এমআইটি থেকে পিএইচডি করে এখন দুধ বেচে দৈনিক আয় ১৭ লক্ষ টাকা
মার্কিন মুলুকে দিব্য ছিলেন। ইন্টেলের মতো নামী সংস্থায় মোটা বেতনের চাকরি। কিন্তু সেই বহুজাতিক সংস্থার চাকরি ছেড়ে ফিরে এলেন দেশে। শুরু করলেন নিজের দুধের ব্যবসা। বাকিটা ইতিহাস। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, কিশোর ইন্দুকুরির এখন দুধ বেচে দৈনিক রোজগার ১৭ লক্ষ টাকা। আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে ইতস্তত ভাবে বেশ কিছু ব্যবসা করেন কিশোর। তাতে ক্ষতির মুখ দেখেন। সব ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে বছর দশেক আগে শুরু করেন দুধের ব্যবসা। আদতে কর্নাটকের বাসিন্দা কিশোরের ঝুলিতে আছে আমেরিকার নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে পিএচইডি ডিগ্রি। রয়েছে আইআইটি-র শিক্ষাও। তবে সে সব ডিগ্রির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের চাকরি পেয়েও সব ছেড়েছুড়ে দেশে ফিরে ব্যবসার ঝুঁকি নেন তিনি। হায়দরাবাদে সিড’স ফার্ম নামে কিশোরের ডেয়ারির ব্যবসার উত্থানের কাহিনি বক্স অফিসে সাড়া ফেলা সিনেমার চিত্রনাট্যের চেয়ে কোনও অংশে কম চিত্তাকর্ষক নয়।কিশোরের জন্ম হায়দরাবাদের এক পরিবারে। বাবা বেসরকারি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার। হায়দরাবাদে বেড়ে ওঠা কিশোর খড়্গপুর আইআইটি থেকে
রসায়নে ডিগ্রি লাভ করেন। এর পর উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন আমেরিকা। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে পিএইচডি করেন কিশোর। এমআইটিতে গবেষণার পর অ্যারিজোনায় ইন্টেল কর্পোরেশনে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন কিশোর।অ্যারিজোনার শ্যান্ডলার শহরে একটি বাড়িও কেনেন তিনি। দিব্য সুখেই দিন কাটছিল। একদিন আচমকাই তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে নিজের ব্যবসা শুরু করেছিলেন কিশোর। প্রথম ব্যবসা, বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার জন্য যেসব পরীক্ষা দিতে হয়, দেশের পড়ুয়াদের তার প্রশিক্ষণ শুরু করেন তিনি। কিন্তু কোচিং সেন্টারের ব্যবসায় মার খেয়ে তিনি সবজি চাষে মন দেন। সবজি বিক্রির সংস্থাও খোলেন। এসব করতে গিয়ে তত দিনে চাকরি থেকে সঞ্চয়ের এক কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে তার। ২০১২ সালে একসঙ্গে ২০টি গরু কিনে ডেয়ারির ব্যবসা শুরু করেন কিশোর। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, সেই সময় লিটার প্রতি ১৫ টাকায় দুধ বিক্রি করত তার সংস্থা। তবে ১ লিটার দুধের দাম ১৫ টাকা রাখলেও তা তৈরি করার খরচ ছিল ৩০ টাকা। দুধ দোয়ানো থেকে দুধের সরবরাহ, কিশোর সবটাই নিজে হাতে করতেন। ক্রেতাদের বলতেন, তার সংস্থার দুধে জল মেশানো নেই। নেই ক্ষতিকারক হরমোনের উপস্থিতি।সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০২০- ২১ অর্থবর্ষে কিশোরের আয় ছিল ৪৪ কোটি টাকা। পরের বছর অর্থাৎ ২০২১-২২ সালে তা বেড়ে হয় ৬৪.৫ কোটি টাকা। আজকাল কিশোরের দৈনিক আয় ১৭ লাখ টাকা।