প্রতি দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রার্থনা করেন অশীতিপর বৃদ্ধ । প্রার্থনা সেরে প্রায় দেড় কিমি দূরে পাড়ি দেন তিনি । কারণ সেখানেই যে রয়েছে তার ‘ মনের আরাম , প্রাণের আনন্দ , আত্মার শান্তি ‘ । ১২০ বছরের প্রাচীন একটি আম গাছ । বৃদ্ধের নাম কলিম উল্লাহ খান । শতাব্দী প্রাচীন এই আম গাছটিকে চোখের মণির মতো আগলে রেখেছেন কলিম উল্লাহ । কারণ এই গাছেই বছরের পর বছর ধরে প্রায় ৩০০ রকমের ভিন্ন প্রজাতির আম ফলিয়ে চলেছেন তিনি । প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রিয় আম গাছটির কাছে যান বৃদ্ধ ।
পুরু কাচের চশমার ভিতর দিয়ে ঝাপসা চোখে গাছের পাশে দাঁড়ান তিনি , ঠিক যে ভাবে সন্তানের পাশে দাঁড়ান কোনও পিতা । তারপর পাতাগুলিকে আদর করেন । পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে চান আম পেকেছে কি না । আম পেকেছে দেখলে বৃদ্ধের দুই চোখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে । কলিম উল্লাহ খান উত্তরপ্রদেশের মলিহাবাদের বাসিন্দা । নিজের বাগানেই রয়েছে আশ্চর্য এই আম গাছ । ৮২ বছর বয়সী বৃদ্ধ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন , ‘ কয়েক দশক ধরে প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে , কঠোর পরিশ্রম করার পুরস্কার হল এই গাছের ৩০০ টি ভিন্ন প্রজাতির আম । ‘ তিনি আরও বলেন , ‘ খালি চোখে দেখলে মনে হবে এটি একটিমাত্র গাছ ।
কিন্তু কেউ যদি মনের দরজা খুলে দেখেন তা হলে বুঝতে পারবেন এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমের প্রতিষ্ঠান । ‘ পড়াশোনায় মনোযোগ ছিল না শৈশবে । বরং ছোট থেকেই তাকে টানত চাষবাস । একদিন দুম করে ছেড়ে দিলেন স্কুল । তারপর চেষ্টা করলেন বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ কলমের মাধ্যমে একদম ভিন্ন প্রজাতির আমের ফলন ঘটাতে । কী করে একটাই গাছে ভিন্ন ভিন্ন আম ফলানো যায় তা নিয়ে প্রায় বিজ্ঞানীদের মতো পরীক্ষা – নিরীক্ষা শুরু করেন কিশোর কলিম । সাতটি নতুন জাতের আম উৎপাদনের জন্য একটি গাছের যত্ন নেওয়া শুরু করেন তিনি । কিন্তু সেই গাছটি ঝড়ে পড়ে যায় ।
১৯৮৯ সালে এসে বহু প্রাচীন একটি গাছের খোঁজ পান কলিম । পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন এ হল সেই জাদু – গাছ , যে গাছ আলাদা আলাদা জাতের আম উৎপাদন করতে সক্ষম । তার পর থেকে ওই গাছে প্রায় ৩০০ ভিন্ন প্রজাতির আম উৎপাদন করে চলেছেন কলিম খান । প্রত্যেকটির স্বাদ , গঠন , রং , আকার আলাদা ! এই গাছ তথা বৃদ্ধের হাতের এটাই জাদু । ৩০০ টি প্রজাতির আমের বাহারি নামও দিয়েছেন তিনি । কোনওটার নাম মোদি , কোনওটা সোনিয়া । এই গাছে পাশাপাশি ঝুলে থাকে মোদি এবং সোনিয়া । আবার কোনও আমের নাম শচীন , কোনওটার শাহরুখ ।
বলিউড তারকা ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের নামে কলিম সাহেব একটি আমের নাম দিয়েছিলেন ‘ ঐশ্বর্য ’ । তার দাবি , এই আমই ছিল তার জীবনের সর্বোৎকৃষ্ট সৃষ্টি । কেমন আম এই ঐশ্বর্য ? কলিম সাহেব বলেন , ‘ এই আম অভিনেত্রীর মতোই সুন্দর । এক একটি আমের ওজন প্রায় এক কেজি । এই আমগুলির বাইরের ত্বকে লাল রঙের আভা রয়েছে । এই আম খুবই সুস্বাদু এবং মিষ্টি । ‘ ৯ মিটার উচ্চতার এই আম গাছটির পুরু শাখাগুলিতে থাকা ঘন পাতা গরমকালে মনোরম ছায়া দেয় । গাছের পাতাগুলিও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। কোনও কোনওটা হলুদাভ , তো কোনও কোনও পাতা গাঢ় সবুজ রঙের ।
কলিম সাহেব জানান , আলাদা আলাদা জাতের আম মিশিয়ে সংকর আম তৈরির প্রক্রিয়া খুবই জটিল । খুব মনোযোগ দিয়ে একটি নির্দিষ্ট জাতের আম গাছের শাখাকে মুল গাছ থেকে কেটে নেওয়া হয় । পরে অন্য একটি জাতের শাখাকে ওই শাখার সঙ্গে জুড়ে টেপ দিয়ে আটকে রাখা হয় । এই গাছটির গুঁড়ি প্রকাণ্ড । পাতাগুলিও রয়েছে বিভিন্ন রঙের । কোনটা সম্পূর্ণ হলুদ , কোনওটা সবুজ , কোনওটা আবার হলুদ – সবুজের মিশেল। কলিম উল্লাহ বলেন , ‘ মানুষের হাতের দুটো আঙুল যেমন এক নয় , তেমন এই গাছের কোনও আম এক নয় । ‘ কোনও একটা গাছের সঙ্গে আর একটা গাছের ডাল জুড়তে প্রথমে একটি গাছের ডালের একটা অংশ একটু বাঁকা করে কেটে নিতে হয় । তারপর অন্য একটি গাছ থেকে বাঁকা করে একটি ডাল কেটে নিয়ে একটি টেপের সাহায্যে জুড়ে দিতে হয় দুটি ডালকে । ডাল দুটি লেগে গেলে খুলে দিতে হয় টেপ । একই পদ্ধতিতেই একটা গাছের সঙ্গেই বিভিন্ন জাতের আমের মিলন ঘটিয়েছেন । আর এই পরীক্ষায় তিনি সম্পূর্ণ সফল । এমন অসাধারণ কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন কলিম সাহেব । ২০০৮ সালে কলিম উদ্দিন জিতে নিয়েছেন ‘ পদ্মশ্রী ’ ।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…