মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
আগরতলায় চলন্ত ট্রেনের এসি কামরায় আগুন, আতঙ্ক
অনলাইন প্রতিনিধি :- তিনদিনের মাথায় আবারও আগুন ধরলো চলন্ত ট্রেনে। আবারও এই ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরা তথা আগরতলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী যাত্রীট্রেনে। দুদিন আগে উত্তর পূর্ব-সীমান্ত রেলের লামডিঙ বিভাগের লামডিঙ জংশন স্টেশনে চলন্ত ট্রেনের চাকায় আগুন ধরে যায়। আগরতলামুখী ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস ট্রেনে উল্লেখিত অঘটন ঘটেছে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার, ২৭ জুলাই এমন ঘটনা ঘটেছে আগরতলার যোগেন্দ্রনগর রেল স্টেশনের কাছে। এর আগে গত এক মাসের কাছাকাছি সময়ে উত্তর পূর্ব
সীমান্ত রেল এলাকায় চলাচল করা আরও দুটি যাত্রীট্রেন বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। প্রাপ্ত খবর আনুসারে আগরতলা-শিলচর- আগরতলার মধ্যে চলাচল করা এক্সপ্রেস ট্রেন শনিবার বিকাল চারটা নাগাদ জিরানীয়া স্টেশন অতিক্রম করে যোগেন্দ্রনগর স্টেশনের কাছে আসে। তখনই আচমকা ট্রেনের বাতানুকূল কোচে আগুন ধরে যায়। বি ১ কোচের মধ্যে প্রথমে ধোঁয়া সহ আগুনের ফুলকি দেখা যায়। একই ঘটনা ঘটেছে বাতানুকূল স্লিপার কোচের পাশাপাশি বাতানুকুল চেয়ারকার কোচের মধ্যে। ঘটনা ঘিরে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ততক্ষণে ট্রেনটি জিরানীয়া স্টেশনে চলে আসে। খবর যায় ট্রেনের বাতানুকূল কোচের ভারপ্রাপ্ত কর্মী তথা এসি অ্যাটেনডেন্টের কাছে। তার তৎপরতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যা মিটে যায়। নিভে যায় আগুন। তাতে অবশ্য যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক কমেনি। জানা গেছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটজনিত কারণে এই অঘটন ঘটেছে। এই ঘটনা রাতের দিকে ঘটলেও আরও বড় বিপদ হতে পারতো বলে নিয়মিত রেলের যাত্রী সহ রেলের সঙ্গে যুক্ত অনেকের অভিমত।
এদিকে ত্রিপুরা তথা আগরতলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী যাত্রীট্রেনের একের পর এক বিভিন্ন দুর্ঘটনার ফলে যাত্রীদের মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই রেলপথে যাত্রা করার আগে নতুন করে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন বলে খবর। কারণ গত প্রায় এক মাসের মধ্যে আগরতলা স্টেশনের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী অন্তত তিনটি যাত্রীট্রেন দুর্ঘটনায় পড়েছে। এর মধ্যে আগরতলা- শিয়ালদহ-আগরতলার মধ্যে চলা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার বলি হতে হয়েছে ১০ জন যাত্রীকে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪১ জন। ১৮ জুলাই সীমান্ত রেলের ডিব্রুগড় ও পাঞ্জাবের চন্ডীগড়ের মধ্যে চলাচল করা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়েছে। তাতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। ১৭ জুন সকালের দিকে সীমান্ত রেল এলাকার কাটিহার বিভাগের আওতাধীন পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির রাঙাপানির কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে আগরতলা থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘা। ১৮ জুলাই উত্তরপ্রদেশে রাজধানী শহর লখনৌ থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে গোন্ডা জেল মতিগঞ্জ চন্ডীগড়- ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়ে ৪জনের মৃত্যু সহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০জন। এরপর ২৪ জুলাই দুপুর দুটো নাগাদ দুর্ঘটনায় পড়েছে ত্রিপুরার রাজধানী শহর আগরতলা এবং পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে চলাচল করা ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস। লামডিঙ জংশন স্টেশনের অদূরে পাখরখলা স্টেশনের কাছে ট্রেনের চাকায় আগুন ধরে যায়। ঘটনা ঘিরে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে লামডিও জংশন স্টেশনের প্রায় দেড় কিলোমিটার কাছে এলে ট্রেনটির চাকায় লাগা আগুন নেভানো হয়। আসলে দীর্ঘ সময় ধরে চলার ফলে ট্রেনের চাকার রেলপথের সঙ্গে ঘর্ষণ চালায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান রেলের সঙ্গে যুক্ত অনেকের। তাদের বক্তব্য এটা দীর্ঘসময় ঘরে চললেও আরও বড় বিপদ হতে পারতো। ত্রিপুরাসুন্দরীর দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের রাজ্যের মধ্যে চলাচল করা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়েছে। তাতে আতঙ্কের মাত্রা ছাড়িয়ে যাবার উপক্রম হয়। কেননা একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা জমা হয়ে গেছে নিজের অগোচরেই। ১৫৬৬৪ শিলচর-আগরতলা এক্সপ্রেস ট্রেন অবশ্য দুর্ঘটনার পর প্রায় সময় মতো আগরতলা স্টেশনে চলে আসে। ট্রেনটির সামান্য কিছু সংস্কারের পর ফিরে গেছে ধর্মনগরের উদ্দেশে। একের পর এক এভাবে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে রেলের যাত্রী সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে-র সঙ্গে। তিনি এ বিষয়ে বিশদ কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে দাবি করেন সুরক্ষার সঙ্গে কোনও ধরনের আপোশ করা হয় না বলে।