আড়াই মাস ধরে উড়ানে বহি:রাজ্যে কার্গো যাচ্ছে না!
বন্ধ হয়ে থাকা আগরতলা থেকে বিমানে বহিঃরাজ্যে নিতে কার্গো বুকিং সুবিধা এখনও চালু হয়নি। একটানা গত আড়াই মাস ধরে আগরতলা থেকে বিমানে বুকিং কোনও মালপত্র, পার্সেল, ডাক, চিঠিপত্র, প্রেস ম্যাটার কিছুই যায়নি। সেই কারণে রাজ্যবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে ভারতীয় ডাক দপ্তর থেকে শুরু করে বেসরকারী ক্যুরিয়ার সার্ভিস যারা কার্গো বুকিং করে বিমানে বহিঃরাজ্যে পাঠায়। গত আড়াই মাসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিমান সংস্থাগুলিও। বুকিং কার্গো পাঠাতে না পারায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বিমান সংস্থাগুলিরও। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় ও সঙ্কটে পড়েছেন রাজ্যের মানুষে। কারণ বিমানে বুকিং করে কিছুই পাঠাতে পারছেন না। তবে বহিঃরাজ্য থেকে বিমানে বুকিং সব ধরনের কার্গোই আগরতলায় আসছে। শুধুমাত্র আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে বিমানে বহিঃরাজ্যে নিতে কোনও কার্গো বুকিং নেওয়া হচ্ছে না । কবে নাগাদ কার্গো বুকিং শুরু হবে তা নিয়ে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়ার আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরের প্রধান তথা অধিকর্তা কে সি মিনাকে প্রশ্ন করলে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। শুধু বলেন, কার্গোর জন্য নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন দিল্লী থেকে ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের (ডিজিসিএ) নতুন নির্মিত কার্গো ভবন চালু করার অনুমতি পেলেই কার্গো বুকিং নেওয়া শুরু হবে। কবে ডিজিসিএ থেকে অনুমতি মিলবে সেই বিষয়েও বিমানবন্দরের অধিকর্তা শ্রীমিনা কিছুই জানাতে পারেননি। শুধু বলেন, যে কোনও দিনই ডিজিসিএ থেকে এই অনুমতি আসতে পারে। শ্রী মিনার আশা খুব দ্রুত ডিজিসিএ থেকে অনুমতিপত্র মিলবে ও কার্গো বুকিং পুনরায় চালু করা হবে। এদিকে, প্রশ্ন উঠেছে গত আড়াই মাস ধরে বিমানে বুকিং কার্গো বন্ধ থাকার পরও এখনও বিমানবন্দর অধিকর্তা কে সি মিনা স্পষ্ট করে কেন জানাতে পারছেন না পুনরায় কার্গো বুকিং কবে থেকে চালু হবে। তিনি ডিজিসিএ-র উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে কার্গো বুকিংয়ে অনিশ্চয়তারই জানান দিলেন।অভিযোগ উঠেছে তিনি একজন বিমানবন্দরের প্রধানের দায়িত্বে থাকলেও কী করে দ্রুত কার্গো বুকিংয়ের জট অবসান করে বুকিং পরিষেবা চালু করা যায় সেই বিষয়ে কার্যকর কোনও ভূমিকা নিচ্ছেন না। শুধু বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়, নতুন কার্গো ভবনে কার্গো বুকিং চালু ও পরিষেবা দেওয়ার জন্য কর্মচারী দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইণ্ডিয়ার সহযোগী সংস্থা সিএলসিএস নতুন কার্গো ভবনে কার্গো বুকিং পরিষেবা দেবে। অথচ নতুন কার্গো ভবনে এই সংস্থার কোনও আধিকারিক ও কর্মচারীর দেখা নেই। ফলে ডিজিসিএ থেকে নতুন কার্গো ভবনে কার্গো বুকিং চালু করার অনুমতিপত্র যদি কোনওদিন পাওয়াও যায় তাতে নতুন কার্গো ভবনে আধিকারিক ও কর্মচারী এখনও না আসায় কার্গো বুকিংয়ে আরও বিলম্বিত হতে পারে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়েও বিমানবন্দর অধিকর্তা কে সি মিনার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। প্রসঙ্গত, গত ৬ ডিসেম্বর থেকে বিমানে বহিঃরাজ্যে নিতে ডিজিসিএ-র অনুমতির অভাবে কার্গো বুকিং বন্ধ করে রেখেছেন বিমানবন্দর অধিকর্তা । পুরানো টার্মিনাল ভবনে যেখানে কার্গো বুকিংয়ের মালপত্র এক্সরে মেশিনে পরীক্ষা তথা সিকিউরিটি হতো সেই পুরানো টার্মিনাল ভবনে গত ৬ ডিসেম্বর থেকে এই কাজ এক অর্ডারে বন্ধ করে দিয়েছে ডিজিসিএ। বন্ধ হওয়ার ক্ষেত্রেও বিমানবন্দর অথরিটির খামখেয়ালিপনা ও উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। নতুন কার্গো ভবন নির্মাণ ও চালু সাপেক্ষে কেন পুরানো টার্মিনাল ভবন ব্যবহার করা হবে সেই বিষয়ে সঠিক সময়মতো ডিজিসিএ-কে চিঠি দিয়ে না জানানোয় ডিজিসিএ পুরানো টার্মিনাল ভবনে কার্গো সিকিউরিটি ও বুকিংয়ের সব কাজ গত ৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ করে দেয়। তাতেই আগরতলা থেকে বিমানে মালামাল, চিঠিপত্র, পার্সেল, ডাক – সব কিছুই যেতে কার্গো বুকিংয়ের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রাজ্য সরকারও এই বিষয়ে উদাসীন।