এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

এক সময় উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়ন শুধুমাত্র বাজেট, টেন্ডার, প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ইত্যাদির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। গোটা দেশেই উত্তর-পূর্ব ছিলো সব থেকে অবহেলিত, বঞ্চিত এবং পিছিয়ে থাকা অঞ্চল। দশকের পর দশক ধরে উপেক্ষিত হয়েছে উত্তর- পূর্বের রাজ্যগুলো। এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু সেই পরিস্থিতি দেরিতে হলেও পাল্টেছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের দূরদর্শী নীতির কারণে, এক সময়ে সব থেকে অবহেলিত উত্তর-পূর্ব আজ উন্নয়নের অগ্রাধিকারে সবার উপরে। পূর্বতন কেন্দ্রীয় সরকারের ‘লুক ইস্ট’ নীতির বদল হয়ে এখন সেটা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এখন সরকারের ভাবনা ‘অ্যাক্ট ফাস্ট ফর নর্থ ইস্ট’।এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যকে অষ্টলক্ষ্মী হিসাবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য সরকারকে আটটি স্তম্ভের উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে’। সেই আট স্তম্ভ কী কী, সেগুলিও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। উত্তর-পূর্বকে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের নয়, সাংস্কৃতিক উন্নয়নের কেন্দ্রে পরিণত করতে বদ্ধপরিকরের কথা জানিয়েছেন।শুধু তাই নয়, উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের করিডর গড়ে তোলার উপর জোর দিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন।আজ বলতে কোনও দ্বিধা নেই, দশকের পর দশক ধরে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব নিয়ে কোনও আগ্রহ ছিলো না, সেই উত্তর-পূর্ব এখন আগ্রহের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। গত সাত-আট বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে।


যে ভৌগোলিক অবস্থানকে আগে প্রতিবন্ধকতা, এবং সন্ত্রাসের আঁতুরঘর হিসাবে মনে করা হতো, এখন তা সামনে উঠে এসেছে উন্নয়নের বিরাট সম্ভাবনাময় দ্বার হিসাবে।আর এই সম্ভাবনায় দেশের প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরা সব থেকে বড় ভূমিকা রাখতে চলেছে। আর এই ভূমিকার পিছনে রয়েছে ত্রিপুরার ভৌগোলিক অবস্থান।সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো আগরতলায় আয়োজিত ভারত, জাপান এবং বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় সম্মেলনেও গুরুত্ব পেলো ত্রিপুরার এই স্ট্র্যাটেজিক অবস্থানের কথা। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোসি সুজুকি স্পষ্টভাবে বলেছেন, গোটা বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের গেটওয়ে হিসাবে উঠে আসতে পারে বাংলাদেশ। এর সূচনা পয়েন্ট হতে পারে ত্রিপুরা। গোটা অঞ্চলের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। উত্তর-পূর্ব নতুন শিল্প উপত্যকা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এমনটাই দাবি করেছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত।বলতে কোনও দ্বিধা নেই, সেই আশাতেই বুক বেঁধেছে ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত। গত সাত থেকে আট বছরে ত্রিপুরার সড়ক, রেল, বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। যোগাযোগের আরও একাধিক পরিকাঠামো গড়ে উঠছে। ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ এখন উদ্বৃত্ত। আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ধারণা করা হচ্ছে, এই বছরেই রেল পরিষেবা চালু হবে। সাব্রুমে ফেণী নদীর উপর নির্মিত মৈত্রী, সেতু আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চালু হবে। এমন ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। মৈত্রী, সেতু চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরার হাতের নাগালে। ত্রিপুরা দেশের তৃতীয় ইন্টারনেট গেটওয়ে। চালু হয়ে গেছে ৫-জি নেটওয়ার্ক। সব মিলিয়ে উন্নয়নের যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তা দ্রুত বাস্তবের মুখ দেখুক। এটাই রাজ্যবাসীর কাম্য।

Dainik Digital

Recent Posts

গয়নার ল্যাবে তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম রুবি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলায় চুনি, ইংরেজিতে রুবি।চুনির রং কতটা টকটকে লাল, তার উপর এই মানিকের দাম…

12 hours ago

মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে পুলিশ প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদারজুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো।…

12 hours ago

কাজের বাজারে মন্দা!!

কেন্দ্রে ১০০ দিন পূর্ণ করল তৃতীয় মোদি সরকার।যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে মোদি সরকার আখ্যা…

13 hours ago

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

2 days ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

2 days ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

3 days ago