আদানি তুফান!
গৌতম আদানিকে লইয়া বিতর্ক কেবল বাড়িয়াই যাইতেছে।মোদির নামের সঙ্গে আদানির নাম ব্যবহার করিয়া বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার হইতে হইল কংগ্রেস নেতাকে।পরে সুপ্রিম কোর্ট রেহাই দিল।সরকার এবং দেশের শাসক দল হিন্ডেনবার্গের পর আদানিকে লইয়া বড়ই বেকায়দায় পড়িতেছে আবার আদানির কোম্পানিতে টাকা খাটাইয়া লোকসানের সম্মুখীন হইতেছে দেশীয় বিমা সংস্থা লাইফ ইনশিয়োরেন্স।এই সকল লোকসানের গ্যাঁড়াকল এড়াইয়া উঠা কোনও মতেই সম্ভব হইতেছে না সরকারের পক্ষে। ফলে আদানিকে লইয়া যাহাতে সংবাদমাধ্যমে কোনওরকম সংবাদ প্রকাশ না হয় সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারির চেষ্টা করে সরকার।কিন্তু এই ধরনের প্রচেষ্টায় আবার জল ঢালিল সুপ্রিম কোর্ট।জানাইয়া দিলো,গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালত এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারিবে না। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে জালিয়াতি ও কারচুপির মাধ্যমে বিশাল সম্পদ আহরণের অভিযোগ জানাইয়াছে হিন্ডেনবার্গ, তাহার প্রতিবেদন প্রকাশের পর আদানির সাম্রাজ্যে ধস নামিয়া যায়। সেই ধস কাটাইয়া ওঠা সম্ভব হয় নাই। বরং এই সপ্তাহে বিশাল লোকসানের সম্মুখীন হইয়াছে এলআইসি।আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কিনিয়া এই লোকসানের সম্মুখীন হইতে হইয়াছে।প্রসঙ্গত, আদানি যে কারচুপি করিতেছে এবং আদানি গোষ্ঠী শাসক দল এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহিত মিত্রতার কারণে অস্বাভাবিক ধন বৃদ্ধি করিতেছে এই কথা বিজেপি সরকারের প্রথম দিন হইতেই বলিয়া আসিতেছে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী সহ বিরোধী দলগুলি। রাজনৈতিক অঙ্গনের বাহিরেও এই লইয়া প্রথম হইতে চর্চা চলিতেছে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত কাহারো চৈতন্য উদয় হয় নাই, যতোদিন অবধি না হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ হইলো। বিরোধীরাও এইবার ময়দানে নামিয়া আদানির দুর্নীতির তদন্ত দাবি করলেন। সংসদের ভিতরে বাহিরে সমানতালে বিরোধীরা তাহাদের দাবির সপক্ষে আওয়াজ তুলিতে লাগিলেন আর হিন্ডেনবার্গের কথিত দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ হিসাবে সামনে আসিতে শুরু করিয়াছে।ঘটনা হইলো বিরোধীদের উত্থাপিত এই সকল অভিযোগের কোনও সদুত্তর দিতে পারিতেছে না সরকার পক্ষ। প্রধানমন্ত্রীও আজ অবধি সংসদে এই সকল প্রশ্নের কোনও জবাব দিলেন না।অপরদিকে,সুপ্রিম কোর্টে একের পর এক জনস্বার্থ মামলা হইতে থাকে।মামলাকারীদের অন্যতম আইনজীবী এম এল শর্মার আর্জি ছিল সুপ্রিম কোর্ট যতদিন পর্যন্ত না হিন্ডেনবার্গ লইয়া চূড়ান্ত রায় দিতেছে ততদিন পর্যন্ত সংবাদমাধ্যম, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ বন্ধ হউক। বিজেপির
আইনজীবীর এই জোরাজোরিতে প্রধান বিচারপতি বলেন,কোনও
যুক্তিগ্রাহ্য এবং গ্রহণযোগ্য পরামর্শ দিন।গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা যাইবে না।প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পি নরসিংহ ও বিচারপতি পর্দিওয়ালার এজলাস ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদন শুনিয়াছে। চারখানা মামলার শুনানি এবং রায় একসঙ্গে হইবে। এম এল শর্মার আর্জি হইলো, হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে তদন্ত হউক আর বিশাল তিওয়ারির আর্জি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ যেই সকল অভিযোগ আনিয়াছে সেই সকলের তদন্ত হউক।অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতিকে দিয়া তদন্তের নির্দেশ যেন কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়া হয় সেই জন্য নির্দেশ দেওয়া হউক, ইহাই তিওয়ারির মূল দাবি। আবার কংগ্রেস নেতা জয়া ঠাকুরের মামলায় দাবি করা হইয়াছে, কর্মরত কোনও বিচারপতির তত্ত্বাবধানে আদানির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হউক। মুকেশ কুমারের করা আরও এক মামলায় বলা হইয়াছে, সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়া মামলায় আদানির বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারচুপির তদন্ত করা হউক, ইহার তদারকি করুক সুপ্রিম কোর্টের কোনও প্রাক্তন বিচারপতি।