আচমকা বাতিল কৃষি অফিসার নিয়োগ, বেকার মহলে তীব্র ক্ষোভ।
অনলাইন প্রতিনিধি || রাজ্য কৃষি দপ্তরের হস্তক্ষেপে বাতিল হলো টিপিএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া। ফলে কৃষি এবং উদ্যানে স্নাতক বেকারের সরকারী চাকরির রাস্তাও বন্ধ।তবে কোন্ ক্ষমতাবলে ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরিচালিত কৃষি অফিসার পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপথে বাতিল করে দিল রাজ্য কৃষি দপ্তর— এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।এমনকী এই বিষয়টি ফাঁস হতেই মহাকরণে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। কারণ রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথম সরাসরি টিপিএসসির কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কলকাঠি নেড়েছে রাজ্য সরকারের কোনও দপ্তর। যদিও ইতিমধ্যে এই কেলেঙ্কারিকে ধামাচাপা দিতে টিপিএসসিকে দিয়েও কৃষি অফিসার পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রাজ্য মহাকরণে কৃষি দপ্তরের চাপে এগ্রিকালচার অফিসার পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপথে বাতিল করে দিয়েছে টিপিএসসি। ফলে রাজ্যের হাজারো বেকার যুবক যুবতী বিপাকে পড়ে গিয়েছেন।কারণ প্রায় সাত বছর বাদে কৃষি অফিসার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাই রাজ্যের হাজারো মেধাবান যুবক যুবতী সরকারী চাকরির জন্য উৎসাহিত ছিলেন।তবে বিজ্ঞাপন দিয়ে আবারও বেকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হলো বলে অভিযোগ।জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ৬০টি পদে কৃষি অফিসার নিয়োগের জন্য ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল রাজ্য সরকার যদিও বর্তমানে কৃষি অফিসার পদের প্রায় পর ১৭৭টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে।কিন্তু বেকারদরদি সরকার নিয়োগ
করেনি।তবে নির্বাচনের আগে ৬০ জনের নিয়োগের নির্দেশ দেখে রাজ্যব্যাপী কৃষি ও উদ্যানে স্নাতক বেকাররা টিপিএসসির মাধ্যমে আবেদন করেন।৬০টি কৃষি অফিসার পদের মধ্যে সাধারণ ৪০টি, তপশিলি জাতি ৮টি এবং তপশিলি উপজাতিদের জন্য ১২টি পদ সংরক্ষিত ছিল। যদিও কৃষি ও উদ্যানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি উত্তীর্ণ হাজারো যুবক যুবতী রাজপথে।অভিযোগ মাত্র ১২টি আসন উপজাতি সংরক্ষিত কেন এ নিয়ে টিপিএসসি রাজ্য দপ্তরেও বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বেকাররা।ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন সূত্রে খবর এই ৬০টি এগ্রিকালচার অফিসার পদের জন্য প্রায় ২৫৭৭ জুন বেকার আবেদন করেছিলেন। এরমধ্যে বহিঃরাজ্যের বেকারও ছিলেন।সরকারী চাকরির আবেদন করার জন্য ৩৫০ টাকা এবং ২৫০ টাকা করে রাজ্য সরকারের কোষাগারেও দিল বেকাররা।এমনকী লিখিত পরীক্ষার দিনক্ষণ স্থির ছিল ১৮ জুন। তবে হঠাৎ করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝখানে বাতিল করে দিল সরকার। টিপিএসসির এক আধিকারিক জানান, কৃষি দপ্তর ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ,কৃষি অফিসার পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখতে হবে। তবে কেন এই সিদ্ধান্ত?এ প্রশ্নের উত্তর নেই।যদিও মহাকরণের এক কৃষি আধিকারিকের দাবি শূন্যপদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে নাকি পরবর্তী সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে। যদিও এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের বহু বেকার আবার বয়স-উত্তীর্ণ বেকারে পরিণত হবে।এমনকি চাকরিজীবনেও তাদের ক্ষতি হবে এক প্রকার নিশ্চিত।কৃষি ও উদ্যানে স্নাতক বেকারের অভিযোগ নির্বাচনের আগে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে বেকারের সমর্থন আদায় হলো। নির্বাচন পার হয়ে আবারও সরকারে বসে বেকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।ফলে বেকারদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।শুধু তাই নয়, সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে পিআরটিসি নিয়ম বাধ্যতামূলক রাজ্য নেই। ফলে বহিঃরাজ্যের বেকাররা রাজ্যে এসে চাকরির সুযোগ নিচ্ছে।এমনকী কৃষি অফিসার পদেও অনেকে আবেদন করেছেন।তাই অধিকাংশ পদে রাজ্যের বেকারদের বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এই কারণেও টিপিএসসির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ রাজ্যের বেকাররা।যদিও টিপিএসসির এক আধিকারিক জানান,কমিশনের শুধুমাত্র পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের দায়িত্ব রয়েছে।পরীক্ষা বাতিল সহ পিআরটিসির নিয়ম সহ অন্যান্য নির্দেশিকা ও চাকরি প্রদানের দায়িত্ব শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের। অভিযোগ বর্তমানে ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের হস্তক্ষেপে কমিশনের আধিকারিক সহ সকল স্তরের কর্মচারীদের মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের। ফলে ছয় মাসের নিয়োগ প্রক্রিয়া দুই বছরেও শেষ হচ্ছে না। অন্যদিকে অধিকাংশ নিয়োগ প্রক্রিয়া যাচ্ছে আদালতে।এরপরও সরকারের হেলদোল নেই।