আগরতলা সহ রাজ্যজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ!!

 আগরতলা সহ রাজ্যজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বঙ্গোপসাগরীয় নিম্নচাপ মিধিলির দাপটে নাকাল হয়ে পড়েছে রাজ্যের জনজীবন।বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ পরিবাহী ও সরবরাহ ব্যবস্থা।রাজ্যজুড়ে মাত্রাছাড়া দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে রাজ্যবাসীকে। শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হয় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। দিন যত গড়িয়েছে ততই অবস্থা কাহিল হতে থাকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যারাত থেকে শুরু হওয়া ঝিরঝিরে বর্ষণের দাপট বাড়ে রাতের দিকে। শুক্রবার সকাল হতে না হতেই শুরু হয় প্রবল বর্ষণ।কোথাও কোথাও চলে ঝড়ো হাওয়া।

রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা সহ সন্নিহিত অংশে শুক্রবার দুপুর গড়াতেই বইতে থাকে ঝড়ো হাওয়া।সন্ধ্যার দিকে এর দাপট বাড়ে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বৈদ্যুতিক গোলযোগ।শুক্রবার সকাল থেকেই আগরতলা ও আশপাশ এলাকায় বিদ্যুৎ চপলতা চলতে থাকে।একই অবস্থা চলছে আগরতলা শহরের কাছের মহকুমা জিরানীয়ার বিভিন্ন অংশে। মহকুমার জিরানীয়া নগর পঞ্চায়েত,রাণীরবাজার পুর পরিষদ এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় বেহাল হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।শুক্রবার সকাল থেকেই বিদ্যুতের দেখা নেই রাজ্যের দক্ষিণের প্রান্তিক মহকুমা সাব্রুমের বিস্তীর্ণ অংশে। একই অবস্থা দক্ষিণ জেলা সদর বিলোনীয়া মহকুমার নানা অংশে।হাল সবচেয়ে খারাপ রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা ও সন্নিহিত অংশের। শুক্রবার রাত নয়টায় সংবাদ লেখার সময়ে প্রায় পুরো আগরতলা শহর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে।শহরের দক্ষিণ দিকের আমতলি, হাপানিয়া, নিম্বার্ক, সিদ্ধি আশ্রম, কাঞ্চনপল্লী ও আগরতলা রেল স্টেশন এলাকা সহ বাধারঘাট, ডুকলি, মিলনচক্র, অরুন্ধতীনগর, বড়দোয়ালী, ভট্টপুকুর,পশ্চিম ও পূর্ব প্রতাপগড় পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে।দক্ষিণ পূর্বাংশের আড়ালিয়া, যোগেন্দ্রেনগর, বনকুমারী, পূর্বাংশের কলেজটিলা, চন্দ্রপুর, পূর্ব শিবনগর, ধলেশ্বর, মধ্য পূর্বাংশের বনমালীপুর, শিবনগর, উত্তরাংশের বড়জলা, উত্তর পূর্বাংশের ইন্দ্রনগর সহ শহরের মূল এলাকা হিসেবে পরিচিত বটতলা, মহারাজগঞ্জ বাজার, মধ্যপাড়া,কৃষ্ণনগর, রামনগর, মোটরস্ট্যাণ্ড, শাস্তিপাড়া, খোসবাসান, মাস্টারপাড়া, মেলারমাঠ, জয়নগর, আর এম এস চৌমুহনী, পোস্ট অফিস চৌমুহনী, লেক চৌমুহনী ইত্যাদি এলাকা শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে পুরোপুরি অন্ধকারে ডুবে আছে।দেখা নেই বিদ্যুতের।

ভরসা করতে হয়েছে হ্যারিক্যান, মোমবাতি, আপৎকালীন বৈদ্যুতিক বাতি চার্জ লাইট, ইনভার্টার ইত্যাদির উপর। শুক্রবার রাতে তো দুর, শনিবার সকালেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম।এ নিয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথও সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিদ্যুৎ ভোক্তাদের সহায়তা প্রার্থনা করেন।আগরতলা শহর ও সন্নিহিত অংশে বিদ্যুৎ গোলযোগের মূলে রয়েছে পরিবাহী ব্যবস্থায় গোলযোগ। আগরতলা শহরে অদূরে থাকা রাজ্য বিদ্যুৎ পরিবহণের প্রধান কেন্দ্র সূর্যমণিনগরে বিপত্তি দেখা দিয়েছে বলে খবর।সূর্যমণিনগর ১৩২ কিলোভোল্ট বিদ্যুৎ পরিবাহী স্টেশন থেকে শহরের ৭৯টিলাস্থিত গ্রিডে ৬৬ কিলোভোল্ট বিদ্যুৎ পরিবহণের জন্য মাও তারের উপর বাঁশ ভেঙে পড়েছে। ফলে পুরো শহরের বিদ্যুৎ জোগান পড়েছে মুখ থুবড়ে। সন্ধ্যারাত পর্যন্ত একাধিক এলাকায় ভেঙে পড়া এই বাঁশ কাটা সম্ভব হয়নি বলে জানা যায়। এর উপর কাঁঠালতলি, আমতলি সহ বহু এলাকায় ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। ছিঁড়েছে তার। বিদ্যুৎ পরিবাহী ও সরবরাহকারী ব্যবস্থা কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে বলে খবর।বেশ কিছু ক্ষেত্রে বহু পুরনো বৈদ্যুতিক খুঁটি গেছে ভেঙে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের মাঠ পর্যায়ের প্রকৌশলী তথা আধিকারিক ও কর্মীরা কাজে নেমে পড়েছেন।দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করেই তারা সমস্যা নিরসনে তৎপর রয়েছেন।তাদের তৎপরতার পরও দ্রুত অবস্থা আয়ত্তে আনা সম্ভব হওয়ার আশা নেই।এক্ষেত্রে লোকবলের অভাব বড় কারণ বলে জানা গেছে।প্রাপ্ত খবর, স্থানীয় ঠিকাদারদের বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া থাকায় তাদের আপৎকালীন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেভাবে কাজে লাগানো যায়নি।

পরিস্থিতি নিয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথও কার্যত হতাশা প্রকাশ করেন।তিনি শনিবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেন।বিদ্যুতের অভাবে পানীয় জল সরবরাহ থেকে শুরু করে মোবাইল চার্জ দেওয়ার মতো বিদ্যুৎনির্ভর বহু কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না মানুষের।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.