উচ্চ শিক্ষার হদ্দমুদ্দ! প্রিন্সিপালশূন্য ১৬ কলেজ!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের
১৬টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে প্রিন্সিপাল নেই।ফলে রাজ্য সরকারের ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনার মান তলানিতে এসে ঠেকেছে।উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ব্যর্থতার দৌলতে ডিগ্রি কলেজের প্রশাসনিক কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে।শুধু তাই নয়,সাধারণ ডিগ্রি কলেজে নিয়মিত পঠনপাঠন পর্যন্ত হচ্ছে না।ফলে যেকোন মুহূর্তে একাংশ কলেজ ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের তালিকা থেকেও ছিটকে যেতে পারে। এর মূলে প্রিন্সিপালশূন্য সাধারণ ডিগ্রি কলেজ। তবে শীতঘুমে রাজ্য সরকার, উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
যদিও ইউজিসি এবং ন্যাকের নজরে এই বিষয়টি গিয়েছে বলে খবর উচ্চশিক্ষা দপ্তরেও এসেছে।এরপরই তড়িঘড়ি প্রিন্সিপাল নিয়োগে সিদ্ধান্তও হল। অবাক করার বিষয় হল,১৬টি ডিগ্রি কলেজে প্রিন্সিপাল নেই।তবে সিদ্ধান্ত হল মাত্র ১৩টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হবে। কিন্তু কেন বাকি ৩টি কলেজে ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রিন্সিপাল নিয়োগ হবে না।
অবাক করার বিষয় হল,১৩টি কলেজে প্রিন্সিপাল পদে ৫ বছরের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করবে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ভূ ভারতে প্রিন্সিপাল পদে লোকসেবা আয়ােগের মাধ্যমে ৫ বছরের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগের আর দৃষ্টান্ত নেই। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ত্রিপুরা।অভিযোগ, এই ৫ বছরের চুক্তির ভিত্তিতে রাজ্যের গত ৩ বছর ধরে প্রিন্সিপাল পদে টিপিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে। যেসব প্রফেসর এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রিন্সিপাল পদে যোগ দেবেন। তাদের প্রত্যেকেই প্রথম ৫ বছর পর আবার নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে হবে। যারা এই নিয়োগ পরীক্ষায় ফেল করবেন তাদের কাছ থেকে প্রিন্সিপাল পদ কেড়ে নেবে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ফলে তাদের পুনরায় প্রফেসর এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদের চাকরিতে ফিরে যেতে হবে।
এভাবেই প্রিন্সিপাল পদের গরিমা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে রাজ্যে। জানা গিয়েছে, প্রায় ৩ বছর আগে যে ৯টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে এই চুক্তির ভিত্তিতে যারা প্রিন্সিপাল পদে যোগ দিলেন তাদের মধ্যে একজনও প্রফেসর এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রিন্সিপাল পদে পুনর্নিযুক্তির পরীক্ষায় বসছেন না। উল্লেখ্য, তারা প্রত্যেকেই প্রিন্সিপাল পদ থেকে পদত্যাগ করছেন বলে খবর। তাদের অভিযোগ, লোক দেখানোর জন্য রাজ্যে প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, একজন প্রিন্সিপালকে যদি ৫ বছর চাকরির পর নিয়োগ পরীক্ষায় ফেলের নামে পুনরায় প্রফেসর এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে ফিরে যেতে হয়। এর জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছেও ভুল বার্তা যাবে। তা একপ্রকার নিশ্চিত।
অথচ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ব্যর্থতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নীতিমালা লঙ্ঘন হচ্ছে রাজ্যে। কলেজগুলিতে পঠনপাঠনের মান তলানিতে ঠেকেছে। শিক্ষা বিপ্লবের প্রচার চললেও স্নাতক স্তরে প্রত্যেক বছর প্রায় ৪৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল করছে। কারণ প্রিন্সিপাল নেই। এর খেসারত দিচ্ছেন রাজ্যের হাজারো ছাত্রছাত্রী, সাধারণ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা।
উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, ১৬টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে প্রিন্সিপাল নেই। আবার রাজ্যব্যাপী প্রচার চালিয়ে রাজ্যেও নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু হল। নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী রাজ্য সরকারের ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে ৪ বছরের স্নাতক ডিগ্রি কোর্সে পঠনপাঠন চালু হয়েছে। তবে নিয়মিত প্রিন্সিপাল ছাড়া কীভাবে কলেজগুলিতে পঠনপাঠন হচ্ছে?এ প্রশ্নের কোন উত্তর নেই।
উচ্চশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর,প্রায় তিন বছর আগে মাত্র ১০ জনকে প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ করা হয়।তবে এর মধ্যে একজন প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিযোগ এনে চাকরিতে যোগ দিলেন না। কারণ প্রথম প্রকাশিত তালিকায় মাত্র তিনজনের নাম ছিল। এরপর রাতারাতি তালিকায় ১০ জনের নাম প্রিন্সিপাল পদের জন্য এসে যায়। রাতারাতি কোন পদ্ধতিতে তালিকা পরিবর্তন হয়েছিল? এ নিয়ে এখন পর্যন্ত নীরব উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
জানা গিয়েছে, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ব্যর্থতার জন্য ক্ষুব্ধ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসররা রাজ্যের চাকরি ছেড়ে বহি:রাজ্যের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর পদে যোগদান করছেন। কারণ রাজ্য সরকারের ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে প্রফেসর পদ পর্যন্ত নেই। যদিও শতাধিক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের বর্তমানে প্রফেসর পদে পদোন্নতির যোগ্যতা রয়েছে। প্রফেসর পদ নেই তাই কলেজ থেকে পিএইচডি কোর্সের সুযোগও বন্ধ।এক্ষেত্রে নীরবদর্শক সরকার।
শুধু তাই নয়, প্রিন্সিপাল নেই, এর প্রভাবে ইউজিসির সেমেস্টার পদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী কলেজগুলিতে শ্রেণীকক্ষে ১৮০ দিন ক্লাস হচ্ছে না। এক্ষেত্রেও পিছিয়ে রয়েছে রাজ্য। বিজ্ঞান বিভাগে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের সবচেয়ে করুণ অবস্থা। কারা একটি সেমেস্টারেও পড়ুয়াদের প্র্যাকটিকেল ক্লাস সঠিক অনুপাতে হচ্ছে না। আর রাজ্যের জেলা, মহকুমার কলেজগুলিতে প্র্যাকটিকেল ক্লাসই বন্ধ।অনার্স ও পাস কোর্সের ক্লাসেরও একই হাল।কলা ও বাণিজ্য বিভাগে পর্যন্ত সেমেস্টারের ৯১ দিন ও ক্লাস হচ্ছে না।

Dainik Digital

Recent Posts

নয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পাক অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ভারতীয় সেনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের…

4 hours ago

বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক মোদী সরকারের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কেন্দ্র।২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে পর্যটকদের উপর হামলা পরপাকিস্তানের বিরুদ্ধে…

4 hours ago

শূন্য কলস!!

শূন্য কলসি বাজে বেশি,আশৈশব এই বাক্যটি পাঠ্যে পড়ে বেড়ে উঠেছি আমরা সকলে।এখন পাক ফৌজির হম্বি…

9 hours ago

বাতিল করলেন তিন দেশের সফর প্রধানমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মে মাসের মাঝামাঝি ক্রোয়েশিয়া, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র…

10 hours ago

পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পাকিস্তানে ভারতের হামলায় মৃত বেড়ে ২৬। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক জানিয়েছেন,…

10 hours ago

কৃষকের মাঝেই ঈশ্বরের অবস্থান: রতন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান!!

অনলাইন প্রতিনিধি :;মঙ্গলবার সারা রাজ্যে একাধিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গত বছর রাজ্যের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের…

11 hours ago