এক ধাক্কায় কমছে জিডিপি হার!!
উদ্বেগ বহুগুণ বেড়ে গেলো। কারণ কমে গেল অনেকটাই জিডিপি বৃদ্ধিহার। আশঙ্কা ছিলই যে এবার যে আর্থিক ডেটা প্রকাশিত হতে চলেছে অর্থনীতির দ্বিতীয় অগ্রিম লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে, সেই তালিকায় দুঃসংবাদ ।
আর্থিক বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে দেখা যাচ্ছে জিডিপি বৃদ্ধিহার হয়েছে ৫ শতাংশের অনেক কম। মাত্র ৪.৪ শতাংশ। চলতি আর্থিক বছরের সামগ্রিক আর্থিক বৃদ্ধিহার অর্থাৎ জিডিপি গ্রোথ রেট হওয়ার কথা ৭ শতাংশ। এখন সংশয় দেখা দিচ্ছে আদৌ কি ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে? কারণ, এভাবে ৪.৪ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির হার যদি তৃতীয় ত্রৈমাসিকে হয়, তাহলে তো চতুর্থ ত্রৈমাসিকের হাল হবে আরও বিপজ্জনক। যদি সেকথা মনে করছে না অর্থমন্ত্রক ও ভারত সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দপ্তর। তারা মনে করছে এখনও সম্ভব হবে ৭ শতাংশ জিডিপি ধরে রাখা। আজ যে পরিসংখ্যান ন্যাশনাল স্যাম্পল অফিস প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমায় এই জিডিপি বৃদ্ধির হার হয়েছে ৪.৪ শতাংশ। যেটা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ছিলো ৬.৩ শতাংশ। আবার প্রথম ত্রৈমাসিক অর্থাৎ আর্থিক বছরের শুরুতে এপ্রিল থেকে জুলাই সময়সীমায় হয়েছিল ১৩.৫ শতাংশ। এই প্রবণতা থেকে একধাক্কায় ৫ শতাংশের নীচে আসায় যথেষ্ট চিন্তায় পড়ছে অর্থমন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক । বিগত এক বছর ধরে চরম মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর্থিক ঘাটতি। বাণিজ্য ঘাটতি। টাকার বিনিময় মূল্য তলানিতে আসা। এর সঙ্গেই আবার প্রত্যাশা অনুযায়ী জিএসটি আদায়ের পরিমাণও বাড়ছে না। সেই ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে আদায় হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকা । তারপর থেকে আর সেই রেকর্ড স্পর্শ করা যাচ্ছে না।তীব্র সঙ্কট নিয়ে এসেছে টাকার বেনজির পতন। যার ফলে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারে সঙ্কট। কমছে রপ্তানি। বেড়েছে আমদানি। অর্থনীতির সহজ নিয়মে আমদানি বাড়লে সবথেকে বেশি চাপে পড়বে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি। এই সামগ্রিক সঙ্কটের জেরে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে। সুতরাং ভারতের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে রয়েছে এক চরম অনিশ্চয়তা আর দিশাহীনতার মধ্যে। সবথেকে সঙ্কট হলো ইউক্রেন যুদ্ধ আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। আর গোটা বিশ্বের বাজারে আর্থিক মন্দার ইশারা। স্বয়ং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে যে আসন্ন মন্দা থেকে কেউই বাঁচবে না। অর্থাৎ পরোক্ষে ভারতে আঁচ লাগার কথাই বলেছেন তিনি। তবে আজও মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অনন্ত নাগেশ্বরণ বললেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার যথেষ্ট ইতিবাচক। এই ৪ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ থাকলে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে। যদিও তিনি এই দাবি করলেও উৎপাদন সেক্টর নিয়ে হতাশ এখনও অর্থনৈতিক ও শিল্প মহল। আজকের নথিতেও দেখা যাচ্ছে যে, ম্যানফ্যাকচারিং সেক্টর বৃদ্ধিহার আরও এক শতাংশ কমে গিয়েছে।