আগরতলা-গুয়াহাটি বন্দে ভারত শীঘ্রই।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগরতলা-গুয়াহাটি-আগরতলার মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। এই মন্তব্য করেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং বিভাগের প্রধান, ডি আর এস সমীর লোহানি। শ্রী লোহানি দৈনিক সংবাদের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় প্রতিবেদককে এ কথা বলেন। সীমান্ত রেলের লামডিং বিভাগের প্রধান জানান, এর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলে গেছে। আগরতলা-গুয়াহাটি-আগরতলার মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচলের জন্য সম্মতি পাওয়া গেছে দেশের রেল বোর্ডের তরফে। এখন লামডিং থেকে সাক্রম পর্যন্ত ভায়া বদরপুর জংশন স্টেশন রেল পথে বৈদ্যুতিকরণের কাজ চলছে। আগরতলা-সাক্রম রেল পথে বৈদ্যুতিকরণের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এই কাজ শেষ হয়েছে বদরপুর জংশন স্টেশন থেকে ধর্মনগর হয়ে আগরতলা পর্যন্ত। এরপর প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের উত্তর দিতে মুচকি হেসে সমীর লোহানি মন্তব্য করেন রেলের নানা প্রসঙ্গে প্রতিবেদক যথেষ্ট ওয়াকিবহাল বলে। তিনি স্বীকার করেন এখনও আসামের দক্ষিণাংশের বদরপুর জংশন স্টেশনের তিনটি স্টেশন পরে অবস্থিত চন্দ্রনাথপুর থেকে মাইবং স্টেশন পর্যন্ত রেল পথে বৈদ্যুতিকরণ হয়নি বলে। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন এই অংশেও বৈদ্যুতিকরণে কাজ চলছে জোরকদমে। তিনি আশ্বাস দেন যে জুন মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে। সাব্রুম থেকে আগরতলা ও বদরপুর জংশন স্টেশন হয়ে লামডি জংশন স্টেশন থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত এরপরই শুরু হবে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে ট্রেন চলাচল। তার আগে আনুষঙ্গিক কিছু কাজ শেষ করতে হবে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রেলের সুরক্ষা কমিশনারের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। প্রক্রিয়া ও প্রকৌশলগত এই সব সম্মতি পাওয়ার পর আন কোনও অন্তরায় থাকবে না। সেই দিক থেকে আসন্ন দুর্গাপুজোর আগে আগরতলা গুয়াহাটি-আগরতলার মধ্যে শুরু হয়ে যাবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল এ নিয়ে অবশ্য লামডিংয়ের ডিআরএস সরাসরি কোনও ধরনের মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, যতোটা দ্রুত সম্ভব আগরতলা-গুয়াহাটি-আগরতলা মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে
শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী আগরতলা-সাক্রম রেল পথে বৈদ্যুতিকরণের কাজ পর্যবেক্ষণ বিশেষ ট্রেনে রাজ্যে আসেন তিনি। সকাল আটটা নাগাদ বিশেষ পর্যবেক্ষণ ট্রেনে আগরতলা স্টেশনে আসার পর স্টেশনের পরিকাঠামোগত নানা বিষয় খতিয়ে দেখেন। আগরতলা স্টেশনে পর্যবেক্ষণ শেষে ট্রলি নিয়ে ছুটে যান বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন নিশ্চিন্তপুর স্টেশনে। সেখান থেকে ফিরে এসে বেল এগারোটার পর আগরতলা থেকে যাত্রা করেন সাব্রুম স্টেশনের উদ্দেশে। যাওয়ার পথে পর্যবেক্ষণ করেন বিশালগড়, বিশ্রামগঞ্জ, উদয়পুর, শান্তিরবাজার, বিলোনীয়া জোলাইবাড়ি সহ অন্যান্য স্টেশন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেশনে বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, প্যানেল ইত্যাদির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন তিনি। ফিরতি পথে সন্ধ্য ৫.৪০ মিনিটে সাব্রুম থেকে যাত্রা করেন আগরতলার উদ্দেশে। মাঝখানে বিশ্রামগঞ্জ স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের জন্য প্রায় ১৫ মিনিটের বিরতি দিতে হয়েছে পর্যবেক্ষণ ট্রেনটিকে। ট্রেনে তখন সওয়ার ডিআরএম লামডিং সমীর লোহানি সহ উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের বিদ্যুৎ বিষয়ক প্রধান মুখ্য বাস্তুকার সহ লামডিং বিভাগের সহকারী প্রধান, এডিআরএম সহ এক দঙ্গল আধিকারিক। সব মিলিয়ে পর্যবেক্ষণ ট্রেনে সওয়ার হয়ে তারা যাত্রা শেষ করেন প্রায় দেড় ঘণ্টায়
সাব্রুম-আগরতলা রেলপথের ১১৪ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেন প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার গতিতে। আগরতলা স্টেশনে পৌঁছানোর পরে লামডিংয়ের ডিআরএম সমীর লোহানির সঙ্গে একান্তে কথা হয় প্রতিবেদকের স্বল্প সময়ের আলাপচারিতায় তিনি দাবি করেন বর্তমানে রেলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ নানা কাজ চলছে। এর জন্য অর্থের যোগান রয়েছে পর্যাপ্ত। তিনি বলেন, চন্দ্রনাথপুর থেকে মাইবং পর্যন্ত বৈদ্যুতিকরণের কাজে কোনও খামতি নেই। তবে পাহাড়ি রেলপথ হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় থাকা কৃত্রিমা সুড়ঙ্গগুলিতে বৈদ্যুতিকরণের কাজ করতে গিয়ে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে বিশেষ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দশ নম্বর সুড়ঙ্গটি।এই সুড়ঙ্গে বৈদ্যুতিকরণের সম্মতি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে খবর।তাছাড়া পাহাড়ি রেলপথে গড় গতি প্রতি প্রাণায় এও কিলোমিটারের আশেপাশে।শ্রী লোহানি অবশ্য প্রতিবেদকের কাছে এসব তথ্য শোনার পর বলেন সবই তার জানা রয়েছে। সব সমস্যা অতিক্রমের প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। তাতে দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করেন শ্রী লোহানি। সব বাধা অপসারণ করে জুন মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ডিআরএম লামডিং জানান আগরতলা-সাব্রুম রেলপথের সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে ট্রেন চলাচল করতে এর গতিতে তেমন বদল হবে না। তবে ট্রেন টেনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি জোর মিলবে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে। তার কথায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের জন্য এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে কবে থেকে দ্রুতগামী ট্রেনের চলাচল শুরু হবে তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। বলেন এর সময় সূচি স্থির হবে পরে।