আড়াইশো বছর ধরে ব্রিটিশ রাজ সৈন্যের পদে মোটা অঙ্কের বেতন পায় ছাগল
পকেটে বেতন ঢুকলে চাকরিজীবীদের মন ভালো হয়ে যায় এটাই স্বাভাবিক । এই চাকরিজীবী কারা , প্রশ্ন করলে নির্দ্বিধায় জবাব আসবে মানুষ । তবে যদি বলা হয় ছাগলও চাকরি করে বেতন বাগিয়ে নিচ্ছে , তাহলে চোখ কপালে উঠবেই । গ্রেট ব্রিটেনে এমন ঘটনাই ঘটে চলেছে প্রায় আড়াই শো বছর ধরে । সে দেশে বেতনভুক ছাগলটির নাম চতুর্থ শেনকিন । সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে পুরোনো ও অভিজ্ঞ রেজিমেন্ট হলো রয়্যাল ওয়েলশ । এই রেজিমেন্টের মাসকট একটি ছাগল । এ কারণে ১৭৭৫ সাল থেকে বাহিনীটিতে ছাগলের জন্যও একটি পদ রাখা হয়েছে । রেজিমেন্টের তৃতীয় ব্যাটালিয়নের সেই পদে এখনও রয়েছে ছাগল চতুর্থ শেনকিন ।রেজিমেন্টে ছাগলের জন্য পদ রাখার কারণ পরিষ্কার করেছে রয়্যাল ওয়েলশ মিউজিয়াম । তারা বলছে , আমেরিকার স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংকার হিলের লড়াইয়ের সময় একটি ছাগল দলছুট হয়েছিল । সেই ছাগলটিকে অনুসরণ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে যায় রয়্যাল ওয়েলশ রেজিমেন্টের একদল সৈন্য । এরপর থেকেই তারা সৌভাগ্যের আশায় নিজেদের কাছে ছাগল রাখে । রেজিমেন্টে শেনকিন যে পদে রয়েছে , সেটির নাম ‘ ফুসিলিয়ার ’ । সাধারণ সৈন্যদের মতোই ছাগলের যেমন পদোন্নতি হতে পারে , তেমনই হতে পারে পদের অবনতিও । যেমনটি হয়েছিল শেনকিনের পূর্বসূরি প্রথম উইলিয়াম ‘ বিলি ’ উইন্ডসরের ক্ষেত্রে । সেটিকে ল্যান্স করপোরাল পদ থেকে ফুসিলিয়ার পদে নামিয়ে আনা হয়েছিল । কারণ কারণ , রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্মদিনের উৎসবে কুচকাওয়াজের সময় এক ড্রামবাদককে গুঁতিয়ে দিয়েছিল ছাগলটি । এই ছাগলগুলো যে বেতন পায় , তা সাধারণত তাদের দেখভালেই খরচ করা হয় । বেতন থেকে একটি রেডিও এবং সোফার ব্যবস্থাও করা হয় । এ ছাড়া ছাগলটির জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় এক ব্যক্তিকে । তার কাজ ছাগলটিকে সাজিয়ে – গুছিয়ে রাখা , ব্যায়াম করানো , প্রশিক্ষণ দেওয়া ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত করা । বর্তমানে রয়্যাল ওয়েলশ রেজিমেন্টে থাকা ছাগল শেনকিনকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল প্রয়াত রানি এলিজাবেথের ছেলে তৃতীয় চার্লসকে রাজা ঘোষণার সময় অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে । ১৮৪৪ সালে প্রথম রাজকীয় ছাগল প্রথা চালু হয় রানি ভিক্টোরিয়া ( প্রথম ) -এর শাসনকালে । তবে ধারণা করা হয় , ১৭৭৫ সাল থেকেই গ্রেট ব্রিটেনের সেনা কুচকাওয়াজে প্রাণীদের রাখা হতো ।