আখের ছোবড়া দিয়ে ‘মিনি’ দুর্গাতেও ফুটে উঠল নারী নির্যাতনের কাহিনি!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন’ প্রবাদটিকে সঙ্গী করে প্রতিবছরই দুর্গাপুজোর আগে এক অভিনব দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেন বাঁকুড়ার মেয়ে তথা গৃহবধূ অর্পিতা সরকার।নারীদের ওপর অসুররূপী অত্যাচারের প্রতিবাদে তাদের শাস্তি প্রার্থনা করে তিনি এবারেও দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন। এবারের দুর্গা প্রতিমা তৈরির উপকরণ আখের ছোবড়া। সেই আখের ছোবড়া দিয়ে মা দুর্গা বানিয়ে তাক লাগালেন বাঁকুড়ার এই গৃহবধূ।
কোনো সাধারণ মূর্তি নয়। বাঁকুড়ার গৃহবধূর হাতের তৈরি এই দুর্গা মূর্তিতে রয়েছে রয়েছে এক গল্প।প্রায় একমাস সময় লেগেছে আখের ছিবড়ে দিয়ে মা দুর্গাকে ফুটিয়ে তুলতে। বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি ভকতপাড়ার বাসিন্দা অর্পিতা সরকার ঘরের কাজ সামলে প্রতিদিন রাত জেগে একটু একটু করে মূর্তি তৈরি করেছেন।
এই মূর্তিতে মা দুর্গার শরীর ২ ভাগে বিভক্ত।ডানদিকের অংশে মা দুর্গা দুর্গতিনাশিনীকে বোঝাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে মায়ের রুদ্র মূর্তি যেখানে তিনি দমন মহিষাসুরকে করছেন।
মা দুর্গার বাঁদিকে তৈরি করা হয়েছে এক নির্যাতিতা রমনীকে।যার চোখে মুখে ফুটে উঠেছে নির্যাতনের ছাপ।প্রতীকী প্রতিবাদ স্বরূপে বাঁ ভাগে রয়েছে ছুরি, হাতকড়া ও ফাঁসির দড়ি। বাঁদিকের বাকি মঞ্চ জুড়ে মানুষরূপী অসুরদের হাতছানি তুলে ধরা হয়েছে। পুরোটাই তৈরি হয়েছে আখের ছোবড়া দিয়ে।
জাতীয় আর্ট কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী অর্পিতা শিল্পকর্ম করতে সিদ্ধহস্ত। বিভিন্ন ধরনের অব্যবহারযোগ্য জিনিস দিয়েই তিনি নতুন নতুন মূর্তি তৈরি করে থাকেন।প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর আগে তিনি তাক লাগানো মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করেন।এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
তবে সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে তার শিল্পকর্মের মধ্যে দিয়ে নারী নিরাপত্তা ও নারী নির্যাতন,অপরাধীদের শাস্তির দাবি ফুটে উঠল। অর্পিতা জানান, ‘প্রত্যেক নারীর মধ্যেই মা বাস করছেন।তাই নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা -খুবই গুরুত্বপূর্ণ।একদিকে মায়ের হ পুজো করা হচ্ছে অন্যদিকে মহিলারা নির্যাতিত হচ্ছেন।এ মেনে নেওয়া যায় ই না। ছোটো থেকেই আমার শিল্পকর্ম করার ইচ্ছে ছিল। হাতে-কলমে করে শিল্পকর্ম শিখিনি।নিজের ইচ্ছায় একটু
করে মাইক্রো আর্ট থেকে শুরু করে আবস্ট্র্যাক্ট আর্টের প্রতি নজর দিই।খবরের কাগজের মণ্ড তৈরি করে ডোকরার মা দুর্গা বানিয়েছিলাম।টেরাকোটার ছোট্ট মা দুর্গা।’