ইতিবাচক শিক্ষা!!

 ইতিবাচক শিক্ষা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

২০১৪ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসা মোদি সরকারে তার প্রথম ১০০ দিনেই কালো টাকা নিয়ে সিট গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি লেন। তারপর দুই বছরের মাথায় নোটবন্দির মতো বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে গোটা দেশে একরকম কম্পন তৈরি করেছিলেন। প্রথম পর্বের শাসনভার শেষ করে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনেই তিন তালাক বাতিলের মতো বড় সিদ্ধান্তে গিয়েছিল কেন্দ্র। শুধু তাই নয় জম্মুও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার ও বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নিতেও দেখা গেছে মোদি সরকারকে।বর্তমানে মোদির নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো কেন্দ্রে সরকার গঠিত হয়েছে এবং মন্ত্রীরাও তাদের বরাদ্দ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রায় তিন মাসের কাছাকাছি হতে চলেছে।
যদিও তৃতীয় বারের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের একক সংখ্যাধিক্য নেই। মোদি বা বিজেপি সরকারের পরিবর্তে এখন কেন্দ্রে আক্ষরিক অর্থেই এনডিএ পরিচালিত সরকার।এই সরকারের প্রধান দুই স্তম্ভ অন্ধ্রপ্রদেশের টিডিপি দলের চন্দ্রবাবু নাইডু এবং বিহারে জেডিইউ দলের নীতীশ কুমার। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিস্থিতিতে এখন সরকারের তথা বিজেপির বকলমে মোদির পক্ষে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যকর করা ততটা সহজ নয়।যে কারণে তৃতীয় দফায় সরকারের মেয়াদে অগ্রাধিকার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা কাটেনি।যদিও ভোটার আগে আগ বাড়িয়ে বিজেপি দল ও মোদি সরকারের তৃতীয় বারের সরকারের কর্মসূচি ও ১০০ দিনের কাজের অ্যাজেন্ডা তৈরি করে আগাম ঘোষণা করে রেখেছিলেন, সরকার তৃতীয় মেয়াদে কোন্ পথে হাঁটবে।ইস বার চার’শ পার আত্মবিশ্বাসে ভর করে নির্বাচনের আগেই আগামী সরকারের কর্মপরিকল্পনা স্থির করে রাখলেও পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই হিসাব মিলছে না।৪০০ পারের দল ২৪০ এ আটকে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সরকারের আগেকার জেদ, ইগো, ঔদ্ধত্য, দম্ভ এখন অনেকটাই স্তিমিত।সেই কারণে নতুন সরকার তার কার্যকালের মেয়াদ এখনও একশ দিন অতিক্রম না করলেও, তৃতীয় মোদি সরকার তথা এনডিএ জোট কোন দিশায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে তার খতিয়ান নিয়ে বুধবার দিল্লীতে মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী।প্রায় ৫ ঘন্টার বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত এই ম্যারাথন বৈঠকে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও যতটুকু খবর, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ে তার সরকারের মন্ত্রীদের আগামীদিনে সরকারের কাজের রূপরেখা কী হতে চলেছে তার একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।মূলতঃ সরকারের পথচলায় চারটি দিক নির্দেশ বা মন্ত্রই এদিন প্রধানমন্ত্রী পাঠ দিয়েছেন সহকর্মীদের।এই চারটি মন্ত্র হলো-কার্য সম্পাদন, কাজের সংস্কার, কর্মরূপান্তর এবং কাজের বিষয়টি সর্বত্র অবহিতকরন। অর্থাৎ সরকার দেশে যে উন্নতির কাজ করছে তা যেন দেশবাসী জানতে পারে সেই বিষয়ে সমস্ত মন্ত্রীদের আগে থেকেই সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যমকে হাতিয়ার করে যাতে সমাজের সব অংশের মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের খতিয়ান দেখতে পারেন সেদিকে বিশেষ নজর দিতে চাইছে কেন্দ্র। সার কথা হলো, দেশের মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নিজের জান লড়িয়ে দিচ্ছে।সরকার নিজের দায়িত্ব পালনে সব ধরনের চেষ্টা করছে সেটা যেন সাধারণ মানুষ জানতে পারে।সেটাই আপাতত সরকারের অগ্রাধিকারের অন্যতম ক্ষেত্র। সেইজন্য জনগণের হয়ে কাজ করতে হলে দিনরাত এক করে কাজ করার জন্য মন্ত্রীদের নিদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিঃসন্দেহে সরকারের কর্মপরিকল্পনা ও রূপরেখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই দিনের বৈঠকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানের চাপ সরকারের মাথাব্যথার কারণ। বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধির মতো স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল সমস্যাগুলো।যার জেরে গত লোকসভা ভোটেই সরকার ও দলকে বড়সড় ধাক্কা খেতে হয়েছে।তার উপর তৃতীয়বারের মেয়াদে সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর প্রায় ৮০ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এই পর্যন্ত সরকার ও প্রশাসনের কাজে যাকে বলা হয় দিশামুখী পথচলা, তা সেই অর্থে এখনও অনুপস্থিত।বরং এই অল্প সময়ের মধ্যেই সরকারকে অনেক অস্বস্তিকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সংসদের ভেতরে-বাইরে এর মিশ্র ছাপও পড়েছে।এই আবহে সরকার যে আগামীদিনে প্রতিটি ক্ষোভ ও বিরুদ্ধতার ক্ষেত্রে সুবিচার এবং সহনশীল হয়ে জনকল্যাণে নিজেকে ব্রতী করতে চাইছে তারই বার্তা পাওয়া গেল বুধবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে। বলা যায় আপাত দৃষ্টিতে প্রথম ও দ্বিতীয় মোদি সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকারে যে ফারাক তৈরি হচ্ছে গুণগত বৈশিষ্টের দিক থেকে সেটাই আশার আলো।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.