মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, বন্ধ ইন্টারনেট,, কার্ফু জারি!!
ইন্ডিয়া বনাম ভারত
লড়াইটা হয়েছিলো বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকের পর নামকরণের পর থেকেই। প্রথম আক্রমণ ধেয়ে এসেছিল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই। ইন্ডিয়া’ জোট। প্রধানমন্ত্রী আক্রমণ করে বলেছিলেন ইন্ডিয়া নামের সাথে জঙ্গি গোষ্ঠীরও নাম রয়েছে। যেমন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ইত্যাদি ইত্যাদি। এরপর থেকেই লাগাতর বিতর্ক চলেই আসছে ইন্ডিয়া জোটের নামকরণ নিয়ে। সম্প্রতি জি-২০ সম্মেলনে ভারত যে প্রতিনিধিত্ব করেছে তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামের সাথে বোর্ডে লেখা ছিল ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ‘ভারত’। এর মধ্যেই মাঝখানে বিতর্ক শুরু হয় ইন্ডিয়ার পরিবর্তে দেশের নাম কি ‘ভারত’ হতে চলেছে? আর সর্বশেষ এনসিইআরটির কমিটির সুপারিশ নিয়ে। এনসিইআরটি নয়া পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তকের নীতি নির্ধারণ নিয়ে সম্প্রতি যে কমিটি গড়েছে সেই কমিটির মত হচ্ছে তারা আর ইন্ডিয়া শব্দটি কোথাও রাখবে না। সুতরাং এবার এনসিইআরটির পাঠ্যপুস্তকেও ভারতের নাম জ্বলজ্বল করবে। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাহলে কি ‘ভারত’ এবার সব জায়গায় চলবে? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া’। সুপ্রিম কোর্ট অব্ ইন্ডিয়া, পার্লামেন্ট অব্ ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্টিল পা ইন্ডিয়া – ইত্যাদি ইত্যাদির কী হবে – প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সম্প্রতি এনসিইআরটির পাঠ্যপুস্তক এবং পাঠ্যক্রম নির্ধারণের আ লক্ষ্যে যে কমিটির সুপারিশ এসেছে তাতে বলা হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ নামক দেশ বলতে কিছু থাকবে না। অর্থাৎ ইন্ডিয়া মুছে ফেলা হবে। যেমন যদি দেখা যায় ইতিহাসে কোনও হিন্দু রাজাকে পরাজিত হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে তাহলে তাকে প্রায় ব্রাত্য করেই রাখা হবে। কারণ এনসিইআরটির যে কমিটি গঠিত হয়েছে সেই কমিটির সদস্যরা মনে করেন ইতিহাসের অনেক কিছুই ক বিকৃত ও অসত্য। কারণ অনেক অনেক ইতিহাসবিদই ইতিহাস না জেনে কিছু রাজাদের দুর্বল ও অযোগ্য হিসাবে দেখিয়েছেন এবং এরই সাথে তাদের পরাজিত নায়ক হিসাবে দেখানো হয়েছে। সুতরাং ইন্ডিয়া নামের পরিবর্তে ‘ভারত’ নাম এবার থেকে থাকবে বইয়ে এবং এ নিয়েই এবার দেশব্যাপী শুরু হয়েছে দি নয়া বিতর্ক। কংগ্রেসের বক্তব্য, নামবদলের এই রাজনীতি ক আসলে মানুষকে প্রকৃত সমস্যাগুলি থেকে বিভ্রান্ত করা। মানুষ যাতে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে প্রশ্ন না তোলে, সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ আর বিভাজন কিংবা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ না করে, সেজন্যই সচেষ্ট কেন্দ্রীয় সরকার। সেজন্য ভারতকে ন সামনে রেখে ইন্ডিয়াকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। বিরোধী জোটের বক্তব্য – ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভয়ে এতটাই ভীত যে, ‘ইন্ডিয়া’ নামকরণকে মুছে ফেলতে চাইছে বিজেপি। একই সাথে দেশের নাম থেকেও ইন্ডিয়াকে সরিয়ে দিতে চাইছে। পাঠ্যবই, পাঠ্যপুস্তক দিয়ে শুরু। ভবিষ্যতে হয়তো সবকিছুতেই আর ইন্ডিয়া নাম থাকবে না। সেই প্রক্রিয়া কি শুরু হয়ে গেল এনসিইআরটি সিলেবাস দিয়ে।বিরোধীদের মত হচ্ছে, ইন্ডিয়া নামকে ভারতে পাল্টে দিতে গেলে সংবিধানকেই পালটাতে হবে। কেননা সংবিধানের প্রথম লাইনেই বলা আছে ‘ইন্ডিয়া’ দ্যাট ইজ ভারত। অর্থাৎ যাহা ইন্ডিয়া তাহাই ভারত। বিরোধী কংগ্রেসের মত, নামবদলের এই রাজনীতি আসলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, মানুষ যাতে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে প্রশ্ন না করতে পারে সেজন্যই এই ইন্ডিয়া। ভারতের বিভাজন। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাহলে এই সময়টা বেছে নিল কেন বিজেপি। ‘ইন্ডিয়া’ নামে হঠাৎ এত আপত্তি কেন বিজেপির। ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠনের পর বিজেপির এত তৎপরতা কেন? তাহলে কি ‘ইন্ডিয়া’ জোটে সিঁদুরে মেঘ দেখছে কেন্দ্রের শাসক?