এইডসে উদ্বেগ!!

 এইডসে উদ্বেগ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে এইডস নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।প্রতিবছরই গোটা বিশ্বে বিশ্ব এইডস দিবস ঘটা করে পালন করা হয়।আমাদের এ রাজ্যেও পালিত হয়।বিশ্ব এইডস দিবস এলেই নানা তথ্য উঠে আসে।তথ্যে জানা যায় বিশ্বে এইডসের কী পরিস্থিতি রাজ্য কী পরিস্থিতি ইত্যাদি।বিশ্ব এইডস্ দিবসে এলেই আমাদের মনে পড়ে এইডস্ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কথা।এদিন বিভিন্ন আলোচনা সভা হয়,বিশিষ্ট জনেরা বক্তব্য রাখেন,তথ্য দেন, র‍্যালি হয়।প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার হয় এই পর্যন্ত যা। মিটিং, ইটিং হয়। এছাড়া, মাঝেমধ্যে এইডস নিয়ে সেমিনার, আলোচনাসভা ইত্যাদি হয়। উদ্দেশ্য একটাই – এইডস সম্পর্কে জানা,এইডস – এইচআইভি ‘র – ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করা।এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের ভাবনা ছিল-‘লেট কমিউনিটিস্ লিড’।অর্থাৎ সমাজ এইড্স নিয়ে ভাবুক।সমাজকে ভাবনার মধ্যে আনা।শুধু সেমিনার, আলোচনা, বক্তৃতা করে যে এইডস নিয়ে কিছু হবার নয় তা দেরিতে হলেও বিশ্বনেতারা বুঝেছেন।তাই এবার বিশ্ব এইড্স দিবসের ভাবনায় কমিউনিটিকে যুক্ত করা হলো।শুধু যুক্ত করাই নয়, কমিউনিটি লিড করার সম্ভাবনা হয়েছে।অর্থাৎ সমাজই এইড্‌স সচেতনতা কিংবা এইডসের ভাবনাচিন্তাকে তৃণমূল স্তরে ছড়িয়ে দেবে।সেজন্যই এইড্স দিবসকে একেবারে সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে এবং এ কাজ করতে গেলে তাকে গণ আন্দোলনের রূপ দিতে হবে। তাই একসঙ্গে সাফল্য পেতে হলে প্রত্যেককে যুক্ত করতে হবে।কেননা এইডসের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী।আমাদের দেশে তো বটেই, আমাদের এই ছোট রাজ্যেও এইডসের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী।আর এ নিয়ে উদ্বেগ চাপা রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। বিশ্ব এইডস দিবস পালনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা তথ্য দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন,আমাদের এ রাজ্যে এইডস উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যেভাবে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তা রীতিমতো ভয়ঙ্কর।এইডস আক্রান্ত অন্যদেরও সহজেই ছড়িয়ে দিচ্ছে – জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে।ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যে গত ক’বছরে এইডস আক্রান্ত বাড়ছে।এই ছোট রাজ্যে আক্রান্ত পাঁচ হাজারের বেশি। অথচ এইডস নিয়ে প্রচারাভিযান চলছে। সরকারী ব্যবস্থাপনার অভাব নেই।রাজ্যে ২৪টি হাসাপাতালে ইন্ট্রিগ্রেটেড কাউন্সেলিং এবং টেস্টিং সেন্টার রয়েছে।১৩৩টি ছোট বড় হাসপাতালে ফেসিলিটি ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সেলিং ও টেস্টিং সেন্টার এবং ৩টি পিপিপি ইন্টিগ্রেটেড কাউন্সেলিং ও টেস্টিং সেন্টার রয়েছে।এইডস রোগ মোকাবিলায় জনসচেতনতাই একমাত্র হাতিয়ার।শুধু এইড্‌স দিবসের দিন সচেতনতা করার উদ্যোগ থাকলে এইডস মোকাবেলা কোনদিন করা সম্ভব হবে না।
গোটা বছর এইড্স নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা জরুরি।এক্ষেত্রে সরকার এনজিও, জনপ্রতিনিধি, পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধি প্রত্যেককে যুক্ত করতে হবে। একটি সরকারী সুবিধাভোগী যেমন বাছাই করেন একবারে তৃণমূল স্তরের রাজনৈতিক নেতা কর্মী, তেমনি তৃণমূল স্তরের রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের এ কাজে যুক্ত করতে হবে। তারপরই সাফল্য আসবে।এ কাজ হতে হবে ধারাবাহিকভাবে।নেশার করাল গ্রাস এ রাজ্যের যুব সমাজের একাংশ যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে তাও গভীর উদ্বেগের বিষয়।এ বিষয়টি নিয়ে সকলকে ভাবতে হবে। ড্রাগস্ নিচ্ছে যুবক-যুবতীদের একাংশ। শিরাপথে ড্রাগস্ নিচ্ছে সিরিঞ্জের মাধ্যমে। তাতে এইডস আক্রান্তের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।যুব সমাজকে সর্বাগ্রে আমাদের রক্ষা করতে হবে।তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ।এই ভবিষ্যৎকে এভাবে নষ্ট করতে দেওয়া যায় না।মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। স্কুল কলেজে এজন্য ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করা জরুরি। এজন্য ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত প্রত্যেককে দায়িত্ব নিতে হবে।এইডসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে। একেবারে সমাজের তৃণমূলস্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত প্রত্যেককে এইড্স সচেতনতায় এগিয়ে আসতে হবে।একমাত্র সচেতন সমাজকেই এইডসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। না হলে প্রতিবছর এইড্স রোগীর সংখ্যা বাড়বে, বিশ্ব এইডস দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.