আচরণবিধি লাগু!!

 আচরণবিধি লাগু!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশে আদনি আচরণবিধি বলবত হয়ে গেছে। মডেল কোড অব কন্ডাক্ট বা আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি শনিবার বেলা তিনটায় ভোট ঘোষণার সাথে সাথে কার্যকরী হয়েছে এবং যতদিন না পর্যন্ত দেশে গোটা নির্বাচনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে, অর্থাৎ নির্বাচনের ফল প্রকাশ পর্যন্ত এই বিধি বলবত থাকবে। নির্বাচনি আচরণবিধি জারি হওয়ার সাথে সাথে সমস্ত রাজনৈতিক দল, প্রার্থী এবং প্রশাসনকে এই নির্বাচনি বিধি মেনে চলতে হবে। এমসিসি অর্থাৎ আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি হচ্ছে সেই ব্যবস্থা, যা অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জারি করা হয়। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আরোপিত আরোপিত এই আদর্শ নির্বাচনি ব্যবস্থা লঙ্ঘনের ঘটনায় বা বিধি না মানার কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের হাতে। আজ নির্বাচনি আচরণবিধি জারি হওয়ায় গোটা দেশে আগামী অন্তত ৮২ দিন অত্যাবশ্যকীয় কাজ ছাড়া প্রশাসনিক কাজ স্থবির হয়ে যাবে। দেশে ১৯৬০ সালে প্রথমবার কেরালা বিধানসভার নির্বাচনে এমসিসি লাগু হয় এবং তা সফল হতেই ১৯৬২ সাল থেকে লোকসভার নির্বাচনগুলো সহ দেশের প্রধান প্রধান নির্বাচনগুলোতে আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি কার্যকরী রয়েছে এবং সময়ের সাথে সাযুজ্য রেখে এর পরিধি ও কঠোরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, ভোট ঘোষণার পর সরকার কোনও প্রকল্প ঘোষণা, উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবে না, যা ভোটারদের প্রভাবিত করে থাকে। প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি জণগণের উদ্দেশে ঘোষণা করতে পারবে না। সরকারী সমস্ত ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া, পদোন্নতি ও বদলি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। মন্ত্রী বা বিধায়করা তাদের তহবিল থেকে কোনও অর্থ মঞ্জুর করতে পারবেন না। কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের জন্য সরকারী গাড়ি, প্রশাসন যন্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। আজ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সাথে সাথে দেশের নির্বাচন কমিশন এই মডেল কোড অব কন্ডাক্ট সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করে দিয়েছে। নির্বাচনি আচরণবিধিতে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া তথা সামাজিক প্রচার মাধ্যমকেও যুক্ত করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের উপরও নির্বাচন কমিশনের কড়া নজরদারি থাকবে। ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম, এক্স হ্যাণ্ডেল সর্বত্রই এই নজরদারি কার্যকরী হবে।
মডেল কোড অব কন্ডাক্ট অনুযায়ী, ভোটের প্রচারে এমন কোনও মন্তব্য বা আচরণ করা যাবে না, যা বিভিন্ন সম্প্রদায়ে অশান্তি ছড়ায়। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রার্থীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করা যাবে না। কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর বিরুদ্ধেও ভিত্তিহীন অভিযোগ আদর্শ নির্বাচন আচরণবিধির বিরোধী। ধর্মীয় জানকে প্রচারের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। ভোটের জন্য ধর্মীয় সুড়সুড়ি জাতপাতের বিরুদ্ধেও সুড়সুড়ি দেওয়া যাবে না। ভোটারদের বিভ্রান্ত করে ভুয়ো তথ্য প্রচার করা যাবে না। ভোটের প্রচারে কোনও নারীর সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট হয় এমন কিছু করা যাবে না। রুচিহীন আপত্তিকর কোনও পোস্ট সামাজিক জাধ্যমে করা যাবে না। খবরের মোড়কে কোনও বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না কিংবা ভুয়ো বিজ্ঞাপন দিয়েও ভোটের প্রচার আদর্শ নির্বাচনি আচরণের বিরোধী। নির্বাচনি প্রচার ও জনসভার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনা খরচে সরকারী জায়গা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে এবং সব রাজনৈতিক দলের জন্য একই নীতি কার্যকরী হবে। ভোটের কাজে কোনও রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীকে সরকারী ডাকবাংলো, অফিস, বিশ্রামাগার ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। সরকারী প্রচার মাধ্যমে কোনও দলের পক্তপাতভুক্ত হয়ে খবর পরিবেশন করা যাবে না।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.