এগিয়ে চলো-ফরোয়ার্ড ম্যাচ নিষ্ফলা রেফারি ও পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ

 এগিয়ে চলো-ফরোয়ার্ড ম্যাচ নিষ্ফলা রেফারি ও পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আবারও ফুটবল মাঠে গণ্ডগোল। ইট পাটকেল, ঢিল ছোড়া থেকে শুরু করে মারপিট হাতাহাতি। আর সব কিছুই হলো মাঠে পুলিশের অনুপস্থিতিতে। পুলিশের ভূমিকায় ক্লাব, দর্শক, রেফারিরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রবিবার টিএফএর ঘরোয়া এ ডিভিশন ক্লাব লীগ ফুটবলের এগিয়ে চলো সংঘ বনাম ফরোয়ার্ড ক্লাবের ম্যাচে ঘটে এই ধুন্দুমার কাণ্ড। আর এরকম এক টানটান উত্তেজনাপূর্ণ হাইভোল্টেজ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ও পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়লো শিল্ড চ্যাম্পিয়ন এগিয়ে চলো সংঘ ও রানার্স ফরোয়ার্ড ক্লাব। বড় ম্যাচ ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে একটা আলাদা উন্মাদনা থাকবে তা স্বাভাবিক। তবে এ দিন মাঠে আসা ফুটবলপ্রেমীরা এমন এক ঘটনার সাক্ষি থাকলো তা হয়তো প্রত্যাশা করেনি। গ্যালারি থেকে ছোড়া ইটপাটকেলে আহত হলেন ম্যাচের চতুর্থ রেফারি। এমনকী একটি টিমের ফুটবলারদের দ্বারা হেনস্থা হলেন ম্যাচের মূল রেফারি। রবিবার উমাকান্ত মাঠে লীগে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামে এগিয়ে চলো সংঘ ও ফরোয়ার্ড ক্লাব। মরশুমের দ্বিতীয়বারের সাক্ষাৎকার ছিল এটি। তাও আবার মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে। ম্যাচে দু’দলই ভালো ফুটবল খেললো। বিশেষ করে ফরোয়ার্ড ক্লাব। শুরু থেকেই ম্যাচে ফরোয়ার্ড ক্লাবের পাল্লা ভারী ছিল। নব্বই মিনিটের ম্যাচে অধিকাংশ আক্রমণ অর্থাৎ অ্যাটাক ছিল ফরোয়ার্ড ক্লাবের পক্ষে। অন্যদিকে, এগিয়ে চলো এ দিন তেমন একটা ভালো ফুটবল খেলতে পারেনি। যা হয়তো প্রত্যাশা করেনি কেউ।

তবে এগিয়ে চলোর গোলরক্ষক বুদ্ধ দেববর্মার দুরন্ত গোলকিপিংয়ে শেষ পর্যন্ত পরাজয় এড়াতে পারলো এগিয়ে চলো। প্রথমার্ধের চৌদ্দ মিনিটে ফরোয়ার্ড ক্লাবের পেনাল্টি রুখে দেওয়া থেকে শুরু করে একাধিক অবধারিত গোল আটকে দিলো এ দিন বুদ্ধ। যার কারণে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছে এ দিন এগিয়ে চলোর এই গোলরক্ষক। ম্যাচ শুরুর চৌদ্দ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ নষ্ট করে ফরোয়ার্ড ক্লাব। পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ নষ্ট করে ফরোয়ার্ড ক্লাবের নতুন বিদেশি চিজুবা। পেনাল্টি থেকে নেওয়া চিজুবার নেওয়া শট দারুণভাবে আটকে দেয় গোলরক্ষক বুদ্ধ। তেইশ মিনিটে নিশ্চিত গোল নষ্ট করে এগিয়ে চলো। বিদেশি মোস্তফার দারুণভাবে বাড়ানো বল খালি বক্সে পেয়ে ও গোল করতে পারেনি পারভেজ ভূঁইয়া। একাধিক সুযোগ নষ্ট করে এ দিন পারভেজ। একেবারেই খেলতে পারেনি এ দিন পারভেজ। প্রথমার্ধে গোল করতে পারেনি কোনও দলই। বিরতির পর মাঠে নেমে পুরো অ্যাটাকিং ফুটবল খেলতে থাকে দুই টিমই। গোল পেতে একে অপরের সীমান্তে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলে। তবে এর মধ্যে বেশিরভাগ আক্রমণ ছিল ফরোয়ার্ড ক্লাবের তরফে। এর মধ্যে ম্যাচের তেরো মিনিটে এক পেনাল্টি নিয়ে শুরু হয় মাঠে ধুন্দুমার কাণ্ড। ন্যায্য পেনাল্টি থেকে এগিয়ে চলোকে বঞ্চিত করেন রেফারি। এগিয়ে চলোর প্রীতম সরকারের নেওয়া শট পেনাল্টি বক্সে ফরোয়ার্ড ক্লাবের রতন কিশোর জমাতিয়ার হাতে লাগে। যা সবাই প্রত্যক্ষ করলেও রেফারির চোখ এড়িয়ে যায়। আর এই ন্যায্য পেনাল্টি না পাওয়ায় মাঠে প্রতিবাদ করে এগিয়ে চলোর ফুটবলাররা। এতে মাঠের ভেতর এবং বাইরে এক উত্তেজনা পরিবেশ তৈরি হয়। এতে ছয় মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। বাইরে থেকে ইট পাটকেল ছোড়া হয় রেফারির দিকে। তখন মাঠেও ছিল না কোনও পুলিশ। যদিও পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ার পর পুলিশ মাঠে আসে। শুধু তাই নয়, পুলিশের অতি তৎপরতাও দেখা যায়। মাঠের ভেতরে পুলিশের এক অফিসার বসে পড়ে। যা দেখে রীতিমতো অবাক অনেকে। কারণ ম্যাচ চলাকালীন মাঠে পুলিশ থাকতে পারবে না এটাই নিয়ম। মাঠের বাইরে থেকে ছোড়া ঢিল ম্যাচের চতুর্থ রেফারি আদিত্য দেববর্মার কোমরে এসে পড়ে। এতে ভালো চোট পায় সে। অন্যদিকে, ম্যাচের মূল রেফারি টিঙ্কু দে হেনস্থা হয় এগিয়ে চলোর দু-একজন ফুটবলারদের হাতে। ছয় মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। আবারও দু’দলই গোলের জন্য লড়াই চেষ্টা করে যায়। তবে কোনও দলই আর গোল করতে পারেনি। আজকের এই ম্যাচে রেফারিং নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এগিয়ে চলোর কোচ সুজিত হালদার। তিনি বলেন, দু’টিমই ভালো খেলেছে। তবে রেফারি এর চাইতে আরও ভালো খেলেছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.