ই-মেইল চালাচালি সার, সম্বিৎ ফেরেনি এতটা, বিচ্ছিন্ন গ্যাস লাইন!!

 ই-মেইল চালাচালি সার, সম্বিৎ ফেরেনি এতটা, বিচ্ছিন্ন গ্যাস লাইন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-শত অঘটন, শত চিঠি চালাচালি, খবর এবং নিন্দার ঝড়ের পরও পরিস্থিতি বদলের নাম নেই। দেখা নেই সমন্বয়ের। দেখা নেই পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণের। আসলে আগরতলা আছে আগরতলাতেই। রাজ্য প্রশাসন আছে রাজ্য প্রশাসনেই। আর শহরের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের কাজ চলছে সেই মান্ধাতা আমলের পদ্ধতি অনুসরণ করে। কোনও ধরনের সংযোগ রক্ষা না করে যন্ত্র দানব ডজার ব্যবহার করে চলছে মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এর নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে বাড়ছে জন দুর্ভোগ। আর্থিক ক্ষতি হয়ে চলছে নাগরিকদের। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটে চলছে।সর্বশেষ অনাকাঙিক্ষত কাণ্ড ঘটেছে বুধবার,পাঁচ মার্চ।
বুধবার রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলার বড়জলায় স্মার্ট সিটি প্রকল্পের কাজ চলছে।যথারীতি এই কাজ করা হয়েছে ত্রিপুরা প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড তথা টিএনজিসিএলকে আগাম কিছু না জানিয়ে। পূর্বের বহু ঘটনার মতো এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।জানা গেছে প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে অন্তত দুইটি ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে গ্যাস পাইপ লাইনের।ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বড়জলা এলাকার মানুষকে। দুইটি ক্ষেত্রেই গ্যাস সরবরাহকারী পাইপ কাটা পড়ায় বিপদ লাগাম ছাড়ায়নি।শেষ রক্ষা হয়েছে তুলনায় অল্পতে।দুই দফায় প্রায় পঁচিশটি করে মোট পঞ্চাশটি বাড়িতে এক ঘণ্টা মতো সময় ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে রাখতে হয়েছে গ্যাস কোম্পানিকে।দুর্ভোগ সইতে হয় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলিকে।ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।দেখা দেয় চাঞ্চল্য এবং উত্তেজনা।
জানা গেছে, বুধবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ প্রথম বিপদের সৃষ্টি হয়। সকাল দশটা নাগাদ বড়জলা এলাকায় স্মার্ট সিটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা কাজ চলার পর দুপুর আড়াইটা নাগাদ ঘটে অঘটন। ড্রজার দিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় ফেটে যায় ভূতল গ্যাসের পাইপ লাইন। শোঁ শোঁ শব্দে তীব্র গতিতে গ্যাস নির্গত হতে শুরু করে। গ্যাস পাইপে লেগে যায় আগুন। বেশ কিছু বাড়িতে পাইপলাইন গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আচমকা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়তে হয় পরিবারগুলিকে। বন্ধ করে দিতে হয় রান্নাবান্না।
খবর যায় দমকল বাহিনীতে। খবর যায় গ্যাস কোম্পানিতে। ছুটে আসে দমকলের ইঞ্জিন সহ আধিকারিক, কর্মীরা। তারা আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। গ্যাস কোম্পানির তরফে গ্যাসের উৎস মুখ বন্ধ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাত দেওয়া হয়। গ্যাসের সরবরাহকারী লাইনে সমস্যা হওয়ায় ঘণ্টা এখানেকের মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে এনে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু করতে না করতে ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।প্রায় দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে কাছাকাছি এলাকাতেই ফের গ্যাসের পাইপ লাইন ছিন্ন হয়ে যায়।
জানা গেছে,স্মার্ট সিটি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে প্রথমে ড্রজার ব্যবহার করে * বিপদ হওয়ায় পুনরায় কাজ করার সময় আর ড্রজার ব্যবহার করা হয়নি। কোদাল, * বেলচা, গাঁইতি ইত্যাদি ব্যবহার করে কাজে হাত দেওয়া হয়। চালানো হয় খোঁড়াখুঁড়ি। তারপরও বিপদ এড়ানো যায়নি।বিকাল চারটা নাগাদ প্রায় একই এলাকায় গ্যাস সরবাহকারী পাইপ বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। প্রাপ্ত খবর অনুসারে দ্বিতীয় দফায় কাজ শুরুর ক্ষেত্রেও গ্যাস কোম্পানিকে অবগত করা হয়নি। আরও খবর হলো কোম্পানির তরফে নতুন করে কাজ করার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মাটি খোঁড়ার কাজে নিয়োজিতরা নেতিবাচক উত্তর দেন। বলেন এ দিন আর কাজ করা হবে না। অবশেষে গ্যাস কোম্পানির লোকজন এলাকা থেকে চলে যেতেই পুনরায় কাজ শুরু করা হয়।
আর দ্বিতীয় দফায় কাজ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে ফের অঘটন ঘটে যায়। তখন বিকাল চারটার কাছাকাছ সময়। গ্যাস সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত পাইপ বিচ্ছিন্ন হয়ে ধরে যায় আগুন। নতুন করে দমকল বাহিনী সহ গ্যাস কোম্পানির লোকজন ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এলাকায় আবারও আতঙ্ক ছড়ায়। দেখা দেয় চাঞ্চল্য এবং উত্তেজনা দুর্ভোগ সইতে হয় বেশ কিছু পরিবারকে। এক দিনে একই এলাকায় পর পর দুইবার গ্যাসের পাইপ কাটার ঘটনায় স্মার্ট সিটি প্রকল্পের কাজ ঘিরে এলাকায় মৃদু বিক্ষোভ দেখা দেয়। এমন ঘটনা কিন্তু দুই দিন আগে সোমবারও হয়েছে। শহরের রামনগরের কের চৌমুহনী সংলগ্ন এলাকায় একই কারণে গ্যাস সরবরাহ করার কাজে ব্যবহৃত পাইপের ক্ষতি হয় সোমবার। এরপর – যথারীতি এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়। ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য এবং উত্তেজনা। চলে দৌড়ঝাঁপ। মোট কথায় আগরতলা শহরের উন্নয়নের নামে শহরবাসীর দুর্ভোগ যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে আপাতত সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.