আইসিইউ স্বল্পতা, বিভাগে পরিকাঠামো মেডিসিন সংকটে দুর্ভোগ!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-শতবর্ষের বেশি প্রাচীন রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভিএম নাম পরিবর্তনে আইজিএম হাসপাতালের চিকিৎসা পরিকাঠামোর সংকটে দিনের পর দিন রোগীর যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ কেবল বাড়ছেই। তারপরও রাজ্য সরকার ও তার স্বাস্থ্য দপ্তর আইজিএমের চিকিৎসা পরিকাঠামোর সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের দিকে নজর নেই বলে অভিযোগ।হাসপাতালে ২০০৬ সালে মেডিসিন বিভাগ চালু করার পর ১৮ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসা পরিকাঠামোর কোনও সম্প্রসারণ করা হয়নি। ২০০৬ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের সময় যে ধরনের চিকিৎসা পরিকাঠামোর উপর মেডিসিন বিভাগ চালু করা হয় সেই পরিকাঠামোর আর কোনও উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়নি।২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি জোট সরকার রাজ্যে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। বিস্ময়কর ও পরিতাপের ব্যাপার হলো আইজিএম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ক্ষেত্রে বিজেপি জোট সরকার গত ৭ বছরেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি। এমনই অভিযোগ রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের। ২০০৬ সালে হাসপাতালে ৯০ শয্যার মেডিসিন বিভাগ চালু করা হয়।কিন্তু রোগীর চাপ দিনের পর দিন অস্বাভাবিক বাড়লেও মেডিসিন বিভাগের কোনও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে না।পুরুষ রোগীর জন্য ৪৫টি শয্যা ও মহিলা রোগীর জন্য ৪৫টি শয্যা থাকলেও স্বাস্থ্য দপ্তর শয্যা বৃদ্ধি করে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা পরিকাঠামো সম্প্রসারণ করছে না।রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে খুব ভালো সুবিধা থাকায় রোগীরা আইজিএম হাসপাতালেই চিকিৎসার জন্য চলে আসেন বা চিকিৎসার জন্য তার আত্মীয়রা নিয়ে আসেন আইজিএমে।কিন্তু রোগীর চাপ থাকায় মেডিসিন বিভাগে শয্যা পেতে সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা। মেডিসিন বিভাগের তরফে ফ্লোরে একটি কম্বল পেতে রোগীকে রাখা হচ্ছে। তারপরও মেডিসিন বিভাগের রোগীর চাহিদা মতো শয্যা বৃদ্ধি ও পরিকাঠামো সম্প্রসারণ কেন করা হচ্ছে না তা নিয়ে শুধু রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনই নয়, হাসপাতালের চিকিৎসকরাও সেই প্রশ্ন তুলেছেন। ২০০৫ সালে জিবিকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল করার পর স্বাস্থ্য দপ্তর আইজিএমকে স্টেট লেভেল রেফারেন্স হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তুলে। সেই কারণে ২০০৬ সালে নতুন কিছু চিকিৎসা বিভাগ চালু করে আইজিএমে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো আইজিএম স্টেট সিভিল রেফারেল হাসপাতাল করা হলেও এখন সেই ধরনের চিকিৎসা পরিকাঠামোর সংকট চলছে বলে রোগী ও চিকিৎসক মহল মনে করছেন। কিন্তু এই বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। গোটা রাজ্য থেকে হাসপাতালে রেফারেল রোগী আসছে। ফলে রোগীর চাপ ও রোগীর ভিড় আইজিএমে অস্বাভাবিক। গুরুতর অসুস্থ, সঙ্কটাপন্ন ও মুমূর্ষু রোগী চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসছেন। ২০০৬ সালে মেডিসিন বিভাগ চালুর পর ২০১৭ সালে হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট চালু করা হয়। ১০ শয্যার আইসিইউর মধ্যে মাত্র দুই শয্যার মধ্যে ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা রয়েছে। ২০১৭ সালে ১০ শয্যার আইসিইউ চালু করার পর গত ৮ বছরেও বর্তমান রাজ্য সরকার ও তার স্বাস্থ্য দপ্তর আইসিইউর একটি শয্যাও বাড়াতে পারেনি। অথচ সঙ্কটাপন্ন ও মুমূর্ষু রোগীর জন্য আইসিইউর চিকিৎসা পরিষেবা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু মেডিসিন বিভাগ নয়, হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগ থেকেও সঙ্কটাপন্ন রোগীর আইসিইউর চিকিৎসা পরিষেবার জন্য চিকিৎসক লিখে দিলেও শয্যার স্বল্পতায় ও শয্যা সংকটের কারণে প্রায়ই আইসিইউ পাচ্ছেন না রোগীরা। শুধু ১০টি শয্যা থাকায় রোগীর চাপে আইসিইউতে প্রায়ই শয্যা পাচ্ছে না রোগীরা। শয্যা খালি না থাকায় তৎক্ষণাৎ ও প্রয়োজনীয় সময়ে আইসিইউর চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা অনেক সময় আরও সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়রা এই অভিযোগ তুলছেন। আইজিএমে আইসিইউর শয্যা না খালি থাকায় কোনও কোনও সময় জিবিতে রোগী পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জিবিতে ও রোগীর চাপে আইসিইউর শয্যা পাওয়া কোনও কোনও সময় দুষ্কর ও কঠিন ব্যাপার হয়ে পড়ে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে তার পরিবারের ও নিকট আত্মীয়কে খেজুর বাগানের কাছে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আইসিইউতে রাখছেন। তাতে বেসরকারী হাসপাতালের মোটা অংকের চিকিৎসা বিল মিটিয়ে দিতে গিয়ে আরও চরম দুর্ভোগে পড়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তারপরও আইজিএমের আইসিইউর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি না করায় স্বাস্থ্য দপ্তরের ভূমিকায় ক্ষোভ বাড়ছে। আইসিইউর ভেন্টিলেটের-এর শয্যা সংখ্যাও মাত্র দুটি থাকায় সেই গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার সুবিধাও বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের দাবি রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তর যেন খুব দ্রুত সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করে। আইসিইউর শয্যা সংখ্যা ও ভেন্টিলেটরের সুবিধা বৃদ্ধি করার ও দাবি তুলেছেন ক্ষুব্ধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে।নার্স, জিডিএরও সংকট রয়েছে। চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সেইসব সংকট দ্রুত দূর করারও দাবি উঠেছে।

