এক আগরতলা শ্রেষ্ঠ আগরতলা গড়ে তোলার জন্য সংকল্প নিন!!

 এক আগরতলা শ্রেষ্ঠ আগরতলা গড়ে তোলার জন্য সংকল্প নিন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-শারদ
উৎসব সম্পন্ন হওয়ার পর সামান্য দেরি হলেও বৃহস্পতিবার অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মোট পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পৃথক পৃথক একুশটি ক্লাব কিংবা পুজো আয়োজকদের শারদ সম্মান-২০২৪ প্রদান করে আগরতলা পুর নিগম কর্তৃপক্ষ। নিগমের পক্ষ থেকে এ বছর সেরার সেরা প্রতিমা হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়েছে মঠ চৌমুহনীস্থিত ফ্লাওয়ার্স ক্লাবকে।এছাড়াও সেরার সেরা মণ্ডপ হিসেবে পুরস্কার প্রদান করা হয় নেতাজী প্লে ফোরাম সেন্টারকে। আরও অন্যান্য ক্যাটাগরির মধ্যে সেরা আলোকসজ্জায় এগিয়ে চল সংঘ, সেরা থিমে জয়নগরের যুব সমাজ ক্লাব, মহিলাদের দ্বারা আয়োজিত সেরা দুর্গা পুজো হিসেবে মুক্তি সংঘকে (রামনগর ৫/৬ নং রোড এলাকার) পুরস্কৃত করা হয়।
আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা সহ সম্মানিত অতিথি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে নিগমের ডেপুটি মেয়র মণিকা দাস দত্ত, কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব একে একে ক্লাবগুলির হাতে পুরস্কারস্বরূপ বিশাল আকারের ট্রফি তুলে দেন। অনুষ্ঠানের সূচনা করে এর আগে উদ্বোধক তথা প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা তো গড়বো-ই আগামী দিনে ১ আগরতলা শ্রেষ্ঠ আগরতলা গড়ার সংকল্পও নিতে হবে আমাদের। শহর আগরতলাকে আরও বেশি সুন্দর এবং সুষ্ঠুভাবে গড়ে তোলার জন্য তিনি ক্লাবভিত্তিক ড্রেন পরিষ্কার সম্বন্ধীয় একটি প্রতিযোগিতার কথা বলেন। নিগম কর্তৃপক্ষকে এই দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়ে এক্ষেত্রে প্রয়োজন বোধে তিনিও যে সাহায্যে এগিয়ে আসবেন তাও এদিন জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সার্বিকভাবে আগরতলা পুর নিগম কর্তৃপক্ষের আয়োজনকে ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন,যেভাবে পুরস্কার প্রাপকদের নির্বাচিত করা হয়েছে তা সত্যিই একটি কঠিন বিষয়। যারাই তাদের বিচারের খাতায় তুলে এনে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এদিন আরও বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যগুলির মধ্যে এই রাজ্যকে এখন ‘বেস্ট পারফর্মার স্টেট’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যে যে ৭২তম প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে মোট আট রাজ্যের রাজ্যপাল ছাড়াও সাতটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্য একটি রাজ্যের এত মন্ত্রী প্রত্যেকেই রাজ্যের এমন উন্নয়ন দেখে আগামী দিনে এরাজ্যেই বারংবার এই প্ল্যানারি সেশন করার কথা বলেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গণ্ডাতুইসার ঘটনায় বিরোধীরা একাধিকবার ফোন করেছে আমাকে। মাত্র তিনদিনের মধ্যেই আমাদের সরকার গোটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে নেয়। বন্যা পরিস্থিতির প্রসঙ্গও এদিন তিনি উত্থাপন করেন নিগম আয়োজিত এই শারদ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও রাজ্যের কল্যাণার্থে এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। রাজ্যকে এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এর আগে কখনোই তেমনভাবে দেখা যায়নি।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে খাদ্য, পরিবহণ ও পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এদিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির কারণে এ রাজ্যে এখন দিনের পর দিন শুধুমাত্র দুর্গা পুজো নয়, গণেশ পুজোর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ এখন উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে এগিয়ে আসছে। তিনি বলেন, যে কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে উন্নয়ন সম্ভব হয় না। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার নেতৃত্বে এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্টই উন্নতি হয়েছে। সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ইতিবাচক চিন্তাধারা নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছে এখন। উপস্থিত বিভিন্ন ক্লাব কর্তৃপক্ষের সামনে তিনি এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার যে স্বপ্ন তাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সকলকেই এগিয়ে আসার আহ্বান রাখেন। তার কথায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির ফলেই বর্তমানে সুন্দর এবং সুষ্ঠুভাবে অন্য আর পাঁচটি অনুষ্ঠানের মতোই শারদোৎসবকেও সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। পুর নিগমের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এদিন নিগমের মোট চারটি জোনের ক্ষেত্রেও পৃথক পৃথকভাবে মোট চারটি ক্যাটাগরি করে ১৬টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেন্ট্রাল জোনের ক্ষেত্রে সেরা প্রতিমায় পুরস্কৃত করা হয় সেন্ট্রাল রোড যুব সংস্থাকে। এছাড়াও সেরা মণ্ডপে ছাত্রবন্ধু ক্লাব, সেরা আলোকসজ্জায় ঐকতান যুব সংস্থা (শান্তিপাড়া), সেরা থিমে ব্লাড মাউথ ক্লাবকে পুরস্কৃত করা হয়। পূর্ব জোনের ক্ষেত্রে যাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে সেরা প্রতিমায় স্ফুলিঙ্গ ক্লাব, সেরা মণ্ডপে রামঠাকুর সংঘ, সেরা আলোকসজ্জায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ক্লাব এবং সেরা থিমে লালবাহাদুর ব্যায়ামাগারকে পুরস্কৃত করা হয়। উত্তর জোনের ক্ষেত্রে সেরা
প্রতিমায় দেশবন্ধু ক্লাব (নতুননগর), সেরা মণ্ডপে শান্তিকামী সংঘ, সেরা আলোকসজ্জায় কুঞ্জবন স্পোর্টিং ইউনিট, সেরা থিমে মহান ক্লাব বড়জলাকে পুরস্কৃত করা হয়। দক্ষিণ জোনের ক্ষেত্রে সেরা প্রতিমায় পুরস্কৃত করা হয় ওএনজিসির সার্বজনীন পুজো কমিটিকে। এছাড়াও সেরা মণ্ডপে মডার্ন ক্লাব, সেরা আলোকসজ্জায় মৌচাক ক্লাব এবং সেরা থিমে উত্তর মধ্যপাড়া যুবকবৃন্দকে পুরস্কৃত করা হয় এদিন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.