আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যার কারণে আপনার চাকরি কি অনিশ্চয়তার পথে।

 আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যার কারণে আপনার চাকরি কি অনিশ্চয়তার পথে।

Machine learning reaction and ai artificial intelligence.Chat bot software network.big data and block chain system.Neuralink with smart brain.generative art

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’ চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’ ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া, উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাত্বর। সেই কোন সময় বসে কবি লিখেছিলেন এই লেখা। এতদিন পরে কবির কথার সত্যতা বজায় রেখেই বলতে পারি আজ মানুষ মহাশূন্য থেকে গভীর সমুদ্র তলদেশ, চাঁদ, তারা সূর্য থেকে পাহাড়, পর্বতের শিখরদেশ এমন কোনও স্থান বাকি রাখেনি চষে বেড়াতে। প্রযুক্তি- মেধা-কর্ম দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বজয়ের পতাকাকে উর্ধ্বে তুলে ধরেছে।বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল যুগ।প্রযুক্তির কল্যাণ কাজে লাগিয়ে সমগ্র বিশ্বকে এখন হাতের মুঠোয় এনেছে মানুষ। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে গ্রাম থেকে শহর, শহর থেকে দেশ, দেশ থেকে বিশ্ব সংসারে। অর্থনীতি, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ সব কিছুতেই লেগেছে প্রযুক্তি নির্ভরতার ছোঁয়া। ঘরে বসেই চলছে অফিসের কাজ। ঘরে বসে বসেই হচ্ছে স্কুল-কলেজ, ভর্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ। চাল-ডাল- সব্জি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা-বেচা, অসুস্থ রোগীর চিকিৎসা, আদালতের বিচারকার্য সব কিছুই হয়ে পড়েছে আজ প্রযুক্তি নির্ভর। আর সাধারণ ভাবেই তাই উঠছে সেই প্রশ্ন, প্রযুক্তি নির্ভরতা কি কর্মহীনতার কারণ? মেশিন যদি মানুষের কাজ কমিয়ে দেয়, পাঁচজন কর্মীর কাজ একাই করে দেয় তবে কি কর্মহীন হয়ে পড়বে না সেই পাঁচজন মানুষ ?এই প্রশ্ন নিয়ে চলছে দুনিয়া জুড়ে বিতর্ক, আলোচনা।যুগ যুগ ধরে বিবর্তনের ফলে একবিংশ শতাব্দীতে এসে প্রকৃতিতে যে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, তার অন্যতম কারণ হল কম্পিউটার, মোবাইল, ফ্যাক্স, ইমেল, ইন্টারনেট, ফেসবুক, টুইটারসহ নানাবিধ ডিজিটাল ডিভাইসের আবিষ্কার। ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া প্রকৃতি যেন দিগ্‌ভ্রান্ত হয়ে পড়ছে।কর্মহীনতার ভয় : প্রযুক্তির এই বাড়বাড়ন্ত রূপ দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে এক বিশাল শ্রেণির মানুষ। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখতে বলব সেই মানুষদেরকে যে প্রযুক্তি কি কর্মহীন করেছে নাকি কর্মসংস্থানের বহু দিক মেলে ধরেছে বর্তমান প্রজন্মের সামনে? আজ কি কর্মজগৎ অনেক বেশি প্রসারিত নয়? যেমন ধরুন, আগে আমরা বিদ্যুৎ না থাকায় হ্যারিকেন ব্যবহার করতাম। কিন্তু বিদ্যুৎ আসায় হ্যারিকেন কারখানা আজ হল বন্ধ। কর্মহীন হয়ে পড়লেন বেশ কিছু মানুষ। শোরগোল না তুলে একটু ভেবে দেখুন তো হ্যারিকেন বন্ধ হয়ে লাইট আসায় সেই লাইট তৈরির কারখানা কি গড়ে উঠল না? সেখানে কি শ্রমিক নিয়োজিত হল না? আর একটি উদাহরণ বলি,কম্পিউটার আসার আগে আমাদের মধ্যে কেমন আলোড়ন উঠেছিলমনে আছে? ভয়ে আতঙ্কে কাটত বহু মানুষের জীবন। কাজ চলে যাওয়ার ভয়ে অনিদ্রায় দিন কাটাত মানুষ। কারণ, একটা মেশিন নাকি হাজার মানুষের কাজ করে দেবে। তাই হাজার মানুষ হবে কর্মহীন। আজ কম্পিউটার এসেছে। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সেই কম্পিউটার আজ জড়িয়ে গেছে। কম্পিউটার ছাড়া আমরা অচল। হাজার কর্মহীন নয় লক্ষ লক্ষ কর্মহীন আজ সেই কম্পিউটারে বসে কাজ জোগাড় করছে। অফিসে, বাড়িতে, যানবাহনে সমাজের এমন কোনও সেক্টর নেই যেখানে কম্পিউটার ছাড়া কাজ হয়। আবার দেখুন বর্তমানে হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক, মোবাইল এসে যাওয়ায় চিঠি, টেলিফোন ক্রমশ অচল হয়ে যাচ্ছে। কর্মহীন হচ্ছে পোস্টম্যানরা। কিন্তু ভেবে দেখুন তো, পোস্টম্যানের বদলে আজ বিভিন্ন ডাক বিভাগ যেমন কুরিয়ার- এর মতো বহু গড়ে উঠেছে। যেখানে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে বহুগুণ। শুধু জিনিসপত্র বা উপহার পার্সেল কেন আজ ঘরে ঘরে খাবার, জামা কাপড় পার্সেলও হচ্ছে বহুগুণে। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো ডিজিটাল কোম্পানিগুলোতে লাখ লাখ কর্মী। বহু খাবার ডেলিভারি কোম্পানি গড়ে উঠছে। কর্মসংস্থান বাড়ছে সেই সব ক্ষেত্রে। তাই প্রযুক্তি কর্মহীনতা ডেকে আনছে এমন ভাবনা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। প্রতিটি মুহূর্তে কর্মহীন হওয়ার ভয়ে কাটাবেন না। বরং সেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন উদ্যমে কাজে নামুন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে উদাহরণ রাখুন।
উন্নয়ন বা অবনতির প্রধান কারিগর মেধা ও প্রযুক্তি বিদ্যার সমন্বয় : তবে প্রযুক্তিগত বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে যেমন ভাল কিছু গড়ে তোলা যায় তেমনি এর কিছু মন্দ প্রভাবও থেকে যায়। আমরা বলতে পারি আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাবে কর্মের পরিধি বেড়েছে কর্মের বিস্তার হয়েছে কিন্তু কোন ধরনের কর্ম আপনি করবেন বা কখন কর্মে আপনি নিযুক্ত হবেন বা কোন খারাপ কর্মে কত মানুষকে আপনি নিয়োজিত করবেন তা পুরোটাই নির্ভর করে বর্তমান সময়ে আপনার জন্মকুণ্ডলীর দশা অন্তর দশার ওপর। শুভগ্রহ ভাল কাজে নিয়োজিত করে, অশুভ বা পীড়িত গ্রহ সর্বদা আপনাকে মানসিকভাবে প্ররোচিত করবে অশুভ কাজ করার জন্য। প্রযুক্তি বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে যেমন মানুষ প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারছে, আবার অশুভ পন্থায় অর্থাৎ অনৈতিক পন্থায় প্রচুর মানুষ অপরাধ জগতের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে। উদাহরণ হিসাবে আমি বলতে চাই একটি ছেলের কথা। যে ছোটবেলা থেকে অসম্ভব মেধাবী ছাত্র ছিল। এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সে। কলেজে পড়ার সময় তার বাবা-মা একদিন আমার কাছে এলেন। এবং তাদের বর্তমান
সমস্যার কথা শোনালেন। সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু তাদের সন্তান। তাদের মনে হচ্ছে তাদের সন্তান ঠিক নেই এখন, সে বিপথগামী হয়েছে। তার মেধাকে সে এখন অন্য পথে নিয়োগ করেছে। তার এতটা মেধা যে, সে বিবিধ ফেক ওয়েবসাইট খুলেছে, যার দ্বারা মানুষকে প্ররোচিত করে লাখ লাখ টাকা কামাচ্ছে। ধরুন, কারও কোন এজেন্সি ফ্রাঞ্চাইজি করাবে, এই বলে সে কোনও নামী কোম্পানির ফেক ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখান থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করছে এবং পারছেও সেই কাজ করতে। কারণ কোনও ব্যক্তির থেকে কীভাবে টাকাটা নিতে হবে এবং ফেক আইডি দ্বারা সে টাকাটা নিচ্ছে এবং পরবর্তীকালে সে তার ফোন আর ধরছে না, তাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে। এখানেও তারা এই সমস্ত কাজগুলি মাস্টারমাইন্ড-এর সাহায্যে করছে। যাদের মধ্যে অসাধারণ মেধা রয়েছে, বুদ্ধি রয়েছে, এইসব কাজ তারাই করতে পারে। আমি বুঝলাম সমস্যাটি। বুঝলাম মেধা, কর্মক্ষমতা একদিকে যেমন একজন মানুষকে ওপরে তুলছে তেমনি একজনকে অন্ধকারের দিকেও ঠেলে দিচ্ছে। এখন প্রশ্ন একজন মানুষের মধ্যে এই অপরাধ প্রবণতা কি একদিনেই জন্মে যায়? অবশ্যই না। লোভ, উচ্চাশার পরেও আর এক অশুভ শক্তি থাকে যা মানুষকে বিপথে চালিত করে। তা হল গ্রহ। গ্রহ একদিকে মানুষকে যেমন সুপথে চালায় তেমন গ্রহ পীড়িত থাকলে অসৎ পথেও চলে মানুষ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.