Dainik Digital

Recent Posts

ডিজিটাল ঘৃণা!!

বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োতে দেখা গেছিল, চট্টগ্রামে বা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে কেউ একটি…

18 hours ago

নারিকেলকুঞ্জে ত্রিপুরা ট্যুরিজম প্রোমো ফেস্ট ২৪’র উদ্বোধন!

অনলাইন প্রতিনিধি :-৩ ডিসেম্বর বিকেলে ধলাই জেলার গন্ডাতুইসা মহকুমার নারিকেলকুঞ্জে ত্রিপুরা ট্যুরিজম প্রোমো ফেস্ট ২০২৪'র…

19 hours ago

এডিসির উন্নয়নে দেশের সরকার আমাদের সাথে একমত : প্রদ্যোত!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেএডিসির মান উন্নয়নে সরাসরি অর্থ প্রদানের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের…

19 hours ago

মিডডে মিলের অন্তর্জলি দিয়ে স্কুলের ভেতরে চলছে শ্রাদ্ধের রান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়ার গাফুলিয়া দাস পাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই স্কুলেই মঙ্গলবার সকাল…

2 days ago

জাতীয় পুরষ্কারে ভূষিত “দৈনিক সংবাদ “

অনলাইন প্রতিনিধি :-" INDIAN CHANGEMAKERS AWARD 2024 " শীর্ষক জাতীয় পুরষ্কারে ভূষিত হলো দেশের উত্তর…

2 days ago

নয়া দিল্লিতে ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল

অনলাইন প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল মঙ্গলবারনয়া দিল্লিতে সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিক…

2 days ago