এক দশকে ভারতের দরিদ্র সংখ্যা কমেছে ২৭ কোটি।সম্প্রতি এ প্রকাশ করা বিশ্বব্যাঙ্কের এক প্রতিবেদন এমনটাই দাবি করেছে।প্রতিবেদন বলছে, গত এক দশকে অর্থাৎ গত ১০ বছরে ভারতে ২৭ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছেন।বিশ্বব্যাঙ্কের এই রিপোর্টকে যদি নির্ণায়ক হিসাবে ধরা হয় তাহলে, চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে এটা সরকারের একটা ঐতিহাসিক সাফল্য।বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, ভারতে ২০১১-১২ সালে যেখানে চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ২৭.১ শতাংশ, সেটা গত ২০২২-২৩ সালে ৫.৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
আসলে বিশ্বব্যাঙ্ক বা আন্তর্জাতিক কোনো অর্থনৈতিক সংগঠন যে ধরনেরই সমীক্ষা প্রকাশ করুক না কেন,একটা বিষয় সবার আগে বুঝতে হবে তা হলো, দারিদ্র বিষয়টিই হলো আপেক্ষিক। বড়লোকের দেশে যাকে দরিদ্র বলে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, গরিবের দেশে সেই দরিদ্র ব্যক্তিটির পরিচয় হলো নিম্ন মধ্যবিত্ত।দেখা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাঙ্ক যখন কোন্ রিপোর্ট প্রকাশ করার জন্য গবেষণা চালায়, তখন বিশ্বব্যাঙ্ক সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই কোন আয়ে কোন দেশে দারিদ্রসীমা টানা হবে সেটা নির্দিষ্ট করে তার উপরেই পরিসংখ্যান চূড়ান্ত করে থাকে। আর এটা নির্ণয় করা হয় এই দেশটির মুদ্রার সঙ্গে ডলারের বিনিময় মূল্য যত, সেটাকে বের করে তারপর সেই ব্যক্তির ক্রয়ক্ষমতা যত সেটাই হবে সেই দেশে দারিদ্রসীমার নির্ণায়ক।সাম্প্রতিক বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১১-১২ সালে ভারতের পাঁচটি বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে, মহারাষ্ট্র, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ আর মধ্যপ্রদেশ এখানেই ছিল দেশের মোট দরিদ্র্যের ৬৫ শতাংশের বাস।আর ২০২২-২৩ সালে দেখা যাচ্ছে এই রাজ্যগুলোতেই দরিদ্র দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে। এতদিন দেশে দারিদ্র্যের সংজ্ঞা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দৈনিক যে ব্যক্তির খরচের ক্ষমতার সীমা ১৮৫ টাকা ছিল (দৈনিক ২.১৫ ডলার) হতো ভিত্তিতেই দারিদ্র্য চিহ্নিত করা হতো। কিন্তু বিশ্বব্যাঙ্ক সর্বশেষ ২০২১ সালে দারিদ্র্যের সংজ্ঞা নিরুপনের ক্ষেত্রে খরচের ক্ষমতার সীমা বাড়িয়ে দৈনিক ২৫৭ টাকা অর্থাৎ প্রায় ৩ ডলার নির্দিষ্ট করেছে এবং এই আর্থিক ভিত্তিকে ধরেই ভারতের দারিদ্রের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই নিরিখে ২০১১-১২ সালে ভারতের চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল সেখানে সাড়ে ৩৪ কোটি, তা ২০২২-২৩ সালে নেমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে সাত কোটি। পাশাপাশি রিপোর্টে আরেকটি কথাও বলা হয়েছে যে, ২০১১-১২ সালে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দারিদ্র ও ৫৭.৭ শতাংশ থেকে হ্রাস
পেয়ে ২৩.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।একটা কথা এখানে সবার আগে স্পষ্ট করে দেওয়া প্রয়োজন যে, দারিদ্র হলো এমন একটা অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তির তার মৌলিক চাহিদা পূরণ করার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ বা আয় থাকে না। দারিদ্র্যের মধ্যে সামাজিক, আর্থিক কিংবা রাজনৈতিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত থাকতেই পারে, কিন্তু চরম দারিদ্র বলতে আমরা সেটাই বুঝবো যেখানে অন্ন, বস্ত্র এবং বাসস্থানের মতো মৌলিক ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায় সম্পদের তথা উপায়ের সম্পূর্ণ অভাব থাকে। সুতরাং দারিদ্র্যের যেহেতু অনেক ধরনের সংজ্ঞা রয়েছে এবং তা নিয়ে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে এই নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণে দ্বিমতও রয়েছে, তাই কোনো পরিসংখ্যান বা গবেষণাপত্রের রিপোর্টের ভিত্তিতে দুই বাহু উর্ধ্বে তুলে উল্লম্ফন করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের দেশেও আয়ভিত্তিক দারিদ্র, ভোগভিত্তিক দারিদ্র এবং এর সংখ্যা ও পরিসংখ্যান আলাদা। সুতরাং দারিদ্রতা নিয়ে জটিল এবং বিরোধপূর্ণ চিত্রের যেহেতু কোনো সীমা-পরিসীমা নেই তাই কোনো পরিসংখ্যান বা তথ্য কোনোভাবেই কোন সমাজ বা রাষ্ট্রের সামাজিক বা আর্থিক অবস্থার চূড়ান্ত চিত্র হতে পারে না। যদিও বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, এক দশক আগে গ্রামীণ ভারতে দারিদ্ররেখার নীচে যেখানে ছিল ১৮.৪ শতাংশ মানুষ, তা এখন ২.৮ শতাংশে নেমেছে। আর শহরে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষের হার ১০.৭ শতাংশ থেকে এখন ১.১ শতাংশে এসে ঠেকেছে। তথ্য ও পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবতা কতটা রয়েছে, কিংবা দেশে আদৌ দরিদ্র আছে কি নেই তা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের বাকযুদ্ধ অতীতে ছিল। আগামীতেও থাকবে।কিন্তু দেশের বেকারত্ব, কর্মসংস্থানহীনতা ভুলে প্রতিটি নির্বাচনে ধর্মই যখন আধুনিক ভারতের প্রচারের প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় তখন বুঝতে হবে আসলে বিশ্বব্যাঙ্কের এই সম্পর্কিত রিপোর্টও কার্যত কোনো প্রভাবই বিস্তার করে না সমাজজীবনে। এ হয়তো শুধু শাসকের আত্মতৃপ্তির রসদ।
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের কলকাতায় বাড়ি বিপর্যয়। বৌ-বাজারে ভেঙে পড়ল বাড়ির একাংশ শ্রমিকের উপর। জানা যায়…
অনলাইন প্রতিনিধি :-নতুন করে আবার উত্তেজনা ছড়াল মণিপুরে। শনিবার বিকেলের পর থেকেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-শনিবার আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়লেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তড়িঘড়ি তাঁকে ইন্দিরা গান্ধী…
অনলাইন প্রতিনিধি :-শুক্রবার রাতভর ইউক্রেনের একাধিক শহরে ৪০০-র বেশি ড্রোন এবং অন্তত ৪০ মিসাইলের মাধ্যমে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের একবার জুন মাসে রাজ্য সফরে আসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । সূত্রের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-কর্নাটকের শিবমোগা জেলার সমাজকর্মী এএম বেঙ্কটেশ ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলির বিরুদ্ধে অভিযোগ…