আগামী বছর চন্দ্র অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলা নভোশ্চর ক্রিস্টিনা কোচ

 আগামী বছর চন্দ্র অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলা নভোশ্চর ক্রিস্টিনা কোচ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বিশ্বের প্রথম মহিলা হিসাবে চাঁদে পা রাখার কৃতিত্ব বসতে চলেছে ক্রিস্টিনা কোচের নামের পাশে। নীল আর্মস্ট্রং,বাজ অলড্রিনের চাঁদে পা রাখার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতেই নাসা জানিয়েছিল, এ বার কোনও মহিলার পা পড়বে চাঁদে। এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র পুরুষ মহাকাশচারীরাই চাঁদের কক্ষপথে এবং পৃষ্ঠে গিয়েছেন। নতুন মিশনটি চাঁদের রাজ্যে কোচের সঙ্গে যাবেন মহাকাশচারী জেরেমি হ্যানসেন, ভিক্টর গ্লোভার এবং রিড ওয়াইজম্যান। ক্রিস্টিনার সঙ্গেই ইতিহাস গড়তে চলেছেন ভিক্টর গ্লোভার। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে চাঁদে যাবেন পাইলট ভিক্টর। মিশন স্পেশ্যালিস্ট-টু হিসাবে অভিযানে থাকবেন কানাডার জেরেমি হানসেন। কানাডা সেনার কর্নেল জেরেমির এটাই প্রথম মহাকাশ অভিযান। চতুর্থজন মিশন কমান্ডার রেড ওয়াইজম্যান। ইতিমধ্যেই মহাকাশে ১৬৫ দিন কাটিয়ে আসার অভিজ্ঞতা ওয়াইজম্যানের ঝুলিতেই। তবে চার মহাকাশচারীর মধ্য সব থেকে অভিজ্ঞ হলেন ক্রিস্টিনা কোচ। ২০১৩ সালে নাসায় যোগদান করেন কোচ এবং নাসার পরপর তিনবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে বা আইএসএসে ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেছিলেন।নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা চলাকালীন তিনি ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পদার্থবিদ্যায় বিজ্ঞানের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করেছেন। মহাকাশচারী হওয়ার আগে, কোচ মহাকাশ বিজ্ঞান যন্ত্রের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। তার কর্মজীবন শুরুহয়েছিল নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার বা জিএসএফসি’র একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে। কর্মজীবনের একেবারে শুরুতে বেশ কয়েকটি মহাকাশ মিশনে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রগুলির মেরামতির দায়িত্ব ছিল তার।
২০১৯ সালে সয়জ এমএস-১২
মহাকাশযানে বাইকোনুর কসমোড্রোম থেকে প্রথমবার তাকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। ২০২৪ সালের শেষের
দিকে কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের উদ্দেশে রওনা দেবেন কোচ সহ তিন মহাকাশচারীরা।নাসার ওরিয়ন ক্যাপসুলে মহাকাশে পৌঁছানোর পর ওই ক্যাপসুল মহাকাশচারীদের নিয়ে মহাকাশে যাবে। এর আগে ফাঁকা ক্যাপসুল মহাকাশে পাঠিয়ে একবার মহড়া দিয়েছে নাসা।ওই চার মহাকাশচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে তিনি জানান, এই মহাকাশচারীরা আমেরিকা, কানাডা-সহ পুরো বিশ্বের পরবর্তী প্রজন্মকে উৎসাহিত করবেন।
গত ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘদিনের মহাকাশ অভিযান শেষ করে পৃথিবীতে ফেরেন কোচ। আড়াই বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিলেন তিনি। ভেঙে দিলেন পেগি উইটসন-এর রেকর্ড। একটানা ৩২৮দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন কোচ। এর আগে পেগি ২৮৯ দিন মহাকাশে একটানা ছিলেন। মহিলাদের মধ্যে কোচ একটানা সব থেকে বেশি দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। তবে একটানা সব থেকে বেশি দিন মহাকাশে কাটানোর রেকর্ড এখন রয়েছে স্কট কেলির, তার রেকর্ড ৩৪০ দিনের। সারা জীবনে সবক’টি মহাকাশ অভিযানের মিলিত সময় ধরলে কোচের স্থান ছয় মার্কিনীর পর। এছাড়াও গত বছর অক্টোবরে আরও একটি রেকর্ড গড়েছিলেন কোচ। সেখানে স্পেস ওয়াকে অংশ নেওয়া মহাকাশচারীদের দলটির সব সদস্যই ছিলেন মহিলা। ক্রিস্টিনও ছিলেন সেই দলে। ৩২৮ দিনে তিনি মোট ছ’টি স্পেস ওয়াকে অংশ নেন তিনি। এবার চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেবেন তিনি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.