ইন্ডিয়া’র বৈঠক শুরু আজ
ইন্ডিয়া জোটের আকার ও আয়তন কি বাড়তে চলেছে? সে রকমই আভাস দিয়েছেন। ইন্ডিয়া জোটের নেতারাই। এমনকী দাবি করা হচ্ছে, এনডিএ জোটের মধ্যে রয়েছে এরকম পাঁচটি দল নাকি গোপনে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তারা সঠিক সময়মতো এনডিএ জোট ছেড়ে চলে আসবে ইন্ডিয়া জোটে। কবে হবে সেই সঠিক সময়? মনে করা হচ্ছে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পর। কংগ্রেস এবং বিজেপির কাছে এই পাঁচ রাজ্যের ভোট যথেষ্ট রাজনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জিং এবং তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এই তিন রাজ্যে বিজেপিকে আটকে দেওয়ার কাজ করতে হবে কংগ্রেসকে। এই তিন রাজ্যের পাশাপাশি তেলেঙ্গানায় ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির বিজয়রথের সামনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে এখনও নিজেদের অস্তিত্বকে আরও বেশি করে জোরদার করার পরীক্ষা কংগ্রেসের। অর্থাৎ বিজেপি র যেভাবে আগ্রাসীভাবে তেলেঙ্গানায় এই প্রচার করছে যে তারা এবার এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন হয়ে সকলকে চমকে দেবে সেই নিছকই দিবাস্বপ্ন এটাই প্রমাণ করার জন্য কংগ্রেসকে ভালো ফল করতে হবে। সুতরাং ইন্ডিয়া জোটের কোনও শরিকই আসন্ন পাঁচ রাজ্যের ভোটে বিজেপির মুখোমুখি নয়। একমাত্র কংগ্রেস মোকাবিলা করতে নামছে বিজেপির। তাই কংগ্রেসের কাছে এই পাঁচ রাজ্য রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষা এবং একপ্রকার সেমিফাইনালও বটে। এই পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফলই তাই স্থির করে দেবে যে আগামীদিনে জোটের ভবিষ্যৎ কতটা শক্তিশালী হবে। বিশেষ করে এনডিএ জোটের একাধিক দল – এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল দেখার পরই সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা কী করবে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে চলা ইন্ডিয়া জোটের তৃতীয় বৈঠকে জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা, জোটের চেয়ারম্যান তথা কনভেনর নির্বাচন এবং জোটের একটি প্রতীক তথা লোগো প্রকাশ করা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বুধবারই ই সিংহভাগ দল নেতানেত্রী পৌঁছে ” গিয়েছেন মুম্বাইয়ে। তবে সেই বৈঠকের প্রাক্কালে আম আদমি পার্টির মধ্য থেকে বেসুরো মন্তব্য শোনা যাওয়ায় বিজেপি কটাক্ষ করেছে। হঠাৎ করেই আম আদমি পার্টির কয়েকজন নেতা দাবি করেছেন যে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করতে হবে। তিনিই যোগ্য। বিজেপি বলেছে, আম আদমি পার্টির ইন্ডিয়া জোটের থেকে বেরিয়ে আসার প্রথম পদক্ষেপ হলো এই ঘোষণা। যদিও আম আদমি পার্টির এমপি রাঘব চাড্ডা বলেছেন, আমাদের কোনও প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে লোভ নেই আমরা বিজেপিকে পরাজিত করার জন্য জোটকেই শক্তিশালী করতে চাই। এদিকে মায়াবতী, আকালি দল, ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতি, তেলুগু দেশম এবং আসাউদ্দিন ওয়েসির এআইএমআইএম, এই দলগুলি শেষ পর্যন্ত কোন্ দিকে যাবে? সেটা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। নীতীশ কুমার অথবা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক অথবা চেয়ারম্যান করার কথা ভাবা হয়েছে বলেও চর্চা শোনা যাচ্ছে। এদিকে মুম্বাইয়ে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া বৈঠকের অন্যতম উদ্যোক্তা এনসিপির সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার বুধবার দাবি করেছেন, ২৮টি রাজনৈতিক দলের ৬৩ জনের মতো প্রতিনিধি ৩১ আগষ্ট- ১ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন। তিনি দাবি করেন, বিজেপির বিকল্প জোট হিসেবে ইতিমধ্যেই ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিজেদের প্রমাণ করেছে। শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে বলেন, বিরোধী জোটের দলগুলির মধ্যে মতের অমিল থাকলেও এটা সবাই জানাচ্ছেন যে গণতন্ত্র রক্ষার তাগিদে তারা সব একজোট হয়েছে। কংগ্রেসের নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চ্যবন বলেছেন, অবিজেপি পার্টিগুলির ভোট রয়েছে ২৩ কোটি ভোট আর বিজেপি জোটের কাছে রয়েছে ২২ কোটি ভোট। যদি আমরা একজোট হয়ে কাজ করতে পারি, তাহলে আমরা জয়ী হবই।