন পর্যন্ত যারা অনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগ দিলেন তাদের অবস্থা ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকাদের মতো হতে পারে। এখন আবার অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে নিয়েছে কেন সরকার। এদিকে রাজ্য মহাকরণ সূত্রে খবর ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ দুর্নীতির রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে সহজেই অনুমেয় ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে তোলপাড় হবে গোটা রাজ্যে। অভিযোগ রাজ্যের মেধাবান যুবক যুবতীদের চাকরি না দিয়ে বহি:রাজ্য থেকে বেকারদের ধরে এনে চাকরি প্রদানের মেলা হচ্ছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে।জানা গিয়েছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, অ্যাসিস্ট্যান্ট লাইব্রেরিয়ান পদ সহ অন্য পদে নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে দিল্লীতে বৈঠকের আগেই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রশাসনিক আধিকারিক জানান, এই সুযোগ কেউ পাবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার সহ অন্য পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে চাকরির জন্য চাকরি প্রার্থীর ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতকোত্তর স্তরে ৫৫ শতাংশ থাকা বাধ্যতামূলক। এর সাথে কোনও চাকরি প্রার্থীর যদি পিএইচডি ডিগ্রি, নেট উত্তীর্ণ এবং অভিজ্ঞতা থাকে তবে ওই চাকরি প্রার্থীকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এমনকী-অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে যাট ‘বয়সের যোগ্যতাবান প্রার্থীদেরও আবেদনের সুযোগ এবং যোগ্যতা থাকলে চাকরি প্রদানের বিধান রয়েছে। উল্লেখ্য, এই পদের ক্ষেত্রে যদি কোনও চাকরি প্রার্থী কোনও পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হন, তার নামে মামলা থাকে, তবে চাকরি হবে না। এমনকী অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর নিয়োগের ক্ষেত্রেও অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর পদে দশ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা, ন্যূনতম পাঁচটি প্রকাশনা থাকা বাধ্যতামূলক।
জানা গিয়েছে, অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে প্রথমে ২০১৯ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তবে এরপর এই নিয়োগ প্রক্রিয়া কয়েকবার বাতিল হয়ে যায়। এরপর আবার ২০২৪ সালে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নিয়োগনীতি পরিবর্তন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। যদিও এরপর অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের জন্যে ৭৫২ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তবে এক অদৃশ্য কারণে আবেদনকারীদের ঠিকানা গোপন রাখা হয়। যা ভূ-ভারতে ব্যতিক্রম ঘটনা। এমনকী কেন ২০১৯ সালে আবেদনকারী প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হলো না।। নিয়োগ প্রক্রিয়ায়, এ নিয়েও নীরব বিশ্ববিদ্যালয়। উল্টো অভিযোগ নিয়োগ প্রক্রিয়ার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে।অভিযোগ, অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং অন্যান্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাতারাতি নিয়োগনীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপে, প্রভাবে, প্রশাসনিক চাপে ও হুমকিতে বাধ্য হয়ে নিয়োগনীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হন খোদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার নিয়োগের যোগ্যতা কমিয়ে স্নাতক করা হয়েছে। এমনকী আবেদনের বয়সসীমা চল্লিশ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। যাতে নেট এবং পিএইচডি উত্তীর্ণরা এই পদের জন্য আবেদন করতে না পারে। একইভাবে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর নিয়োগের ক্ষেত্রে দশ বছরের অভিজ্ঞতা, পাঁচটি প্রকাশনার বিষয়টি গায়েব করা হয়েছে। আর এই সবগুলির বিষয়ে অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গিয়েছে। এদিকে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপিকারা জানান শিক্ষা, নিয়োগ, প্রশাসনিক দুর্নীতি রোধে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই বিক্ষোভে শামিল হবেন। যাতে রাজ্যের ছাত্রছাত্রী, বেকার, পিএইচডি স্কলার তাদের অধিকার ফিরে পান।