ইন্ডিয়া জোটে কি ফাটল ?

 ইন্ডিয়া জোটে কি ফাটল ?
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ছত্তিশগড়ে কি অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস? সে রাজ্যে আর কয়েক মাসের মধ্যেই বিধানসভা ভোট। আর এই ভোটের আগে কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছে আম আদমি পার্টি। আম আদমি পার্টি জানিয়ে দিয়েছে তারা ছত্তিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে চলেছে। এজন্য তারা সে রাজ্যে তৎপরতা চালাতেও নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনকে। এটা কি দিল্লীর পাল্টা কিনা তা আপ নেতৃত্বই ভালো বলতে পারবে। সম্প্রতি কংগ্রেস নেতৃত্ব দিল্লীতে এক বৈঠকের পর ঘোষণা করে যে, দিল্লীতে যে সাতটি লোকসভা আসন রয়েছে তাতে সাতটি কেন্দ্রেই কংগ্রেস দল প্রার্থী দেবে। কংগ্রেস নেত্রী অলকা লাম্বা এই ঘোষণা করে দেন। স্বভাবতই আপ এতে হতাশ হয় এবং কংগ্রেসও এতে অস্বস্তিতে পড়ে যায়। যদিও পরবর্তী সময় কংগ্রেসের তরফে ড্যামেজ কন্ট্রোল নামানো হয়। দলের তরফে জানানো হয় যে, কংগ্রেস দলের তরফে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কংগ্রেসের নেত্রী অলকা লাম্বার এটি ব্যক্তিগত অভিমত। দলের তরফে এতে অনুমোদন নেই। সুতরাং এতে বিভ্রান্ত হবার কোনও সুযোগ নেই। প্রশ্ন ওঠেছে এবার হঠাৎ করে ছত্তিশগড়ের বিধানসভা ভোট নিয়ে আচমকা কেন এত তৎপরতা শুরু করল আপ। ছত্তিশগড় এবং মধ্যপ্রদেশে এবার কংগ্রেসের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের তরফে জানানো হয়েছে এমনটাই। তাহলে ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের বাড়া ভাতে ছাই দিতে কেন আপ তৎপরতা বাড়াতে চলেছে সে রাজ্যে? কংগ্রেসকেও ভাবাচ্ছে সে প্রশ্নই।সম্প্রতি দিল্লী সার্ভিসেস বিল নিয়ে আপের সমর্থনে এগিয়ে আসে সবকটি বিরোধী দল। এমনকী কংগ্রেসও এ নিয়ে আপকে ব্যাপক সমর্থন জানিয়েছিলো। যদিও কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়া আপের এত সহজ ছিল না। ইন্ডিয়া জোটে শামিল হওয়া নিয়ে আপ রীতিমতো কংগ্রেসকে চাপে ফেলে দিয়েছে। না, কংগ্রেস যাতে দিল্লী সার্ভিসেস বিলের বিরোধিতা করে সেজন্য আপ কংগ্রেসকে শর্ত দিয়ে দেয়। কংগ্রেস দিল্লী সার্ভিসেস বিলকে বিরোধিতা করলেই তবেই ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে যোগ দেবে আপ এমনটাই আপের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়। বেঙ্গালুরু বৈঠকের আগেই এ নিয়ে বিরোধী দলগুলি কিছুটা চাপে ছিল যে, শেষ পর্যন্ত অরবিন্দ কেজরিওয়াল ওই বৈঠকে যোগ দেবে কিনা। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস দিল্লী সার্ভিসেস বিলের বিরোধিতা করার বিষয়ে রাজি হওয়ায় আপ বেঙ্গালুরুর বৈঠকে দেখা দেয়।
বেঙ্গালুরুর বৈঠকেই বিরোধী দলগুলির জোটের নামকরণও হয় ইন্ডিয়া’। এরপর এবারের সদ্যসমাপ্ত সংসদের অধিবেশনেও বিরোধী ঐক্যের মজবুত চিত্র ধরা পড়ে। রাজ্যসভা এবং লোকসভায় এ চিত্র ধরা পড়ে। এমনকী রাজ্যসভায় দিল্লী সার্ভিসেস বিল নিয়ে কংগ্রেস চরম বিরোধিতাও করে।এরই মধ্যে দিল্লীতে কংগ্রেসের এক বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেত্রী অলকা লাম্বা ঘোষণা করে বসেন যে, দিল্লীর সাত আসনে কংগ্রেস একা লড়ই করবে। এতে আপ বেজায় রুষ্ট হয়। এতেই কি হঠাৎ ছত্তিশগড়কে টার্গেট করেছে আপ ? বর্তমানে আপ এবং কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের শরিক। তা হঠাৎ করে ছত্তিশগড়ে আপের তৎপরতা ইন্ডিয়া জোটকে বড়সড় চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।একইভাবে গত বছর গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনেও আপ কংগ্রেসের বাড়া ভাতে অনেকটাই ছাই দিয়েছিলো। আপ বহু আসনে কংগ্রেসের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গুজরাটে। ছত্তিশগড়ে কি একই পন্থা নিয়ে এগোচ্ছে আপ? কংগ্রেসের কাছে অন্যতম সম্ভাবনাময় রাজ্য হচ্ছে ছত্তিশগড়। ছত্তিশগড়ে গত পাঁচ বছর ধরে ক্ষমতায় কংগ্রেস। এবারও কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরার দাবিদার। তাই হঠাৎ করে ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিক কংগ্রেস ও আপের মধ্যে এই শরিকি লড়াই কি নির্বাচন পর্যন্ত চলতেই থাকবে নাকি তা অচিরেই মিটে যাবে। যেমনটা দিল্লীর ক্ষেত্রে হয়েছে। যদিও ইন্ডিয়া জোটের এ ধরনের ‘যদি’ ‘কিন্তু’ চলতেই থাকবে ২০২৪ পর্যন্ত। এর মধ্য দিয়েই জোট কতটা এগোতে পারে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই দিতে পারে তাই দেখার বিষয়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.