এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ফৌজদারি মামলায় মানহানির সর্বোচ্চ শাস্তি নাকি দুই বৎসরের জেল। রাহুল গান্ধীর দুই বৎসরের জেল ঘোষণা করিয়া নিম্ন আদালত তাহাকে উচ্চ আদালতে আবেদনের জন্য জামিন দিয়া দিয়াছে। উচ্চ আদালতে যাইবেন রাহুল। অনুমান করা হইতেছে উচ্চ আদালতে রাহুলের জেলের রায় খারিজ হইয়া যাইবে। তখন কী তাহাকে সাংসদ পদ ফিরাইয়া দেওয়া হইবে। দেশে আদালতগুলিতে লক্ষ লক্ষ মামলা ঝুলিয়া থাকে বৎসরের পর বৎসর। কিন্তু আদালত রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রে যে ক্ষিপ্রতায় রায় দিয়াছে তার হাজার গুণ ক্ষিপ্রতায় সংসদ রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল করিয়াছে। ইহাই রাজনীতি। আর রাজনীতি কেবল আমাদের সংসদের নিরপেক্ষতাকেই প্রশ্নচিহ্নের সম্মুখে দাঁড় করায় নাই, বিচার ব্যবস্থাকেও বরাবর প্রশ্নে প্রশ্নে কন্টকিত করিয়া রাখিতেছে।বিরোধী দলনেতা হইতে গেলে লোকসভায় বিরোধী দলের যে, সংখ্যা থাকিতে হয় সেই সংখ্যা কংগ্রেসের নাই। তাই সংসদে ঘোষিত বিরোধী দলনেতা নাই। তাহা সত্ত্বেও বিরোধী মুখ আছে। বিরোধী মুখ হিসাবে যতদিন যাইতেছে রাহুল গান্ধীর মুখ উজ্জ্বল হইতেছে। অনেক পথ হাঁটিয়া, অনেক ভালো ভালো কথা বলিয়া রাহুল গান্ধী পাপ্পু মিডিয়ার মুখে কুলুপ দিয়াছেন। তিনি সত্যিকারের বিরোধী মুখ হইয়া উঠিয়াছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেমন হইতে হয়। তিনি প্রশ্ন করিবেন। তাহার প্রশ্নের জবাব দিবে সরকার। তিনি প্রশ্ন করিবেন দেশ, দেশের মানুষ, উন্নয়ন, মানুষের অধিকার, মানবাধিকার লইয়া। কিন্তু তার প্রশ্ন যেহেতু পদবি লইয়া তাই কিছু মানুষ মর্মাহত হইয়াছেন।
আর এই মর্ম প্রবেশ করিয়াছে রাজনীতির মরমে।আমাদের দেশে আগে কী এইরকম নামেধামে পদবিতে কথা হয় নাই? বোফর্স লইয়া যখন দেশময় রাজীব গান্ধীকে চোর বলা হইল, তখন কোনও গান্ধী অপমানবোধ করিল না। সেইদিন যদি কেহ মৰ্মাহত হইয়া আদালতে মামলা করিত তাহা হইলে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ডিপি সিং লালকৃষ্ণ আদবানি,জ্যোতি বসু এক মঞ্চে হাতে হাত ধরিতে পারিত না এবং ভিপি সিং প্রধানমন্ত্রী হইতে পারিতেন না। আবার জরুরি অবস্থার পর সমাজবাদী, বামপন্থী, জনসংঘী সবাই এক সুরে স্লোগান তুলিয়াছিল, ইন্দিরা হটাও দেশ বাঁচাও। আজ কিন্তু কোনও পদবিকে হটাইয়া দেশ বাঁচাইবার পোস্টার লিখিলে পুলিশে ধরিতেছে, গ্রেপ্তার হইতে হইতেছে। তাহা হইলে আমাদের গণতন্ত্রের অভিমুখ কী বদলাইয়া যাইতেছে?গণতন্ত্র এবং উন্নয়ন সবসময়েই এক নিজ অভিমুখ লইয়া থাকে। সেই অভিমুখ অবাদ রাখিয়া পশ্চিমী নানা দেশ উন্নত গণতন্ত্র উপহার দিয়াছে বিশ্বকে। আমরা যে দেশে বসবাস করি, ভারত দেশে বিশ্বের সর্ববৃহৎ নির্বাচনি গণতন্ত্র রহিয়াছে। নির্বাচন মানে ২০২৪ সাল। এই যুদ্ধে কংগ্রেস একা যেকোনও পরিমাণে বিজেপির চাইতে পিছাইয় আছে। তথাপিও কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীই শাসকদলের সামনে প্রথম এবং শেষ বাধা। বিজেপিকে ২০২৪ সালে ক্ষমতা হইতে সরাইতে হইলে সকল বিরোধী দলের যে ঐক্য দরকার তাহা আজকের দিনের রাজনীতিতে সুদূর পরাহত মনে হয়য়। যা হোক, রাজনীতি তার নিজ ছন্দে, গতিতে চলিবে। কংগ্রেস কী পরিবারতান্ত্রিক গণতন্ত্রে চলিবে নাকি অন্য কিছু ভাবিবে,সে তাহাদের বিষয়। কংগ্রেসের সামনে এক্ষণে প্রধান কাজ হইল রাহুল গান্ধীর কারাবাস ঠেকানো। অবাক বিষয় হইল রাহুল গান্ধীকে সংসদ হইতে সেইদিন খারিজ করা হইল তাহার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাহাকে সাংসদের সরকারী আবাস ছাড়িতে বলা হয়।রাহুল গান্ধী এইবার কোথায় যাইবেন? দশ জনপদের সরকারী আবাস ছাড়া আর কোনও ঠিকানা তাহাদের নাই। নেহরুর পূর্বপুরুষেরা কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ হিসাবে কাশ্মীরের আদিবাসী। কিন্তু কাশ্মীরে তাহাদের ঘর-জমি নাই। এলাহাবাদে জওহরলাল নেহরুর বাবা মতিলাল নেহরু তাহাদের দুইখানা বাড়ি দেশকে দান করিয়া দেন। লখনৌর বাড়িতে
কংগ্রেসের অফিস চলিতেছে। দিল্লীতে যে সরকারী এক খণ্ড জমি ছিল তাতে ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একখানা ঘর তোলা হইলেও চৌধুরী চরণ সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে সেই বাড়িটি ভাঙিয়া দেওয়া হয়, বেআইনি চিহ্নিত করিয়া। ওই জমিতে আর গৃহনির্মাণ হয় নাই। ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে যে সরকারী আবাসে
থাকিতেন, তাহার হত্যার পর সেই বাড়িটি রাষ্ট্রীয় স্মারক হইয়া যায়।
তাই রাহুল গান্ধী সরকারী আবাস খোয়াইলে তার শেষ আশ্রয় সোনিয়া গান্ধী ১০ জনপদের বাড়িটি। অসুস্থতার কারণে সোনিয়া গান্ধী গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নাই। আবার রাহুল গান্ধীকেও আমেথি ছাড়িয়া কেরল যাইতে হইয়াছে। এই সময়ে সাংসদ পদ খোয়াইয়া রাহুল বলিতেছো, মানুষের জন্য কথা বলিয়া জেলে যাইতে হইলে তাহাতেও তার কোনও আপত্তি নাই। দেশবাসী নিশ্চয়ই দেখিতে চাহিবে না রাহুল গান্ধীর আবাস কোনও কারাগার।

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

23 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

23 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago