আকাশছোঁয়া সবজি থেকে মাছ দামে রেকর্ড কাঁচা মরিচের।
অনলাইন প্রতিনিধি || রাজ্যে রেকর্ড করেছে কাঁচা মরিচ। রবিবার রাজধানী সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে স্থানীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকা কেজি। বহিঃরাজ্য থেকে আসা কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি। পক্ষকাল ধরে ধীরে ধীরে দাম বৃদ্ধি পেতে পেতে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে রবিবার পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকা কেজি। মহারাজগঞ্জ বাজার ও বটতলা বাজারের পাইকারি সবজি বিক্রেতাদের দাবি সম্প্রতি বাজারে স্থানীয় কাঁচা মরিচ কার্যত আসছেই না। বহিঃরাজ্যেও কাঁচা মরিচের দাম বেশি। বেশি দামে বহিঃরাজ্য থেকে নিয়ে আসা কাঁচা মরিচই এখন রাজ্যবাসীর চাহিদা মেটাচ্ছে। স্থানীয় উৎপাদিত মরিচের আমদানি না বাড়লেও
বহিঃরাজ্যে দাম না কমলে সহসা বাজার কাঁচা মরিচের দাম কমবে না বলে জানান পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা। এদিকে, কাঁচা মরিচের পাশাপাশি বাজারে আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজিও। ঢ্যাঁড়শের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা থেকে ১০০, টাকা কেজি। বরবটির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি। পটলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুনের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি। স্কোয়াসের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি। গাজরের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি। কাঁচা পেঁপের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি। মিষ্টি কুমড়োর দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি। কাঁচা কলা (আনাজি) চারটি ৩০ টাকা। লাউয়ের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। চাল কুমড়োর জালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। ছড়া কচু (মুখী) বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। শশা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি। আদার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজি। ঝিঙার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি। উচ্ছে ও করলার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি। শাক জাতীয় সবজি বাজারে পাওয়াই যাচ্ছে না। সবজির পাশাপাশি বাজারে দাম বেড়েছে মাছেরও। স্থানীয় জ্যান্ত মাছের মধ্যে এক কেজি ওজনের বেশি আকারের রুই-কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা কেজি। পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আমদানি হওয়া বড় আকারের কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি। রুই মাছ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি। স্থানীয় জ্যান্ত ট্যাঙরা মাছ বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা কেজি। পাবদা ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি। ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে (আকার অনুযায়ী) ৮০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা কেজি। বোয়াল মাছ ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা কেজি।তাছাড়াও বাজারে দাম বেড়েই চলছে চাল, মশলা সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের। সবজি থেকে মাছ সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে পড়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের।এদিকে, শাস্তিরবাজার থেকে সংবাদ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দক্ষিণ জিলা সহ গোটা রাজ্যে চার পাঁচ সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচ বা আদার দাম অর্ধেক বা তারও কম দামে বিক্রি হয়েছে। হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০-৫০০ টাকা হয়ে যাওয়ায় বিপাকে সাধারণ মানুষ। কেন ডবল দাম বৃদ্ধি? চাষি ও সবজি বিক্রেতারা জানান উৎপাদন ও জোগান হ্রাস পেয়েছে তাই দাম স্বাভাবিক থাকছে না। বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচ সহ অনেক সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। অবিরাম বৃষ্টির ফলে নতুন চারা লাগানো যাচ্ছে না। যার ফলশ্রুতিতে হ্রাস পেয়েছে জোগান। অতীতে দেখা গেছে এ পারে কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পেলে ওপার থেকে কাঁচা মরিচ আসত। এব ওপারেও কাঁচা মরিচ সংকট। দাম বেড়েছে অনেক। চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করেছে বাংলাদেশ।সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, রাজ্যে প্রচুর আদা উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও দাম বৃদ্ধির কারণ আদার মজুত নেই। ব্যাপক হারে আদা রপ্তানি হয়েছে পড়শি দেশে। ফলে স্থানীয় মানুষের পকেট খালি করে দিচ্ছে আদা। রাবার বাগানের বাড়বাড়ন্তে পাহাড়ে আদা চাষ কমেছে। ত্রিপুরায় স্থানীয় আদা ভালো প্রজাতির ও উন্নত গুণগত মানের হওয়ায় পড়শি দেশে ও বহিঃরাজ্যে প্রচুর চাহিদা। অথচ নতুন নতুন এলাকায় আদা চাষ সম্প্রসারণ করে উৎপাদন বৃদ্ধির তেমন জোর দেওয়া হচ্ছে না।
এবার গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম খুব একটা পতন ঘটেনি। অন্য বছরের তুলনায় কাঁকরোল, বেগুন, পটল ইত্যাদির সর্বনিম্ন দাম ছিল প্রায় ডবল।গত কয়দিনের বৃষ্টিতে দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃতি থেকে বাঁচার উপায় সংশ্লিষ্ট আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষ খুব একটা সম্প্রসারণ হয়নি রাজ্যে।