উন্নয়নের ৪৫% কৃষিনির্ভর আগামী রূপরেখা তৈরিঃ রতন

 উন্নয়নের ৪৫% কৃষিনির্ভর আগামী রূপরেখা তৈরিঃ রতন
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বুধবার রাজধানীর মুক্তধারা অডিটরিয়ামে কৃষি দপ্তরের অধীন রাজ্যের সমস্ত স্তরের আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করলেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ। কৃষি ও কৃষক উন্নয়নে গত পাঁচ বছর সরকার কি কি কাজ করেছে, তার বিস্তারিত তথ্য নেওয়ার পাশাপাশি আগামীদিনে সরকার কি কি কাজ করবে, তার রূপরেখাও তৈরি করলেন কৃষিমন্ত্রী শ্রীনাথ । তিনি বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে ৪৫ শতাংশই কৃষি নির্ভর। স্বাভাবিকভাবেই কৃষির গুরুত্ব কতটা, তা পৃথকভাবে বলার অপেক্ষা রাখে না। গত পাঁচ বছর সরকার কৃষি ও কৃষক উন্নয়নে অভূতপূর্ব কাজ করেছে। আগামীদিনে সরকার কি কি কাজ করবে তার রূপরেখা ইতিমধ্যে তৈরি করে নেওয়া হয়েছে। এ দিন পর্যালোচনা বৈঠক শেষে বিকালে মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কৃষি সচিব। তিনি বিস্তারিত তথ্য তুলে
ধরে বলেন, ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী এবং বিশ্বের ৭২টি দেশের সমর্থনে ইউনাইটেড নেশন ২০২৩ সালকে ‘আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। যার মুখ্য উদ্দেশ্যে হলো শ্রীঅন্ন চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা, মানুষের খাদ্যাভ্যাসে শ্রীঅন্নের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং উপকারিতা সম্পর্কে অধিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। রাজ্যে বর্তমানে ১৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শ্রীঅন্ন চাষ করা হচ্ছে। শ্রীঅন্ন চাষে রাজ্যের কৃষকদের উৎসাহিত করতে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে আরও ৭০০ হেক্টর অর্থাৎ মোট ২০০০ হেক্টর জমিতে শ্রীঅন্ন চাষের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রজ্যের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমাস্তরে শ্রীঅন্নের উপর বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, প্রশিক্ষণ শিবির ও কর্মশালা, কৃষক ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে মত বিনিময় সভা, প্রদর্শনীমূলক চাষ, মিনিকিট বীজ বিতরণ, রোড শো, শ্রীঅন্নের বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের উপর প্রচার পুস্তিকা, লিফলেট ইত্যাদি বিতরণ, বিভিন্ন প্রকার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার, জেলাভিত্তিক শ্রীঅন্ন মেলা ইত্যাদির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব জানান, রাজ্যকে খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভর করার লক্ষ্যে এবং রজ্যের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তর নিরলস কাজ করে চলেছে তিনি জানান, রাজ্যের বর্তমানে মোট কৃষকের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৭২ হাজার জন। এরমধ্যে জমির মালিকানাধীন কৃষকের সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৩ হাজার জন, পাট্টাপ্রাপ্ত কৃষকের সংখ্যা ১ লক্ষ ২২ হাজার জন এবং বর্গাদার কৃষকের সংখ্যা ৩৭ হাজার। মোট ৪ লক্ষ ৭২ হাজার জন। বর্তমানে রাজ্যে মোট চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ২ লক্ষ ৫৫ হাজার হেক্টর। এরমধ্যে সেচের আওতাধিন জমির পরিমাণ ১ লক্ষ ১৯ হাজার হেক্টর। সচিব জানান, বর্তমান রাজ্য সরকার বিগত পাঁচ বছরে কৃষকদের সময়মতো সার, বীজ ও পরিবহণ খরচ বাবদ মোট ৪১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করেছে। প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পে রাজ্যে এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৯৩ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে ৫৫৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। “মুখ্যমন্ত্রী ফসলবিমা যোজনা’ চালু করে আগে, যেখানে কানি প্রতি কৃষকের প্রিমিয়াম দিতে হতো ২২০ টাকা সেখানে বর্তমানে কৃষক কানি প্রতি মাত্র ১০ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে বিমা করার সুযোগ পাচ্ছেন। রাজ্য সরকার কানি প্রতি ২১০ টাকার প্রিমিয়াম বহন করছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে মোট ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। তাতে ৮৮,৮৪০ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে মোট ৩২৫ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা পৌঁছানো হয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.