এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ফের রেল দুর্ঘটনা।এবার প্রাণ গেল দশ জনের।আহত পঞ্চাশ ফে জনে জনের উপর।ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।ফের প্রশ্নের মুখে রেলের যাত্রী সুরক্ষা।১৭ জুন সকালে পশ্চিমবঙ্গের ফাঁসি দেওয়া এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে আগরতলা-শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্গা এক্সপ্রেস। যাত্রীবাহী এই ট্রেনের পিছনে প্রবল বেগে ধাক্কা মারে একটি মালবাহী ট্রেন।ফলে যা হওয়ার তাই হলো।অকালে প্রাণ গেল দশ জনের। গুরুতর আহতদের মধ্যে আরও বেশ কয়েকজনের প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রেল দুর্ঘটনার পর বরাবর যা হয়ে আসছে, সোমবার একই ঘটনা, একই বিষয়ের রিপিট টেলিকাস্ট দেখা গেল। একপক্ষ নেমে গেলো রাজনীতির জলঘোলা করে ফায়দা তুলতে।আরেক পক্ষ ঘটনার দায় এড়িয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে জড়িয়ে পড়লো। বাস্তব হচ্ছে রেল দুর্ঘটনা কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না।প্রশ্ন হচ্ছে,আর কত রক্ত ঝরলে সরকার ও রেল কর্তৃপক্ষের হুঁশ ফিরবে? একের পর এক এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে অথচ কারও কোনও হেলদোল নেই।
গত বছর এই জুন মাসেই ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রায় তিনশ মানুষের প্রাণ গেছে।বহু মানুষ প্রাণে বাঁচলেও, সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন।সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনো টাটকা।এরই মধ্যে সোমবার আগরতলা থেকে কলকাতাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হলো দশ জনের। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরও একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল।রেল কর্মীর গাফিলতি এবং সিগন্যাল বিভ্রাটের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছিল। তারপরও রেলের হুঁশ ফিরল কই?এক বছরের মধ্যেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় কিন্তু একাধিক তত্ত্ব শোনা যাচ্ছে।কেউ বলছে যান্ত্রিক গোলযোগ,আবার কেউ বলছে সিগন্যাল বিভ্রাট। আবার কেউ কেউ বলছে রেল কর্মীদের গাফিলতির কারণেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনায় পড়েছে।আবার অনেকের দাবি, অতিরিক্ত পরিশ্রম, বিশেষ করে লোকো পাইলটদের একটানা ডিউটির কারণে দুর্ঘটনা।নিয়ম অনুযায়ী মালগাড়ির লোকো পাইলটরা একটানা আট থেকে দশ ঘন্টা পরিষেবা দিতে পারেন।অভিযোগ, তাদের দিয়ে একটানা ১৬ থেকে ১৭ ঘন্টা কাজ করানো হচ্ছে।এতে তাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ছে।তাদের মতে, হয় মালগাড়ির চালকের চোখে ঘুম লেগে গিয়েছিল।তাই তিনি সিগন্যালই দেখেননি। অথচ এই মালগাড়ির চালক, সহচালক দুইজনেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছেন।শুধু করমণ্ডল ও কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাই নয়। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে রেলের ট্র্যাক।গত চার দশকে একাধিক রেল দুর্ঘটনায় শত শত মানুষের প্রাণ গেছে। আহতের সংখ্যা অগনিত। প্রতিবার দুর্ঘটনার পরই একই কথা শোনা যায়। যে যখন সরকারে থাকে, তাদের মুখে একই কথা শোনা যায়। এরাই যখন বিরোধী দলে থাকেন, তখন তাদের মুখে আরেক সুর। যেমন সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা বাজপেয়ী জমানার প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠে শোনা গেল। তাঁর দাবি, তিনি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন সবই ঠিক ছিল।এখন রেল অনাথ হয়ে পড়েছে।রাজনীতির ব্যাপারী যারা, তাঁরা সব বিষয়ে রাজনীতি করবেন, এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, রেলে আর কত রক্ত ঝরবে?আর কবে নিশ্চিন্ত হয়ে মানুষ রেলে ভড়বে? যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে রেল কর্তাদের হুঁশ আর কবে ফিরবে?

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

19 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

20 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago