হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ক্রিকেটার তামিম!
আন্দোলনের নামে রাজ্যজুড়ে চরম নৈরাজ্য কায়েম, দুর্ভোগ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবিতে আন্দোলনকে ঘিরে গোটা রাজ্যজুড়ে অসহনীয় দুর্ভোগ এবং নৈরাজ্য কায়েম হয়েছে। গোটা দুইদিন ধরে গোটা রাজ্যকে স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে। আন্দোলনের নামে রাজপথে রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে। গতকাল রাতে বিশ্রামগঞ্জ দেওয়ান বাজার এলাকায় একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের একাধিক স্থানে রাস্তা অবরোধের ফলে শত শত পণ্যবাহী লড়ি থেকে শুরু করে ছোট-মাঝারি প্রচুর যানবাহন রাস্তায় আটকে থাকে গত দুইদিন ধরে। জনজীবন স্তব্ধ। সবথেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। সরকার ও প্রশাসন নিরম দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। এদিকে, শনিবার টিএসএফ-এর পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে সোমবার নতুন করে আন্দোলন ঘোষণা করা হয়েছে। তারা জানায়, সোমবার আগরতলা শহরে মিছিল এবং অবরোধ সংগঠিত করবে। সব থেকে উদ্বেগের ঘটনা হলো, এখন গোটা রাজ্যে বোর্ডের পরীক্ষা চলছে। এতে করে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা চরম বিপাকে পড়েছে। একই সাথে এখন চলছে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। প্রশ্ন হচ্ছে, এই সময়ে কি করে মিছিল বা রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে? এদিকে তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর আজ জানায়, টিএসএফ নাকি তিপ্রা মথার শাখা সংগঠন নয়। আবার টিএসএফ নেতৃত্ব দাবি করছে তারা তিপ্রা মথার শাখা সংগঠন। পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে জনমনে আরও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। অথচ তিনি নিজেও গতকাল রাজধানীর সার্কিট হাউসে আন্দোলনকারীদের সাথে গিয়ে রাস্তায় বসে তাদের উৎসাহ প্রদান করে এসেছেন। বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে প্রদ্যোত কিশোরের ভূমিকা নিয়েও। তার বিরুদ্ধে ত্রিপার্টি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি মুখে বলছেন এক রকম, কার্যক্ষেত্রে দেখ যাচ্ছে অন্যকিছু। শনিবার আমবাসা মথার এক যুবনেতা রীতিমতো হুমকি দিয়েছে। তার বক্তব্য, বুবাগ্রা অনুমতি দিলে আগামীকাল থেকে আমবাসায় অবরোধ করবে। তার উক্তি, তিনদিন গাড়ি বন্ধ করে রাখলে আগরতলাবাসীর প্যান্ট খুলে যাকে সব মিলিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে একটা নৈরাজ্য কায়েম করা হয়েছে শনিবারও কোনও দূরপাল্লার যাত্রীবাহ গাড়ি চলাচল করেনি। পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলও বন্ধ। প্রদ্যোত কিশোর একদিকে বলছে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে। অথচ সরাসরি অবরোধ আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা বলছেন না। একদিকে বলছেন টিএসএফ তিপ্রা মথার শাখা সংগঠন নয়, আবার নিজে স্বশরীরে হাজির হয়ে আন্দোলনকারীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। সব থেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, গত দুইদিন ধরে অরাজক পরিস্থিতি চলতে থাকলেও সরকার ও প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে।
এদিকে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে টিএসএফ নেতৃত্বকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের নি মুখে ল্যাজেগোবরে হতে হয়েছে। পুষ্পবন্ত প্যালেসে হোটেল করার প্রতিবাদ আন্দোলন থেকে শুরু করে রোমান হরফের আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য কায়েম করা, অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা, ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করা ইত্যাদি নানা ইস্যুতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। যদিও তারা সবকিছু অস্বীকার করে। অপরদিকে, টিএসএফ ডাকা বন্ধের দ্বিতীয় দিনেও নাকাল হতে হয় মানুষকে। শুক্রবার সকাল থেকে চলা জাতীয় সড়ক অবরোধে প্রচণ্ড দুর্ভোগের শিকার মানুষ। চম্পকনগর চন্দ্রসাধু পাড়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধের কারণে শত শত পণ্যবাহী গাড়ি রাস্তায় আটকে আছে। প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন বহু মানুষ। গাড়িতে থাকা প্রচুর টাকার শাকসবজি ফল মাছ নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ। বন্ধের প্রভাবে প্রচুর পরীক্ষার্থী বিপাকে পড়েছে। এ দিন জিরানীয়া মহকুমা এলাকার নানা এলাকায় বাজারহাট দোকান পাটও বন্ধ ছিল। ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী অংশের মানুষের রুটি রোজগার বন্ধ হয়ে পড়ে। এমনকী বড়মুড়া পাহাড় থেকে শাকসবজি সংগ্রহ করে যে সমস্ত জনজাতি অংশের মানুষ পরিবার প্রতিপালন করে থাকেন তারাও গত দুদিন যাবৎ রোজগারহীন হয়ে পড়ে। বিজেপির শরিক দল তিপ্রা মথার এই শরিক বিরোধী কাজে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শাসক দলে থেকে এ ধরনের পথ অবরোধ করে রাজ্যবাসীর সমস্যা তৈরি করার ঘটনায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিভিন্ন মহলে। ক’দিন বাদে বাদে যেভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ চলছে তাতে সরকারী ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। দুদিনের টানা বন্ধের জেরে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, যানবাহন শ্রমিক থেকে শুরু করে রোগী সহ বহু মানুষ দুর্ভোগের শিকার।