নয়ডার ছাত্রী নিবাসে ভয়াবহ আগুন, প্রান রক্ষায় ঝাপ একের পর এক ছাত্রীর!!
ইএসআইর ডিসপেনসারির বেহাল দশায় রোগীরা বিপাকে!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ নিতে গিয়ে এমপ্লয়িজ স্টেট ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন (ইএসআইসি) ভুক্ত সাধারণ কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দুর্ভোগের শেষ নেই। শুধু দুর্ভোগ নয়, রোগযন্ত্রণা নিয়ে রাজধানীর শ্যামলীবাজারস্থিত ইএসআইসির ডিসপেনসারিতে গিয়ে হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন বলে ক্ষুব্ধ রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ। এই ডিসপেনসারিতে শুধুমাত্র ইএসআইসি ভুক্ত কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরাই চিকিৎসার সুযোগ নিতে আসেন। রাজ্য সরকারের অধিগৃহীত সংস্থা তথা আধা সরকারী সংস্থা, কর্পোরেশন, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংস্থা ইত্যাদির কম টাকায় বেতনভুক্ত শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য হলো ইএসআইসি।রাজ্য শ্রম দপ্তর ইএসআইসি-তে চিকিৎসার সুযোগ দিতে প্রতিমাসে তাদের বেতন থেকে নির্দিষ্ট টাকা কেটে নেয়। কিন্তু বিস্ময় ও পরিতাপের ব্যাপার হলো নিম্ন রোজগারের শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট অংকের টাকা কেটে নিলেও সেখানে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ পাচ্ছেন না। তার মূল কারণ হলো ডিসপেনসারিতে চিকিৎসা পরিকাঠামোর বেহাল দশা। রাজ্য সরকার ও তার শ্রম দপ্তর শ্যামলীবাজারস্থিত ইএসআইসির পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ার দায়িত্বে থাকলেও এদিকে কোন লক্ষ্য নেই। আর তাতেই দিনের পর দিন, বছরের পর বছর চিকিৎসা পরিকাঠামোর চরম বেহাল দশার কারণে রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বর্তমানে স্থির বেতনে ডিসপেনসারিতে তিন জন এমবিবিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসক রয়েছেন। নার্স আছেন দুই জন।ম্যান পাওয়ারের ভীষণ সঙ্কট রয়েছে। দুই বেলা ডিসপেনসারি খোলা রাখার সময়সূচি রয়েছে।প্রথম বেলা খোলার সময় বেলা ১০ টা ৩০ মিনিট থেকে ১২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। দ্বিতীয় বেলা খোলার সময় বেলা ২টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। রবিবার ও সরকারী ছুটির দিন বন্ধ থাকে। প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক রোগী ডিসপেনসারিতে রোগযন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। ডিসপেনসারির বেহাল চিকিৎসা পরিকাঠামোর জন্য রোগ পরীক্ষা করাতে পারছেন না রোগীরা। রোগনির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষা করানোর জন্য নামে একটি ল্যাব থাকলেও রক্ত পরীক্ষার কোনও পরিকাঠামো নেই। শুধুমাত্র একজন ল্যাবটেক তথা টেকনিশিয়ান রয়েছেন রক্ত পরীক্ষার ল্যাবে। তিনিই রোগীর রক্তের স্যাম্পল টেনে নেন। আবার তিনিই ল্যাবে রক্ত পরীক্ষা করেন। ল্যাব সাধারণ রোগ পরীক্ষার জন্য রাখা হয়। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের রোগনির্ণয়ে সিংহভাগ রক্ত পরীক্ষার জন্য রোগীকে অন্যত্র ছুটে যেতে হয়। এতো দিন শহরের বিদুরকর্তা চৌমুহনীস্থিত একটি বেসরকারী ল্যাবের সঙ্গে ইএসআইসির ডিসপেনসারির চুক্তি থাকায় চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশনের রোগ পরীক্ষা করাতেন। বিনা পয়সায় বেসরকারী ল্যাবে রক্ত পরীক্ষা করাতে পারতেন। কিন্তু গত প্রায় এক মাস ধরে রোগীরা সেই সুবিধাও পাচ্ছেন না। বেসরকারী সেই ল্যাবের সঙ্গে ডিসপেনসারির যে চুক্তি ছিল তার সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা সেখানে গিয়ে আগের মতো রক্ত পরীক্ষা করাতে পারছেন না। ল্যাব থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে ইএসআইসির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ তাই ইএসআইসির রোগীর রক্ত পরীক্ষা করবে না। তাতে রোগীরা রোগযন্ত্রণা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। খুব কষ্টে পকেটের টাকা খরচ করে রোগ পরীক্ষা করাচ্ছেন। এই বিষয়ে মঙ্গলবার বিকালে
রাজ্য শ্রম দপ্তরের কমিশনার ডি বি রিয়াংয়ের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান বেসরকারী ল্যাবের সঙ্গে যে ইএসআইসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তা তিনি জানেন না। এখন সাংবাদিকের কাছ থেকেই প্রথমে জানতে পারেন। তাকে প্রশ্ন করা হয় প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও কেন আপনি জানেননি বা আপনাকে জানানো হয়নি তাতে জানান, এখন শীঘ্রই ওপেন দরপত্র আহ্বান করে বেসরকারী ল্যাবের সঙ্গে রক্ত পরীক্ষার চুক্তি করা হবে। আগের বেসরকারী ল্যাবের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কেন নতুন করে ল্যাবের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়নি- সেই বিষয়ে শ্রম দপ্তরের কমিশনার স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর সবটা ছেড়ে দেন। এদিকে, স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক রাতে জানান, শ্রম দপ্তরই এসব দেখার দায়িত্বে। তাতেই সহজেই বোঝা যায় ইএসআইসি’র ডিসপেনসারির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে কী ধরনের অবহেলা ও উদাসীনতা দেখানো হচ্ছে। রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও ক্ষুব্ধ রোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের আরও প্রশ্ন, কোথায় শ্রম দপ্তর, কোথায় স্বাস্থ্য দপ্তর। এদিকে, ডিসপেনসারিতে চিকিৎসক দেখিয়ে প্রেসক্রিপশনের ঔষধও মিলছে না ডিসপেনসারিতে। ইএসআইসির সঙ্গে শুধুমাত্র বটতলায় দু’টি ঔষুধের ঔষু দোকানের চুক্তি রয়েছে প্রেসক্রিপশনের ঔষধ বিনামূল্যে রোগীকে দেওয়ার জন্য। সেই দুটি ঔষধের দোকানে গিয়েও সব ঔষধ পাচ্ছেন না রোগীরা বলে সব সময় অভিযোগ করছেন। রোগীর কাছ থেকে ঔষধের সেই দুটি দোকান প্রেসক্রিপশন রেখে দিয়ে বলছে পরের দিন এসে ঔষধ নেওয়ার জন্য। ঔষধ না পেয়ে রোগ যন্ত্রণা নিয়ে রোগীরা আরও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। রোগীর দাবি জিবি বাজার সহ আরও কয়েকটি জায়গায় ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ নেওয়ার সুবিধা করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাতেও রাজ্য শ্রম দপ্তর নির্বিকার বলে অভিযোগ।