উপভোট ২৪ এর ট্রায়াল, চাপে আছে সকলেই
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষক দিবসের দিনই অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে রাজ্যের দুইটি বিধানসভা ধনপুর ও বক্সনগর কেন্দ্রের উপর্নিবাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে শাসক ও বিরোধী দলের প্রচার এখন তুঙ্গে। রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাস মোতাবেক ধনপুর এবং বক্সনগর দুইটি বিধানসভা কেন্দ্রই সিপিএমের দুর্গ বলে পরিচিত। যদিও ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ধনপুর কেন্দ্রটি সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয় বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। সেই সাথে ওই প্রথম ধনপুর কেন্দ্রটি সিপিএমের হাতছাড়া হয়।
ধনপুর কেন্দ্র থেকেই বরাবর জয়ী হয়ে এসেছেন বামফ্রন্ট সরকারের তৎকালীন মন্ত্রী সমর চৌধুরী। পরবর্তীকালে ধনপুর যায় মানিক সরকারের হাতে। ২০১৮ সালেও মানিক সরকার ধনপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। ২০২৩ এর নির্বাচনে মানিক সরকার আর প্রার্থী হননি। এই ২০২৩ সালেই ধনপুর বামেদের হাতছাড়া হয়। প্রায় ৩০ শতাংশ জনজাতি অংশের ভোটার রয়েছে এই ধনপুর কেন্দ্রে। যার উপর ভিত্তি করে বরাবরই ধনপুর থেকে জয়ী হয়েছে বামপ্রার্থী। কিন্তু পরিস্থিতি পালটে যায়২০২৩ সালে। নতুন জন্ম হওয়া জনজাতিভিত্তিক রাজনৈতিক দল তিপ্রামথা বামেদের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে ছন্দপতন ঘটায়। একইসাথে বিজেপির জয়ের পথকে মসৃন করে। কিন্তু গত ছয় মাসে পরিস্থিতি ভিন্ন পথে মোড় নিয়েছে।
রাজনৈতিক সমীকরন ও পরিবর্তন হয়েছে। ফলে উপনির্বাচনে এই নয়া সমীকরণে কে জয়ী হবে? তা এখনই বলা।মুশকিল। অপরদিকে বক্সনগর কেন্দ্রেও একই পরিস্থিতি। ১৯৮৮ সালে একবারই বক্সনগর কেন্দ্র বামেদের হাতছাড়া হয়েছিল। প্রায় ৮০ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে বরাবরই সিপিএম জয়ী হয়ে এসেছে। ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনেও বক্সনগর বামেদের দখলে ছিল। ২০২৩ সালেও বক্সনগর ধরে রাখতে পেরেছে সিপিএম। উপভোটে দুই কেন্দ্রেই লড়াই মুলত দ্বিমুখী। বিজেপি এবং সিপিএমের মধ্যে। কংগ্রেস এবং তিপ্রামথা কেউ লড়াইতে না থাকলেও অঘোষিত সমর্থন রয়েছে সিপিএম প্রার্থীর প্রতি। ফলে দুই কেন্দ্রেই লড়াই হতে যাচ্ছে জমজমাট। এই লড়াইয়ে শেষ হাসি কে হাসবে, তা আগামী ৮ সেপ্টেম্বর জানা যাবে।
কিন্তু এই উপভোটের ফলাফল রাজনৈতিক ভাবে অনেক তাৎপর্যপুর্ণ হতে যাচ্ছে। এই উপভোটে রাজ্য সরকার পরিবর্তন না হলেও, শাসক এবং বিরোধী সকলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই উপভোট আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য যেমন ট্রায়াল হতে যাচ্ছে, তেমনি শাসক বিরোধী উভয় দলের বর্তমান নেতৃত্বেরও অগ্নি পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। ফলে চাপে আছে সকলেই।