ইউক্রেনে অজানা ভীতিপ্রদ ব্যাক্টেরিয়া।
অত্যন্ত ওষুধ প্রতিরোধী এবং আগ্রাসী এক ব্যাক্টেরিয়া ইউক্রেনীয় হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া যুদ্ধে আহত রোগীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশের গবেষকরা বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন, যার মধ্যে সুইডেনের একদল বিশেষজ্ঞ রয়েছেন সুইডিশ গবেষকদলের সদস্য অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান রিসবেক ব্যাক্টেরিয়াটি সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন ভয়ঙ্কর এই ব্যাক্টেরিয়াটি ইউরোপের বাকি অংশে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। করোনা পরবর্তী ইউরোপ অবশ্যই মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।অধ্যাপক রিসবেক বলেন,ইউক্রেনের হাসপাতালগুলোতে এই ব্যাক্টেরিয়ার আবিষ্কার গবেষকদের রীতিমতো অবাক করেছে।আমি কখনও ইউরোপে এমন কিছু দেখিনি।আমরা বহু এবং বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া পাব বলে ধারণা করেছিলাম।কিন্তু তা যে এতটা ভয়াবহ হবে, তা কেউই ভাবিনি।সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল ব্যাক্টেরিওলজির অধ্যাপক রিসবেক ব্যাক্টেরিয়ার কোশগুলোর উপর চালানো গবেষণার ফলাফল দেখে এক কথায় একে ‘ভীতিকর’ বলে বর্ণনা করেছেন।লুন্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ইউক্রেনের ইউকাস্ট ল্যাবরেটরির সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেন। অধ্যাপক রিসবেক ব্যাক্টেরিয়াটির সর্বোচ্চ শক্তির জায়গাটি খতিয়ে দেখেছেন। বিশ্লেষিত নমুনাগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে আহত হওয়া ১৩১জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির শরীর থেকে নেওয়া হয়েছিল।এছাড়া নিউমোনিয়া আক্রান্ত আটটি নবজাতকের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।সংগৃহীত নমুনা থেকে পাওয়া কিছু ব্যাক্টেরিয়া ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধী।গবেষকরা একমত হয়েছেন যে,নয়া আবিষ্কার এবং ভয়ঙ্কর এই ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনও অ্যান্টিবায়োটিক এখন নেই। এ ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়তে না পারলে খুব দ্রুতই এটি পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে পারে। রিসবেকের মতে, সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, জানা মতে, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া প্রজাতির ছয় শতাংশ ব্যাক্টেরিয়া বিশ্বের তাবৎ অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ছিল।অতীতে চিন থেকে এক আধটা এই ধরনের রোগীর হদিশ পাওয়া গেলেও এখনকার মতো এত বেশিসংখ্যক পাওয়া যায়নি। প্রচলিত কোনও অ্যান্টিবয়োটিক এই ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে না বলে ইউরোপ তথা সারা বিশ্বেরই বিচলিত হওয়ার কারণ রয়েছে বলে জানান ক্রিস্টিয়ান রিসবেক। তিনি আরও বলেন, রোগীরা যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল তখন তারা সংক্রমিত ছিল না। আঘাতের চিকিৎসা করার সময় তারা আক্রান্ত হয়েছিল। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয় এবং এর কোনও ব্যাখ্যাও আপাতত নেই।